জামিন পেলেও ফের আরও একটি মামলায় গ্রেফতার হওয়ায় গত মঙ্গলবার শেষবেলায় আটকে গিয়েছিল মহম্মদবাজারে কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া ২৪ জনের মুক্তি। তাঁদের মধ্যে ১৮ জন জামিন পেলেন সোমবার। অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবী সোমনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, সিউড়ি এসিজেএম অলিভা রায় ধৃতদের জামিন মঞ্জুর করেন।
চলতি মাসের ৭ তারিখ, শনিবার মনোনয়ন জমা করাকে কেন্দ্র করে তেতে উঠেছিল মহম্মদবাজার। বিরোধীদের দাবি, শাসকদলের লোকেদের হাতে ‘একতরফা’ মার খেয়েও মরিয়া হয়ে তারা মনোনয়ন জমা করে। ওই দিন কয়েক হাজার মানুষের জমায়েত ও মিছিল করে ব্লক অফিসে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েছিল বিজেপি। সঙ্গে ছিল বামেরাও। প্রথমে পুলিশ সেই মিছিল আটকানের চেষ্টা করেও বিফল হয়। অভিযোগ, মিছিল প্যাটেলনগরের ব্লক অফিসের কাছাকাছি পৌঁছলে মিছিল আটকায় শাসকদলের আশ্রিত ‘দুষ্কৃতীরা’। শুরু হয় খণ্ডযুদ্ধ! চলে বোমা, তির-ধনুকের লড়াই। ওই রাতেই ২৮ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, শাসকদলের বাধা প্রতিহত করে মনোনয়ন জমা দেওয়া হয়েছিল। অথচ যাঁরা ধরা পড়েছিলেন সকলেই বিরোধী শিবিরের। ধৃতদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় অভিযোগ এনেছিল পুলিশ। পর দিন চার জনকে নিজেদের হেফাজতেও নেয় পুলিশ। বাকি ২৪ জনের ১৪ দিনের জেল হাজত হয়।
গ্রেফতারের মাত্র দু’দিনের মাথায় গত মঙ্গলবার পুলিশি হেফাজতে থাকা চার জনকে আদালতে হাজির করানো হয়েছিল, সে দিন সকলেই জামিন দেয় সিউড়ি আদালত। সোমনাথবাবুর দাবি ছিল, ধৃতদের বিরুদ্ধে কোনও নির্দিষ্ট প্রমাণ না থাকায় জামিন মিলেছিল। তার পরেই ঘটনা অন্য দিকে মোড় নেয়। আইনজীবীর দাবি, প্রত্যেককে একটি অন্য ঘটনায় গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, আদালতে মুখ পুড়িয়ে বিরোধীদের আটকে রাখার ছুতো ছিল সেটা। শাসকদল ও পুলিশ যৌথ উদ্যোগে কাজ করছে। বিরোধীদের দাবি মানেননি তৃণমূল নেতারা। তবে পুলিশ মুখ খুলতে চায়নি।
সে কারণেই সে দিন হেফাজত থেকে আদালতে যাওয়া চার জনের জামিন হয়ে গেলেও বাকি ২৪ জন মুক্তি পাননি সিউড়ি জেলা সংশোধনাগার থেকে। তাঁদেরই ১৮ জন এ দিন জামিনে মুক্তি পেলেন। বাকি ছ’জনের কেন জামিন হল না? সোমনাথবাবু বলছেন, ‘‘বাকিদের কাছ থেকে নানা অস্ত্র উদ্ধার দেখিয়েছে পুলিশ।’’ বিরোধী শিবিরের অবশ্য দাবি, সবটাই সাজানো।