রাজ্যের মহিলা ফুটবল দলে বীরভূমের পাঁচ ছাত্রী

হরিয়ানার কুরুক্ষেত্রে সদ্য অনুষ্ঠিত আন্তঃ রাজ্য স্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অনূর্দ্ধ ১৪ মহিলা ফুটবল দলে ১৪ জনের দলে বীরভূমের বাহিরি ব্রজসুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই পাঁচ ছাত্রী প্রতিনিধিত্ব করল।

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২০ ০২:৫৬
Share:

স্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অনূর্ধ্ব ১৪ রাজ্য মহিলা ফুটবল দলে জেলার পাঁচ মুখ। রয়েছেন শিক্ষকও। নিজস্ব চিত্র

ওদের বাবারা কেউ দিন মজুর, কেউ বা ক্যাটারিংয়ের দলে কাজ করেন। কারও ছোট ব্যবসা আছে। পরিবারিক স্বচ্ছলতা না থাকা এই সমস্ত পরিবার থেকে উঠে আসা পাঁচ জন মেয়ে রাজ্যের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করে জেলার মুখ উজ্জ্বল করল। ওই পাঁচ জনের বয়স এখনও ১৫ পেরোয়নি। স্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অনূর্দ্ধ ১৪ রাজ্য মহিলা ফুটবল দলে ওরাই এখন রাজ্যের মুখ।

Advertisement

হরিয়ানার কুরুক্ষেত্রে সদ্য অনুষ্ঠিত আন্তঃ রাজ্য স্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অনূর্দ্ধ ১৪ মহিলা ফুটবল দলে ১৪ জনের দলে বীরভূমের বাহিরি ব্রজসুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই পাঁচ ছাত্রী প্রতিনিধিত্ব করল। তারা হল সাগরিকা খান, রুমা চক্রবর্তী, সুরঞ্জনা লোহার, লতিকা মাল এবং বৃষ্টি থানদার। সম্প্রতি বোলপুরের কাঁকুটিয়া অনুষ্ঠিত রাজ্য স্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় আন্তঃজেলার খেলা থেকে তারা রাজ্যের হয়ে খেলার জন্য নির্বাচিত হয়। ১২ জানুয়ারি কলকাতার ক্যাম্পে যোগদান করে রাজ্য দলের অন্য সহযোগী খেলোয়াড়দের সঙ্গে হরিয়ানাতে খেলা শেষ করে শনিবার কলকাতা ফেরে পড়ুয়ারা। তাদের বাড়ি নিয়ে আসার জন্য বাহিরি থেকে কলকাতা গিয়েছেন পরিজনেরা। একই গ্রামেই তাদের সকলের বাড়ি। একই গ্রামের স্কুল থেকে ৫ জন ছাত্রী রাজ্যের হয়ে খেলে বাড়ি ফিরছে, তাই বাহিরি গ্রামের বাসিন্দারাও খুশি। খুশী স্কুল কর্তৃপক্ষও। সকলেই স্কুলের এই সাফল্যের জন্য স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক মলয়কুমার সেনের নিরলস প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরলেন। মলয়বাবু জানালেন, ‘‘২০১৫ সালে স্কুলে গ্রামের মেয়েদের নিয়ে ফুটবল দল গড়ে তুলেছিলাম। আজকে সেই দলের মেয়েরা রাজ্যের হয়ে সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছে এটা সত্যিই গর্বের।’’

সম্প্রতি বোলপুরের কাঁকুটিয়ায় অনুষ্ঠিত রাজ্য স্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ফুটবল খেলায় বীরভূম জেলা দ্বিতীয় স্থান পেয়েছিল। ওই প্রতিযোগিতায় জেলা দলের ১৮ জন সদস্যের মধ্যে ১৪ জন সদস্য ছিল বাহিরি স্কুলের। ২০১৮ সালে সুব্রত কাপে স্কুলের মেয়েরা রাজ্যে তৃতীয় স্থান পেয়েছিল। অন্ধপ্রদেশে ফেডারেশন কাপ ফুটবল খেলায় স্কুল চ্যাম্পিয়ন হয়।

Advertisement

বাহিরি গ্রামের যে পাঁচ জন ছাত্রী রাজ্যের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করে জেলার মুখ উজ্জ্বল করেছে তাদের অভিভাবকেরা জানান, ওই ছাত্রীরা পড়াশুনার পাশাপাশি খেলাধূলার চর্চা করছে। এতে অসুবিধের কিছু নেই। তাঁদের কথায়, ‘‘ওদের শিক্ষক মলয় কুমার সেনের কঠোর নিষ্ঠা, অনুশীলন ওদেরকে বড় করে তুলেছে। আমরা চাই ওরা খেলাধুলো করেই জীবনে উন্নতি করুক। ওদের সঙ্গে গ্রাম ও স্কুলের নাম রাজ্য ছাড়িয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ছে এতেই আমাদের গর্ব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন