প্রতীকী ছবি।
বিয়ের বছর দুয়েকের মধ্যেই এক বধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে খুনের অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। ঝাড়খণ্ডের হাসপাতালে দশ দিন ভর্তি থাকার পরে সুমন সাউ (২৪) নামে ওই বধূর মৃত্যু হয়। বাঘমুণ্ডি থানার পরমটিকর গ্রামের ঘটনা। পণের বকেয়া টাকা না পেয়েই সুমনকে মারধর করে মেরে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর মায়ের। অভিযুক্ত স্বামীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দুয়েক আগে পরমটিকর গ্রামের বাসিন্দা পঞ্চানন সাউয়ের সঙ্গে বিয়ে হয় ঝাড়খণ্ডের খুঁটি জেলার রিক্তি থানার সিন্দরি গ্রামের বাসিন্দা সুমনের। তাঁর মৃত্যুর পরে মা গীতাদেবী পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন, বিয়ের পর থেকেই বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য সুমনের উপরে চাপ দিচ্ছিলেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। ১৫ হাজার টাকা দাবি করা হয়েছিল। সম্প্রতি গীতাদেবী জানতে পারেন, তাঁর মেয়েকে গত ২৫ মে শ্বশুরবাড়ির লোকজন ঝাড়খণ্ডেরই মুরি হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছে। সেখানে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় দু’দিন পরে তাঁকে রাঁচি মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। খবর পেয়ে গীতাদেবী মেয়ের কাছে পৌঁছন। সেই থেকে তিনি সুমনের কাছেই ছিলেন। ৫ জুন তিনি বাড়ি ফিরতেই মেয়ের মৃত্যুর খবর তাঁর কানে পৌঁছয়। গীতাদেবীর দাবি, ময়নাতদন্ত না করিয়েই শ্বশুরবাড়ির লোক সুমনের দেহ ফিরিয়ে নিয়ে যায়। তিনি রিক্তি থানায় যোগাযোগ করে সমস্ত ঘটনা জানান।
রিক্তি থানা সমস্ত ঘটনা মঙ্গলবার বাঘমুণ্ডি থানায় জানায়। তখন রাত হয়ে গিয়েছে। তবু খবর পেয়েই পুলিশ পরমটিকর গ্রামে পৌঁছয়। অভিযোগ, তখন শ্বশুরবাড়ির লোকজন সুমনের দেহ সৎকারের জন্য সব আয়োজন সেরে ফেলেছেন। বিডিও-র (বাঘমুণ্ডি) উপস্থিতিতে মৃতদেহের সুরহতাল হয়। পুলিশ ফের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সুমনের শরীরে কালশিটে দাগ রয়েছে। সেগুলি শারীরিক নির্যাতনের চিহ্ন বলেই মনে করছে পুলিশ। তবে ঠিক কী ভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্টেই পরিষ্কার হবে।
মৃতার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে সুমনের স্বামী পঞ্চাননকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মৃতার ভাসুর, জা ও ভাসুরপোর বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে। তাঁদের খোঁজ চলছে। বুধবার ধৃতকে পুরুলিয়া আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠান।