নিতুড়িয়ায়। নিজস্ব চিত্র
নিতুড়িয়ার বেণীপুর গ্রামের স্পঞ্জ আয়রন তৈরির কারখানার জন্য জমি বিক্রি করা তিরিশজনের কর্মসংস্থান নিয়ে জটিলতা কাটল না মঙ্গলবারও।
কর্মসংস্থানের বিষয় নিয়ে তৈরি হওয়া সমস্যা মেটাতে মঙ্গলবার কারখানা এবং জমির মালিকদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন নিতুড়িয়ার বিডিও অজয়কুমার সামন্ত। বৈঠকে বিডিও ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ-সভাপতি এবং ওই জমি মালিকদের ৩০ জন প্রতিনিধি। কিন্তু কারখানার মালিকপক্ষ বৈঠকে উপস্থিত না থাকায় কর্মসংস্থানের সমস্যা নিয়ে আলোচনাই হল না এদিন। বিডিও অজয়বাবু বলেন, ‘‘এর পরে কী করণীয় সেটা জানতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।”
নিতুড়িয়া ব্লকের বেণীপুর গ্রামের অদূরে স্পঞ্জ আয়রন কারখানা তৈরির জন্য জমি বিক্রি করেছিলেন গ্রামের তিরিশজন বাসিন্দা। তাঁদের দাবি, বছর ১২ আগে জমি বিক্রির সময়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ জমির মালিকদের কারখানায় নিয়োগ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। পুরানো মালিকপক্ষ বছর ছ’য়েক আগে কারখানা অন্য দুই ব্যক্তিকে বিক্রি করে চলে যান। তারপর থেকেই ওই জমি মালিকেরা অভিযোগ তুলেছেন, নতুন মালিকপক্ষ তাদের কর্মসংস্থানের দাবি মানছে না।
গত কয়েক বছর ধরেই প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে এই অভিযোগ জানিয়ে আসছে ওই তিরিশজন। গত ডিসেম্বরে কারখানা কর্তৃপক্ষ ও জমির মালিকদের নিয়ে আলোচনা করেছিল ব্লক প্রশাসন। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় ডিসেম্বরের মধ্যে পনের জনকে ও মার্চের মধ্যে বাকি পনের জনকে কারখানায় কাজ দেওয়া হবে।
কিন্তু, নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও কারখানা কর্তৃপক্ষ কাউকে নিয়োগ করেননি। এই অভিযোগে কারখানার সামনে চলতি মাসের প্রথমদিকে বিক্ষোভ, অবস্থানে বসেছিলেন ওই তিরিশ জন। সেই সময়েই মঙ্গলবার ব্লক প্রশাসন ফের সকলকে নিয়ে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নেয়।
ব্লক প্রশাসন সেই মতো দুই তরফেই চিঠি দিয়ে বৈঠকে আসার জন্য জানিয়েছিল। এদিন ঘড়িতে ৩টে বাজার আগেই ব্লক কার্যালয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন জমি মালিকেরা। কিন্তু দীর্ঘ অপেক্ষার পরেও মালিকপক্ষের তরফে কেউ না আসায় বৈঠকবিফল হয়। তবে সূত্রের খবর, এদিন সকালে কারখানার মালিকপক্ষ বিডিও’কে ফোন করে দাবি করে, জমির মালিকদের আন্দোলনের জেরে কারাখানায় কাজ চালিয়ে যেতে সমস্যা হচ্ছে। বিডিও সেই সময়েই তাদের বৈঠকে এসে জমির মালিকদের সঙ্গে সামনাসামনি আলোচনা করার উপদেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরেও মালিকপক্ষের তরফে কেউ বৈঠকে আসেনি।
এদিন এই বিষয়ে নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ বা কারখানার মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। অন্যদিকে, বিডিও জানান, কারখানায় তৈরি হওয়া সমস্যা নিয়ে এবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অর্থ্যাৎ জেলাশাসক বা রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসকের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি। আনেদোলনকারী আস্তিক মন্ডল বলেন, ‘‘আমদের ন্যায্য দাবি মানছে না মালিকেরা। এমনকী, প্রশাসন তাদের বৈঠকে ডাকলেও সেখানে তারা আসছে না। আমরা ফের আন্দোলনে নামার কথা ভাবছি।”