দুই জেলায় পথ দুর্ঘটনায় মৃত ৮

ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে দুই জেলায় দুর্ঘটনায় মারা গেলেন দুই দম্পতি। একটি শনিবার রাতের, অন্যটি রবিবার ভোরের ঘটনা। পৃথক দুর্ঘটনায় দুই জেলায় মারা গিয়েছেন আরও চার জন। কলকাতার অভিজাত আলিপুরের এলাকার বাসিন্দা বিকাশ গোয়েঙ্কা (৩৫) ও তাঁর স্ত্রী মীনা গোয়েঙ্কা (৩১) একমাত্র ছেলে বছর পাঁচেকের বিরাজকে নিয়ে শনিবার পুরুলিয়া শহরে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৫ ০০:৫৩
Share:

ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে দুই জেলায় দুর্ঘটনায় মারা গেলেন দুই দম্পতি। একটি শনিবার রাতের, অন্যটি রবিবার ভোরের ঘটনা। পৃথক দুর্ঘটনায় দুই জেলায় মারা গিয়েছেন আরও চার জন।

Advertisement

কলকাতার অভিজাত আলিপুরের এলাকার বাসিন্দা বিকাশ গোয়েঙ্কা (৩৫) ও তাঁর স্ত্রী মীনা গোয়েঙ্কা (৩১) একমাত্র ছেলে বছর পাঁচেকের বিরাজকে নিয়ে শনিবার পুরুলিয়া শহরে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। রবিবার খুব ভোরে তাঁরা পুরুলিয়া থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। কিছুটা পথ যাওয়ার পরে পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কে মফস্‌সল থানার বড়াসিনি গ্রামের কাছে তাঁদের গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। তাঁদের গাড়ি রাস্তার পাশে একটি পথ নির্দেশিকার বোর্ডে প্রথমে ধাক্কা মারে। তার পর ঢালু জমিতে গড়িয়ে গিয়ে উল্টে যায়। পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থলেই বিকাশবাবু ও তাঁর স্ত্রী মীনাদেবীর মৃত্যু হয়। তাঁদের সন্তান বিরাজ ও গাড়ির চালকের সামান্য চোট লেগেছিল।

অন্য দিকে দিকে, শনিবার মাঝরাতে গঙ্গাজলঘাটির দুর্লভপুর এলাকায় পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় আর এক এক দম্পতির। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতেরা হলেন মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডল (৪৪) ও তাঁর স্ত্রী কল্পনা মণ্ডল (৩৮)। গঙ্গাজলঘাটির ঘটকগ্রামে তাঁদের বাড়ি। ওই রাতে দুর্লভপুর গ্রামে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর মোটরবাইক নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন তাঁরা। পথে বাঁকুড়া-রানিগঞ্জ ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের দুর্লভপুর চটি এলাকায় একটি গাড়ির ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই তাঁদের মৃত্যু হয়। রবিবার সকালে পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়।

Advertisement

ঘটনার প্রতিবাদে সকালে কয়েক ঘণ্টা পথ অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ জানিয়েছে, গাড়িটির খোঁজ করা হচ্ছে। মৃত্যুঞ্জয়বাবুর একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। তাঁদের আসল বাড়ি শালতোড়ার শ্যামপুরে। তবে মেজিয়ার নাগরডাঙা প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করার সুবাদে গঙ্গাজলঘাটির ঘটকগ্রামে বাড়ি করে বাস করতেন। তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

শনিবার সন্ধ্যায় কাশীপুর থানার ক্রোশজুড়ি থেকে ইসন্দা যাওয়ার রাস্তায় ইসন্দা গ্রামের অদূরে একটি ট্রাক্টর উল্টে যায়। ওই ট্রাক্টরের ডালায় রাখা মাটির নীচে চাপা পড়ে মৃত্যু হয় চালক-সহ দুই শ্রমিকের। তাঁদের মধ্যে দু’জন মহিলা। আহত হয়েছেন আরও দুই শ্রমিক। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতেরা হলেন চালক সুদেব হাঁসদা (২৩)। তাঁর বাড়ি কাশীপুর থানার লাড়া গ্রামে। বাকি দুই মৃত মহিলা শ্রমিকের নাম মিলনী হেমব্রম (৩৫) ও শুকুরমণি বেসরা (৪৫)। দু’জনেই কাশীপুর থানার জিয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা। শনিবার সন্ধ্যায় দুর্ঘটনাটি ঘটে কাশীপুর থানার ক্রোশজুড়ি থেকে ইসন্দা যাওয়ার রাস্তায় ইসন্দা গ্রামের অদূরে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্রোশজুড়ি গ্রাম থেকে মাটি বোঝাই করে ট্রাক্টরটি ইসন্দা যাচ্ছিল। রাস্তায় একটি বাঁকে ট্রাক্টরটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় চালক সুদেবের। মাটি ভর্তি ডালার নীচে পড়ে গুরুতর জখম অবস্থায় থাকা বাকি চার জন শ্রমিককে উদ্ধার করে আনা হয় কল্লোলী ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেখানে মৃত্যু হয় মিলনীদেবীর। শুকুরমণি বেসরাকে রাতেই পাঠানো হয়েছিল বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। রবিবার ভোরের দিকে বাঁকুড়ায় মৃত্যু হয় তাঁর। বাকি দুই শ্রমিক কল্লোলী ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি রয়েছেন।

রবিবার পুরুলিয়া সদর থানা এলাকার মহুলঘুটা এলাকায় গাড়ির ধাক্কায় এক যুবকের মৃত্যু হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবকের নাম সঞ্জয় দাস (৩৫)। তিনি শহরের মহুলঘুটা এলাকারই বাসিন্দা। এলাকায় তিনি বিজেপি কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বিজেপির জেলা সভাপতি বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এই যুবক আমাদের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। এ দিন সকালে মহুলঘুটা এলাকায় একটি গাড়ি তাঁকে ধাক্কা মারে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে রাঁচি নিয়ে যাওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন