নজরদারি নেই, অযোধ্যায় জমল থার্মোকলের পাহাড়

পাহাড়তলির স্থানীয় পর্যটন কমিটির কর্তাদের দাবি, দিনভর পইপই করে বলা হয়েছে শালপাতা ব্যবহার করতে। তার পরেও পর্যটকদের বক্তব্য শুনে অবাক তাঁরা। অবশ্য, পাহাড় প্রমাণ যে থার্মোকল এ দিন জমেছে তা সাফাই করে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

Advertisement

প্রশান্ত পাল

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৪০
Share:

লহরিয়া শিব মন্দির এলাকায় জমল পিকনিকের আবর্জনা। ছবি: সুজিত মাহাতো

কে শোনে কার কথা!

Advertisement

রবিবার পিকনিক স্পষ্টের দূষণমুক্তি অভিযানের প্রথম দিন বিভিন্ন ভাবে প্রচার করল প্রশাসন। কিন্তু কেউই যে বিশেষ কান দিলেন, দেখে তা মনে হল না। পাহাড়ের বাসিন্দারা বলছেন, প্রশাসন শুধু বলেই খালাস। নজরদারি না থাকলে যা হওয়ার, এ দিন সেটাই হয়েছে।

বাঘমুণ্ডি ব্লক এলাকায় থার্মোকলের থালা, বাটি ব্যবহার নিষিদ্ধ। অযোধ্যা পাহাড়ে যাওয়ার রাস্তায় এ দিন চোখে পড়ল, কিছু দূর অন্তর লোহার গার্ড রেলে ব্যানার ঝুলিয়ে সেই কথা জানিয়েছে প্রশাসন ও পুলিশ। পাহাড়তলিতে স্থানীয় পর্যটন কমিটি মাইক নিয়ে থার্মোকলের বদলে শালপাতার থালা, বাটি ব্যবহার করতে বলছে। কিন্তু বড়দিনের আগের রবিবারে জেলার অন্যতম বিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্রটিতে নরক গুলজারই হল। শীতের বেলা ফুরিয়ে আসার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মাঠে, জঙ্গলে জমল থার্মোকলের পাহাড়।

Advertisement

আড়শা ব্লকের শিরকাবাদ হয়ে অযোধ্যা হিলটপে যাওয়ার একটি রাস্তা রয়েছে। বেশিরভাগ পিকনিকের সেটাই ব্যবহার করে। ওঠার পথে দেখা গিয়েছিল ছাতনি গ্রামে এ দিন স্থানীয় স্বনির্ভর দলের মহিলারা স্টল তৈরি করে শালপাতার থালা বিক্রি করছেন। সন্ধ্যায় ফেরার পথে তাঁদের মধ্যে অঞ্জলি মুর্মু, বাহামণি হেমব্রমদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, একটি থালা বাটিও বিক্রি হয়নি। এ দিকে সারাদিন আপার জ্যামের পাশে যেখানে মূলত পিকনিক হয়, বেশ কিছু অস্থায়ী দোকানে থরে থরে সাজানো ছিল থার্মোকলের থালা। বিক্রিও হয়েছে রমরমিয়ে। এক দোকানদারকে জিজ্ঞেস করে জবাব মিলল, ‘‘সবাই তো বিক্রি করছে। তা ছাড়া আমাদের কেউ বলেনি এখানে থার্মোকলের জিনিস বিক্রি করা যাবে না।’’

পর্যটকদেরও সচেতনতার কোনও বালাই নেই। ঝাড়খণ্ডের ঝরিয়া থেকে পিকনিক করতে এসেছিলেন প্রমোদ কুমার। বললেন, ‘‘এই থালাই সঙ্গে এনেছিলাম। কই, কেউ তো কিছু বলল না।’’ কোলাঘাটের সুদীপ রায়, মৌমিতা রায়, বাসুদেব দাস, কলকাতার দমদমের শুভময় মল্লিক, রঘুনাথপুরের বরুণ বিদ, হারাধন ভট্টাচার্য— যেখানে থেকেই আসুন না কেন থার্মোকলের থালা নিয়ে এসেছিলেন। নজরদারির কেউ ছিল না।

তবে যদিও পাহাড়তলির স্থানীয় পর্যটন কমিটির কর্তাদের দাবি, দিনভর পইপই করে বলা হয়েছে শালপাতা ব্যবহার করতে। তার পরেও পর্যটকদের বক্তব্য শুনে অবাক তাঁরা। অবশ্য, পাহাড় প্রমাণ যে থার্মোকল এ দিন জমেছে তা সাফাই করে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। পাহাড়তলির বিভিন্ন জায়গা না হয় সাফাই হবে, পাহাড়ের উপরে জঙ্গলে বা মাঠের জঞ্জালের হবেটা কী? জানা যায়নি।

অতঃকিম?

বিডিও (বাঘমুণ্ডি) অভিষেক বিশ্বাসের দাবি, হাত ধরে পর্যটকদের আটকানোর কেউ ছিল না বটে,তবে তিনি নিজে এ দিন সরেজমিন ঘুরে সমস্তটাই দেখেছেন। বিডিও বলেন, ‘‘এটাতো সচেতনতার বিষয়। আশা করছি তাড়াতাড়ি থার্মোকল ব্যবহার বন্ধ করা যাবে।’’ বিডিও (আ়ড়শা) দিব্যেন্দু গোস্বামী বলেন, ‘‘আমরা দেউলঘাটাতে রবিবার থেকেই থার্মোকলের ব্যবহার বন্ধ করেছি। পাহাড়েও নজরদারি চালানো হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement