Bankura District Court

‘চোর অপবাদ’-এর বদলা নিতে মালিককে পিটিয়ে খুন করেছিলেন কর্মী! সাড়ে চার বছর পরে যাবজ্জীবন কর্মী-সহ ৩ জনের

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাঁকুড়ার ওন্দা থানার মালপুর গ্রামে ডেকরেটার্স মালিক কালোসোনা রায়ের মোবাইল ফোন ও বেশ কিছু নগদ টাকা চুরি গিয়েছিল।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২৫ ০৩:০১
Share:

কর্মী-সহ ৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল বাঁকুড়া জেলা আদালত। —প্রতীকী চিত্র।

নগদ টাকা ও মোবাইল চুরির অভিযোগে এক কর্মীকে কাজ থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন এক ডেকরেটার্স মালিক। তা মেনে নিতে পারেননি ওই কর্মী। অভিযোগ, ভাই ও কাকাকে সঙ্গে নিয়ে মালিককেই পিটিয়ে খুন করেছিলেন ‘অপমানিত’ ওই কর্মী। সাড়ে চার বছর পরে বুধবার ওই কর্মী-সহ ৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল বাঁকুড়া জেলা আদালত।

Advertisement

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাঁকুড়ার ওন্দা থানার মালপুর গ্রামে ডেকরেটার্স মালিক কালোসোনা রায়ের মোবাইল ফোন ও বেশ কিছু নগদ টাকা চুরি গিয়েছিল। মালিকের অভিযোগ ছিল, সেই সব চুরি করেছে কর্মী সাগর মাঝি। তাঁকে কাজে আসতে নিষেধ করেছিলেন মালিক। এই ঘটনার পরেই সাগরের রাগ গিয়ে পড়েছিল মালিকের উপরে। নিজের ভাই ও কাকাকে সঙ্গে নিয়ে রড ও লাঠি দিয়ে মালিককে বেধড়ক মারধর করেন ওই কর্মী। ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছিলেন কালোসোনা। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা কালোসোনাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে ২০২১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ওন্দা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। তদন্তে নেমে পরের দিনেই মূল অভিযুক্ত ও তাঁর কাকাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ১ মার্চ গ্রেফতার হয় অপর অভিযুক্তকে। তারপর থেকে বিচার চলছিল বাঁকুড়া জেলা আদালতে। এর মধ্যে ৩ জন অভিযুক্তই জামিনে মুক্ত ছিলেন।

Advertisement

মঙ্গলবার ১১ জনের সাক্ষ্য ও তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ৩ অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। বুধবার বাঁকুড়া জেলা আদালতের তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক দেবকুমার গোস্বামী ওই তিন জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে অভিযুক্তদের প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়।

এই প্রসঙ্গে বাঁকুড়া জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী রথীন দে বলেন, ‘‘মৃতের ছেলে কর্ণজিৎ রায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পরবর্তীতে অভিযুক্তেরা জামিনে মুক্ত হয়। মঙ্গলবার ওই তিন অভিযুক্তকে খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করে হেফাজতে নেয় আদালত। বুধবার তিন জনকেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ মৃতের ছেলে কর্ণজিৎ বলেন, ‘‘গত সাড়ে চার বছর ধরে আদালতে লড়াই করছিলাম। আদালত দোষীদের শাস্তি দেওয়াতে আমি খুশি।’’ সাজাপ্রাপ্তদের আত্মীয় স্বপন বাগদী বলেন, ‘‘আমরা গরীব মানুষ। উচ্চ আদালতে লড়াই করার ক্ষমতা আমাদের নেই। তবু পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে বাঁকুড়া জেলা আদালতের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা চিন্তাভাবনা করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement