ভিতরে সঙ্কল্প, বাইরে হাতাহাতি

শহরের একটি ধর্মশালায় বিজেপির জেলা কমিটির ‘অগ্নি সংকল্প’ অভিযান ছিল। দলের জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী জানান, জ্বলন্ত আগুনের সামনে দাঁড়িয়ে দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা কর্মীরা

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৮ ০৭:২১
Share:

ক্ষোভ: পোস্টার হাতে ধর্মশালায়। —নিজস্ব চিত্র

ভিতরে যখন তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য ‘অগ্নি সংকল্প’ করছেন বিজেপি কর্মীরা, বাইরে তখন হট্টগোল। দলেরই জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে লেখা পোস্টার হাতে স্লোগান দিচ্ছেন কিছু লোকজন। সোমবার দুপুরে পুরুলিয়া শহরের এই ঘটনায় জল গড়াল হাতাহাতি পর্যন্ত। এল পুলিশ। আর সবটাই হল দলের রাজ্য নেতৃত্বের উপস্থিতিতে। গোলমালের জেরে সভা কিছুক্ষণের জন্য পিছিয়ে যায় বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

এ দিন শহরের একটি ধর্মশালায় বিজেপির জেলা কমিটির ‘অগ্নি সংকল্প’ অভিযান ছিল। দলের জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী জানান, জ্বলন্ত আগুনের সামনে দাঁড়িয়ে দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা কর্মীরা শপথ নিয়েছেন, তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন। কোনও অবস্থাতেই পিছিয়ে আসবেন না। জেলা কমিটির সদস্যদের পাশাপাশি বিভিন্ন বিধানসভা এলাকার নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।

দুপুর দুটো নাগাদ সভাঘরের বাইরে বেশ কিছু লোক জড়ো হন। তাঁদের হাতে ছিল দলের জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে লেখা পোস্টার। ভিতরে তখন প্রস্তুতি চলছে। উপস্থিত রয়েছেন রাজ্য বিজেপির দুই প্রতিনিধি বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরী ও রীতেশ তিওয়ারি। জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে স্লোগান ওঠার পরেই বাইরে উত্তেজনা ছড়ায়। বাইরের লোকজন ভিতরে ঢুকে পড়েন। দলের জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে চিৎকার করে অভিযোগ জানাতে শুরু করেন তাঁরা। বলা হয়—পঞ্চায়েত ভোটে ভাল ফল করার পরেও বিভিন্ন পঞ্চায়েত ও সমিতিতে বোর্ড গড়া যায়নি। সেই দায় জেলা সভাপতি এড়াতে পারেন না। জয়ী সদস্যেরা কেন তৃণমূলে চলে যাচ্ছেন সেই জবাবও জেলা সভাপতিকে দিতে হবে বলে চেঁচামিচি শুরু হয়। জেলা কমিটির নেতারা হট্টগোল সামলানোর চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু ততক্ষণে বাইরে শুরু হয়ে গিয়েছে হাতাহাতি। খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ চলে আসায় গোলমাল বেশিদূর গড়ায়নি।

Advertisement

পুঞ্চার বাসিন্দা হরি হালদার, পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা সৌরভ সেন, পুরুলিয়া ১ ব্লকের গুরুপদ পাণ্ডে নিজেদের বিজেপি কর্মী বলে দাবি করে বলেন, ‘‘এ দিন রাজ্য নেতৃত্ব জেলায় এসেছিলেন। আমরা তাঁদের কাছে জেলার সর্বস্তরের বিজেপি কর্মীদের মনের কথা পৌঁছে দিতে গিয়েছিলাম। আমাদের কথা বলতে দেওয়া হয়নি। উল্টে মারধর করা হয়েছে।’’

বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, ‘‘যাঁরা গন্ডগোল পাকাতে এসেছিলেন তাঁরা দলের কেউ নন। কিছু বহিরাগত লোকজন তৃণমূলের সুবিধে করতে এটা করেছে।’’ তিনি জানান, গোলমালের জেরে কিছুটা দেরি হলেও সভা হয়েছে। বিদ্যাসাগরবাবু বলেন, ‘‘বিজেপির টিকিটে জিতে কেন কেউ কেউ তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন সেটা তো সবাই জানেন।’’ তাঁর সামনে কাউকে মারধর করা হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা অস্বীকার করেছেন বিজেপির জেলা সভাপতি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন