একশো দিন প্রকল্পের একাধিক কাজে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল তৃণমূলের এক পঞ্চায়েতের সদস্যের বিরুদ্ধে।
মীনা মণ্ডল নামে সাঁইথিয়ার হাতোড়া পঞ্চায়েতের উত্তর অমরপুর সংসদের সদ্য সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া ওই সদস্যের বিরুদ্ধে এই মর্মে সাঁইথিয়ার বিডিও-র কাছে একটি লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে। একই অভিযোগপত্র পাঠানো হয়েছে জেলাশাসক, সভাধিপতি এবং মহকুমাশাসকের (সিউড়ি) কাছেও। অভিযোগকারীদের দাবি, গত বছর ১০০ দিন প্রকল্পে সংসদ এলাকায় বেশ কয়েকটি কাজের উল্লেখ করা হলেও বাস্তবে অধিকাংশ জায়গার কোনও অস্তিত্বই নেই। আবার পুকুর কাটার কোনও অনুমোদন না থাকলেও পুকুর কাটা হয়েছে। পাসবই হাতানো, শ্রমিকদের সই জাল করা, ভুল বুঝিয়ে টাকা তোলার মতো অভিযোগও তাঁরা তুলেছেন।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এলাকায় একশো দিন প্রকল্পে কয়েকটি জমি সমান করার জন্য ১০ লক্ষ ৩২৬ টাকা, গ্রামের সেচ নালা সংস্কারের জন্য ৫৬,২৮৬ টাকা ও একটি পুকুড় পাড় সমান করার জন্য ৭৬,২১২ টাকার অনুমোদন মেলে। প্রকল্পে নিযুক্ত দিনমজুরদের একাংশের দাবি, জমি সমান করার যে সাতটি কাজ দেখানো হয়েছে, তার মধ্যে উল্লিখিত— অমরপুর উত্তর মৌজায় ক্যানালডাঙা, ক্ষুদেডাঙা, শালবাড়ি ও মানিকজলা বলে বাস্তবে কোনও জায়গার অস্তিত্বই নেই।
এলাকার মানুষের অভিযোগ, সেচ নালা সংস্কারে প্রাপ্য টাকা দিনমজুরদের দেওয়া হয়নি। এমনকী, মোড়ল পুকুরের পাড় সমান করার বরাদ্দ কিছু টাকার কাজ করিয়ে বাকি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। দিনমজুর উৎপল বিত্তার, সমর হাজরা, উত্তম বাগদিদের দাবি, ‘‘ওই সদস্যের স্বামী উত্তম মণ্ডল এবং সুপারভাইজার আমাদের ভুল বুঝিয়ে পাসবই হাতিয়ে নেয়। টাকা তোলার ফর্মে সই করিয়ে টাকাও তুলে নেয়। পরে দেখি মজুরি বাবদ আমাদের অ্যাকাউন্ট থেকে যত টাকা তোলা হয়েছে, তার কিছুটা আমাদের দিয়ে বাকি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।’’
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উত্তম। তাঁর দাবি, প্রশাসনিক তদন্তে অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে প্রমাণিত হয়েছে। তবে ক্যানেলডাঙা, ক্ষুদেডাঙা, শালবাড়ি ও মানিকজলা নামে কোনও জায়গা না থাকার কথা তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন। তা মেনে নিয়ে মীনাদেবীও বলেন, ‘‘কাজের স্থানের নামে একটু হেরফের হয়ে গিয়েছে।’’ প্রধান দিলীপ বিত্তার অবশ্য কোনও অভিযোগ মানতে চাননি। বিডিও অতনু ঝুরির দাবি, ‘‘কোনও দুর্নীতি হয়নি।’’