বুথে না দাঁড়িয়ে বাড়ি যান, শুনল ময়ূরেশ্বর

ময়ূরেশ্বর ২ নম্বর ব্লকে ভোট ছিল তিনটি পঞ্চায়েত এলাকায়। তার মধ্যে উলকুণ্ডা পঞ্চায়েত এলাকায় ১১টি আসনের মধ্যে ৬টিতে বিজেপির প্রার্থী থাকলেও তাঁরা পরে শাসকদলে যোগ দিয়ে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়ান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ময়ূরেশ্বর শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৮ ০২:১৪
Share:

সারিবদ্ধ: ময়ূরেশ্বরের একটি ভোটকেন্দ্রে। ছবি: কল্যাণ আচার্য

সকালে টিপটিপ বৃষ্টিতে ভোটের আবহাওয়া ঠান্ডা ছিল ময়ূরেশ্বরে। বেলা বাড়তেই রোদ উঠল। ছড়াল ভোটের উত্তাপ।

Advertisement

ময়ূরেশ্বর ২ নম্বর ব্লকে ভোট ছিল তিনটি পঞ্চায়েত এলাকায়। তার মধ্যে উলকুণ্ডা পঞ্চায়েত এলাকায় ১১টি আসনের মধ্যে ৬টিতে বিজেপির প্রার্থী থাকলেও তাঁরা পরে শাসকদলে যোগ দিয়ে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়ান। তা-ই ভোটে সরগরম ছিল মূলত ময়ূরেশ্বর এবং কুণ্ডলা পঞ্চায়েত এলাকা। কুণ্ডলা পঞ্চায়েতে ১৬টি আসনের মধ্যে ভোট হয় ১১টিতে। ৫টি আসনে বিরোধী প্রার্থী না থাকায় লড়াই হয়নি। ময়ূরেশ্বর পঞ্চায়েতে ১৬টি আসনের মধ্যে ৪টিতে বিরোধী শিবির প্রার্থী দিতে পারেনি। ভোট হয় ১২টি আসনে। তার মধ্যে বিজেপি সব ক’টিতেই প্রার্থী দিয়েছিল। সিপিএম লড়ে ৪টি আসনে। পঞ্চায়েত সমিতির ২১টি আসনের মধ্যে ওই পঞ্চায়েতে বিজেপির ৩টি ও সিপিএমের ২টি আসনে প্রার্থী ছিল।

ওই দু’টি পঞ্চায়েতের ভোট ঘিরেই এ দিন ছিল উত্তেজনা।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ জটিল মণ্ডল, ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি চন্দ্রনীল ঘোষের নেতৃত্বে বাইকবাহিনী বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতে দেখা যায়। অভিযোগ, ময়ুরেশ্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৫৬ এবং ১৫৭ নম্বর বুথ থেকে বিরোধী প্রার্থীর এজেন্টদের বন্দুক দেখিয়ে বের করে দেওয়া হয়। বাদ যাননি ওই আসনের সিপিএম প্রার্থী গোপালচন্দ্র অধিকারী। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ভোট শুরুর ২০ মিনিটের মধ্যে শাসক দল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বন্দুক দেখিয়ে আমাকে বুথ থেকে বের করে দিয়ে অবাধে ছাপ্পাভোট দিয়েছে।’’

ওই বুথের এক ভোটারের নালিশ, ‘‘বুথে গিয়ে শুনি আমাদের ভোট নাকি পড়ে গিয়েছে। প্রিসাইডিং অফিসারকে জানিয়েও লাভ হয়নি।’’ স্থানীয় এক বৃদ্ধার কথায়, ‘‘ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। কয়েকটা ছেলে এসে বলল, দিদিমা তোমাকে কষ্ট করে দাঁড়িয়ে থেকে ভোট দিতে হবে না। সেই কথা শুনে বুথ থেকে ফিরে যাই।’’ একই ঘটনা ঘটে ময়ূরেশ্বর হাইস্কুলের ১৫৫ নম্বর বুথেও। ওই বুথে বিরোধী শিবিরের কোনও এজেন্ট বা প্রার্থীর দেখা মেলেনি।

অন্য দিকে বিজেপির বিরুদ্ধে ভুয়ো ভোট দেওয়ার অভিযোগ তুলে প্রায় আধঘণ্টা ভোট বন্ধ করে দিল শাসকদল। ঘটনাটি ঘটে ময়ূরেশ্বর পঞ্চায়েতের ব্রাহ্মণবহড়া গ্রামের ৬ নম্বর বুথে। ওই বুথে বেলা দেড়টা নাগাদ এক ভুয়ো ভোটার ভোট দিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। তার জেরে ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়। পরে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে ভোট ফের শুরু হয়।

বিজেপির তরফে এলাকায় নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত উৎপল রুজ বলেন, ‘‘শাসক দল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বুথ দখল করে নিয়েছিল। অশান্তি রুখতে আমাদের কর্মী-সমর্থকেরা ভোট না দিয়ে ফিরে আসেন।’’ তবে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব ওই অভিযোগ মানতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন