দেওয়াল-লিখন: বন্যপ্রাণ হত্যা না করার আর্জি অযোধ্যা পাহাড়ের গ্রামে। ছবি: সুজিত মাহাতো
বন্যপ্রাণ হত্যা রুখতে বন দফতর-সহ বিভিন্ন সংগঠন প্রচার চালাল। কিন্তু অযোধ্যা পাহাড়ে শিকার উৎসবে তিরের ফলা থেকে রক্ষা করা গেল না শুয়োর, বনমোরগদের। পরম্পরা মেনে বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে অযোধ্যা পাহাড়ে শিকার উৎসব শেষ হল বুধবার।
এ বারও বন দফতর, অযোধ্যা আদিবাসী খেরওয়াল মহল মার্শাল মাডওয়া, ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির পুরুলিয়া জেলা শাখা পাহাড়ে শিকারে আসা মানুষজনের কাছে বন্যপ্রাণ হত্যার বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়েছে।
বিভিন্ন সংগঠনের প্রচার স্বত্ত্বেও অবশ্য শিকার রোখা যায়নি। শিকারিরা বুনো শুয়োর, বনমোরগ প্রভৃতি ধরে। একটি দল হরিণ শিকার করতে পেরেছেও বলে বিভিন্ন দলের কথাবার্তা থেকে জানা যায়। যদিও শিকার করা হরিণের দেখা মেলেনি।
বিজ্ঞানও যুক্তিবাদী সমিতির জেলা সম্পাদক মধুসূদন মাহাতো বলেন, ‘‘মঙ্গলবার দুপুর থেকেই আমরা পাহাড়ে ওঠার দু’টি রাস্তায় দাঁড়িয়ে শিকারিদের উৎসবে স্বাগত জানিয়ে বন্যপ্রাণ হত্যা না করতে অনুরোধ জানিয়েছি।’’
অযোধ্যা আদিবাসী খেরওয়াল মহল মার্শাল মাডওয়ার পক্ষ থেকে মঙ্গলবার রাত থেকেই পাহাড়ে শিকার উৎসবের মূল ময়দান সুতান টান্ডিতে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।
সংগঠনের সভাপতি কলেন্দ্রনাথ মান্ডি বলেন, ‘‘শিকার এখন প্রতীক মাত্র। আমরা সকলকেই আহ্বান জানিয়েছি, আসুন উৎসবে যোগ দিন। পরম্পরা মেনে চাঁপা ফুল নিয়ে গিয়ে স্ত্রীকে দিন। আনন্দে মাতুন। কিন্তু প্রাণীদের মারবেন না। ওরা হারিয়ে গেলে জঙ্গলের শ্রী হারিয়ে যাবে।’’
কেউ কেউ সে কথা শুনেছেন। অনেকে শোনেননি। বলরামপুরের খেঁকরিডি গ্রামের রোহিন হেমব্রম, রাবণ হেমব্রম, নরেশ হেমব্রম বুনো শুয়োর শিকার করেছেন।
বর্ধমানের রায়না থেকে দীর্ঘদিন ধরে শিকার উৎসবে আসেন পিওন টুডু। ষাট ছুঁইছুঁই পিওনবাবু এ বারও এসেছিলেন বেশ বড়সড় দল নিয়েই। বললেন, ‘‘শিকার পাই, না পাই সেটা বড় কথা নয়। কিন্তু এই উৎসবে ঘরে মন টেকে না। এ এক অন্য নেশা।’’