সরস্বতী, কালী থেকে গ্রামে রয়েছে সর্বজনীন দুর্গোৎসবও। কিন্তু সর্বজনীনতার মাপকাঠিতে ওই সব পুজো-পার্বণকেও পিছনে ফেলে দিয়েছে নানুরের দাসকল গ্রামের নেতাজি সুভাষ মেলা। তাই সারা বছর ওই মেলার জন্য প্রতীক্ষায় থাকেন সব মানুষ। সাত দিনের ওই মেলা ঘিরে উৎসবে মেতে ওঠেন তাঁরা। প্রতীক্ষা শেষে এ বারও তার অন্যথা হয়নি।
শনিবার সন্ধ্যায় ওই মেলার উদ্বোধনে হাজির ছিলেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী। ২২ বছর আগে নিজের গ্রামে ওই মেলার সূচনা করেন তৎকালীন ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা তথা তৃণমূলের বর্তমান জেলা সম্পাদক অভিজিৎ সিংহ ওরফে রানা। এ বারও তিনি মেলা কমিটির আহ্বায়ক। সাত দিনের মেলায় রয়েছে বাউল সম্মেলন, নামীদামী শিল্পীর বিচিত্রানুষ্ঠান, কলকাতার যাত্রা, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা প্রভৃতি।
তাই মেলা ঘিরে এলাকায় এখন উৎসবের মেজাজ। স্থানীয় বধূ কাবেরী ঘোষ, মল্লিকা দাসবৈরাগ্য থেকে পাটনীলের জেসমিন বিবি, পলশার বরজাহান শেখরা বলেন, ‘‘আমাদের গ্রামে বিভিন্ন সর্বজনীন উৎসব রয়েছে। কিন্তু এই মেলার আমেজটাই অন্য রকম। তাই প্রতি দিন মেলা চত্বরে একবার আসা চাই। কারণ মেলাটাই আক্ষরিক অর্থে আমাদের কাছে সর্বজনীন উৎসব।’’
মানছেন মেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক তথা গ্রামেরই ত্রাণ সমিতি এবং নেতাজি ক্লাবের সম্পাদক যথাক্রমে সঞ্জীব ঘোষাল এবং অরূপ মণ্ডলরাও। তাঁরা বলেন, ‘‘আমাদের ক্লাবে সর্বজনীন সরস্বতী থেকে দুর্গা পুজো পর্যন্ত হয়। কিন্তু মেলার মতো সব শ্রেণির মানুষ সামিল হয় না ওই সব উৎসবে।’’
কী বলছেন অভিজিৎ? তাঁর কথায়, ‘‘নেতাজি স্মরণের পাশাপাশি গ্রামের মানুষকে একটু বৈচিত্র্যের স্বাদ দিতেই একদিন এই মেলার আয়োজন করা হয়েছিল।সব মানুষ যে স্বাদ খুঁজে পেয়েছেন, তাতেই আমাদের শ্রম সার্থক হয়েছে।’’