কর্মসূচি ছিল বিজেপি-র। সেই নিয়ে জেলায় রাজনৈতিক উত্তাপ ক্রমেই বেড়েছে। পাল্টা হিসেবে নিজেদের কর্মসূচি অর্থাৎ, খোল-করতাল নিয়ে কীর্তন-যাত্রা জেলায় এরই মধ্যে শুরু করে দিয়েছে শাসকদল তৃণমূল। এমনকি ভঙ্গুর সংগঠন নিয়ে বিজেপি-র কর্মসূচির বিরোধিতায় পদযাত্রা করেছে বামফ্রন্টও। কিন্তু, মামলা চলছিল বলে এত দিন আটকে ছিল বিজেপি-র রথযাত্রা বা ‘গণতান্ত্রিক বাঁচাও যাত্রা’। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ সেই রথযাত্রার অনুমতি দেওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে বীরভূম বিজেপি-র নেতা-কর্মী-সমর্থকদের মনে।
বিজেপি সূত্রে খবর, ১৪ ডিসেম্বর তারাপীঠ থেকে রথযাত্রার সূচনা করার কথা ছিল বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের। তার আগে জনসভা করারও কথা। সে জন্য রামপুরহাট রেল স্টেশন সংলগ্ন মাঠকে বেছে নিয়েছিল বীরভূম জেলা বিজেপি। তাদের অভিযোগ ছিল, অন্য কোও বড় মাঠে সভা করার অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। জেলার ১১টি বিধানসভা কেন্দ্র ঘোরার জন্য বীরভূমে চার দিন রথ রাখার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। বীরভূমে চার দিন রথ রাখার পর বর্ধমানের উদ্দেশে রথ যেত বলে বিজেপি সূত্রের খবর। জেলা বিজেপি-র সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলেন, ‘‘প্রস্তুতি চলছে। ২৯ তারিখ করার ভাবনা আমাদের রয়েছে। তবে, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চাইছেন, ২৫ ডিসেম্বর প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর জন্মদিনে রথযাত্রা হোক। এখনও অবশ্য কিছু চূড়ান্ত হয়নি।’’ দলের জেলা সহসভাপতি শুভাশিস চৌধুরীর কথায়, ‘‘রথযাত্রার জন্য আমাদের সমস্ত রকমের প্রস্তুতি ছিল। এখন আদালতের অনুমতি দানের পরে আবার রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে প্রস্তুতি নেওয়া হবে। এ ব্যপারে আইন মেনে সমস্ত কিছু করার জন্য আমরা প্রস্তুত।’’
এই রথযাত্রাকে প্রথম থেকেই কটাক্ষ করেছেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। বিভিন্ন জনসভা থেকে বিজেপি-র উদ্দেশে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। রথের পাল্টা ১৪ ডিসেম্বর বিকেলেই খোল করতাল নিয়ে মিছিল করার ঘোষণা করেছিলেন। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে সেই কীর্তন-যাত্রা শুরুও হয়েছে। এ দিন অনুব্রতের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কে রথ চালাবে, কোথায় চালাবে, কোথায় রথের চাকা ভাঙবে, আমার তাতে কোনও মাথাব্যথা নেই।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রামচন্দ্র ডোম বলেন, ‘‘আদালত রায় দিয়েছে। রথ চালাক। শান্তি বিঘ্নিত না হলেই হল। তবে এ তো ভোটের রথ। ধর্মীয় মেরুকরণ করানোর জন্যই এই রথ চালানো হচ্ছে। এতে মানুষের কোনও ভাল হবে না।’’