নিখোঁজ যুবকের দেহ সোমবার মিলেছিল কুয়োয়। খুনের অভিযোগ করেছিলেন যুবকের স্ত্রী। সেই খুনে জড়িত সন্দেহে মৃত যুবকের বিধবা ‘প্রেমিকা’কে গ্রেফতার করল পুরুলিয়ার পুঞ্চা থানার পুলিশ। সোমবার রাতে লুকু সোরেন নামে ওই যুবতীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তাঁর বাড়ি পুঞ্চার নাম ধুলিয়াপাড়া গ্রামে। পুলিশ সূত্রের দাবি, খুনের ঘটনায় লুকুর পরিচিত আরও দুই ব্যক্তির সন্ধান চলছে। সোমবার সকাল থেকে তারা গ্রামছাড়া।
পুঞ্চা থানার লোটো গ্রামের বাসিন্দা, তেত্রিশ বছরের স্বপন সোরেনের দেহ সোমবার সকালে একটি মাঠ কুয়ো থেকে উদ্ধার হয়েছিল। স্বপন বুধবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন। তাঁর স্ত্রী শ্রীমতি সোরেন সোমবার বিকেলে পুঞ্চা থানায় লুকু-সহ তিন জনের নামে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, স্বপনের সঙ্গে লাগোয়া গ্রাম নাম ধুলিয়াপাড়ার বাসিন্দা লুকুর কয়েক বছর ধরে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। স্বপনের স্ত্রী সে কথা জানতেন। তাঁর দাবি, স্বামীকে নিষেধ করেও ফল হয়নি। লুকুর স্বামী সরকারি চাকরি করতেন। স্বামীর মৃত্যুর পরে দাদাদের বাড়িতেই থাকেন লুকু। স্বামীর পেনশনের টাকায় দিন গুজরান হয়।
পুলিশ জেনেছে, স্বপন ব্যাঙ্ক থেকে পেনশন তোলার কাজে লুকুকে সহযোগিতা করতেন। এই সুবাদে দু’জনের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। এই সম্পর্ক অবশ্য লুকুর বাপের বাড়ি মেনে নেয়নি। স্বপনকে তাঁদের বাড়িতে আসতে নিষেধও করা হয়। মাস তিনেক স্বপন লুকুদের বাড়ি যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছিলেন। বুধবার বাঁদনা পরব উপলক্ষে স্বপন বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি। সোমবার তাঁর দেহ কুয়ো থেকে উদ্ধার হয়। স্বপনের কোমরে বাঁধা গামছার মধ্যে ভারী পাথর পাওয়া গিয়েছিল। তখনই পুলিশের সন্দেহ হয়েছিল, এটি
খুনের ঘটনা।
পুলিশের দাবি, জেরার মুখে লুকু তাদের জানিয়েছেন, বুধবার রাত নটা নাগাদ তাঁর বাপের বাড়ির উঠানে স্বপনকে দেখতে পেয়ে বাড়ির লোকেরা একপ্রস্ত মারধর করেন। নেশার ঘোরে স্বপন গালাগালি দিয়েছিলেন এবং ‘আবার আসব’ বলায় লুকু ও তাঁর পরিবারের দুই সদস্য মিলে স্বপনকে মাটিতে ফেলে গলা টিপে ধরেন। ঘটনাস্থলেই স্বপন মারা যান। রাতেই তাঁর দেহ বস্তাবন্দি করে কুয়োয় ফেলে দেওয়ার পরিকল্পনা হয়। দেহ যাতে ভেসে উঠতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে কোমরে ভারী পাথর দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু, পাথর গামছা থেকে বেরিয়ে যেতেই দেহ
ভেসে ওঠে।