বিয়ের আগেই মেয়ে আত্মঘাতী, উঠছে প্রশ্ন

অস্বাভাবিক মৃত্যু হল দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর। পুলিশ জেনেছে মৃতের নাম বিউটি মণ্ডল (১৭)। বাড়ি বোলপুরের যদুপুরে। বুধবার রাতে বর্ধমান মেডিক্যালে তার মৃত্যু হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান ও বোলপুর শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৬ ০২:২৮
Share:

অস্বাভাবিক মৃত্যু হল দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর। পুলিশ জেনেছে মৃতের নাম বিউটি মণ্ডল (১৭)। বাড়ি বোলপুরের যদুপুরে। বুধবার রাতে বর্ধমান মেডিক্যালে তার মৃত্যু হয়।

Advertisement

পরিবার সূত্রের খবর, বিউটির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল নানুরের দাসকল গ্রামেরই এনভিএফ কর্মী এক যুবকের। বিউটি ছোট থেকেই দাসকল গ্রামেই মামার বাড়িতে মানুষ। সেই সূত্রেই আলাপ। সম্প্রতি দুই পরিবারের মধ্যে বিউটির বিয়ের ব্যাপারে কথাবার্তা শুরু হয়। গোলমালের শুরু সেখানেই।

বুধবার বর্ধমান মেডিক্যালের পুলিশ মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে বিউটির বাবা বিপদতারণ মণ্ডল মেয়ের মৃত্যুর জন্যে ছেলের পরিবারকেই দায়ি করেছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বিয়ের পণ হিসেবে ১ লক্ষ টাকা এবং ৬ ভরি গয়না দেব বলে ঠিক হয়। গত মঙ্গলবার বিয়ের পাকা দেখার অনুষ্ঠান ছিল। ওই দিনই পাত্র পক্ষ ৮ লক্ষ টাকা ও সোনার গহনা দাবি করে বসে। অত টাকা দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না। তাই বিয়ে ভেঙে যায়।’’

Advertisement

পরিবার সূত্রের খবর, এরপরেই বীরভূমের বাহিরি গ্রামে পুলিশ ক্যাম্পে কর্মরত ‘প্রেমিকের’ সঙ্গে দেখা করে পণের দাবি সংক্রান্ত সত্যতা জানতে চায় বিউটি। বিউটির মামা মনোজ মণ্ডল ও মেসো ব্রজ রায়ের দাবি, ‘‘ওই পণে ছেলেরও আগ্রহ রয়েছে বুঝতে পেরে ভেঙে পড়েছিল ভাগ্নি। শুনেছি ওদের মধ্যে কথা কাটাকাটিও হয়।’’ তাঁদের অনুমান, এরপরেই বাইরে কোথাও বিষ খেয়ে বাড়ি ফেরে সে। বাড়িতেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। মনোজবাবুর কথায়, ‘‘কী হয়েছে? জানতে চাইলে বলে গ্যাসের ট্যাবলেট খেয়েছি। আমাদের সন্দেহ হওয়ায়, প্রথমে বোলপুর ও পরে বর্ধমান হাসপাতালে ভর্তি করাই।’’ রাতেই মৃত্যু হয় বিউটির।

মামার আক্ষেপ, ‘‘বিয়ের আগেই পণের বলি হয়ে গেল আমার ভাগ্নি।’’ মেয়ের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন বিপদতারণবাবু। এ বার কী করবেন? কাঁপা কাঁপা গলায় উত্তর, ‘‘অন্ত্যেষ্টি মিটলেই ছেলের বাড়ির বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করব।’’

পণের দাবির কথা অবশ্য মানতে চায়নি পাত্র পক্ষ। এনভিএফ কর্মী ওই যুবকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর মা ফোনে দাবি করেছেন, ‘‘পণ চাওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন। ছেলের ভালবাসাকে স্বীকৃতি দিতেই সোমবার আমি, আমার বোন এবং ছেলের বাবা ওদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। যেহেতু ভিন্ন জাতি সে জন্য মেয়ের মামাই এই বিয়ে দিতে রাজি হননি। তার জন্যই বিউটি বিষ খায়।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘সে কথা শুনেই ছেলে বোলপুর হাসপাতাল ও পরে বর্ধমান মেডিক্যালে ছুটে যায়। সেখানে মেয়ের মামা এবং অন্য লোকেরা ওকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়।’’ তারপর থেকেই ছেলের খোঁজ পাচ্ছেন না বলেও দাবি করেছেন তিনি। এমন দাবি অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন বিউটির মামা মনোজবাবু।

চক্ষু শিবির। এক দিনের একটি চক্ষু পরীক্ষা শিবির হয়ে গেল সিউড়িতে। বুধবার শহরের মাদ্রাসা রোডে আয়োজিত শিবিরের উদ্যোক্তা ঋণপ্রদানকারী একটি বেসরকারি সংস্থা। ওই সংস্থা সোনার বিনিময়ে ঋণ দেয়। সংস্থার সিউড়ি শাখার প্রবন্ধক চয়ন সরকার জানান, গত তিন বছর ধরে এ ধরনের শিবিরের আয়োজন করছে সংস্থা। এ দিন তিন চিকিৎসক ১০০ জন রোগীর চক্ষু পরীক্ষা করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন