BJP

নতুন, পুরনোর তালমিল রাখাই লক্ষ্য বিজেপির

বিধানসভা ভোট আসন্ন। সংগঠন বাড়াতে তৎপর শাসক-বিরোধী, দুই শিবিরই। কিন্তু, তার মধ্যেও কিছু কিছু জায়গায় খচখচ করছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কাঁটা। ভোটের আগে সদ্য জেলা সভাপতি বদল হয়েছে বিজেপি-র। তাতে কি সমস্যা মিটবে? কারণ, সংগঠন এবং রাজনৈতিক কর্মসূচিতে এখনও অনেকটাই এগিয়ে তৃণমূল। যুযুধান দুই দলের অন্দরমহলে উঁকি মারল আনন্দবাজার। বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব একাধিক বার সামনে এসেছে। আছে নব্য-আদি দ্বন্দ্বও। বুথ স্তরের সংগঠন মোটেও মজবুত নয় বলে হামেশা কটাক্ষ ধেয়ে আসে শাসক শিবির থেকে।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত 

সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২১ ০১:১৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

এত দিনের রাগ, অভিমান, বিরোধ মিটিয়ে বিধানসভা নির্বাচনের আগে সবাইকে পদ্মফুলের আঙিনায় আনা যাবে তো, এমন চর্চা রয়েছে বীরভূম জেলা বিজেপির অন্দরেই। বুথ স্তরে সংগঠন মজবুত করে নেতৃত্বের মধ্যেকার ক্ষোভ প্রশমনের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে আবার আশাও দেখতে শুরু করেছেন এঁদের অনেকে। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে নির্দেশ রয়েছে, নির্বাচনের আগে দলের এক জন নেতাকর্মীও যেন নিষ্ক্রিয় না থাকেন সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

Advertisement

সে কাজ আদপে ততটা সহজ নয়, সেটা ঘনিষ্ট মহলে মানেন কিছু নেতাও। কেননা অতীতে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব একাধিক বার সামনে এসেছে। আছে নব্য-আদি দ্বন্দ্বও। বুথ স্তরের সংগঠন মোটেও মজবুত নয় বলে হামেশা কটাক্ষ ধেয়ে আসে শাসক শিবির থেকে। সেখানে বিধানসভা নির্বাচনের কিছু আগে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া ধ্রুব সাহা কী দলের সংগঠনিক ভিত মজবুত করে টক্কর দিতে পারবেন তৃণমূলকে। অনেকের আবার মত, একাধিক মামলা থাকাই নয়, দলের মধ্যে নতুন সভাপিতকে নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল এবং আছে। চার প্রাক্তন জেলা সভাপতিদের মধ্যে অন্তত দু’জনের সঙ্গে সম্পর্ক মসৃণ ছিল না বলেও তাঁদের দাবি। তবে ভুলের পুনরাবৃত্তি চাইছেন না ধ্রুব। ইতিমধ্যেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে কার্যত বসে যাওয়া একদা পদাধিকারী ও কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্যা মিটিয়ে নিতে চাইছেন তিনি। ধ্রুব বলছেন, ‘‘আমি চাইছি যাঁরা কোনও কারণে নিশ্চুপ হয়ে গিয়েছিলেন তাঁদের সঙ্গে বসে সমস্যা মিটিয়ে নিতে। সঙ্গে নব্যদেরও সম্মান দিয়ে চলতে চাই। সামনে যে লড়াই তাতে এক জন কার্যকর্তা নিষ্ক্রিয় থাকলে লড়াই জেতা যাবে না।’’

২০১৯ সালে বিজেপি-র রকেট-সম উত্থানের বাজারেও নিজের জেলার দু’টি লোকসভার আসন ধরে রেখেছিলেন। তথাপি ফলের নিরিখে বীরভূমের ১১টি বিধানসভার মধ্যে ৫টিতে এগিয়ে গিয়েছিল বিজেপি। এত ভাল ফল করলেও উদ্বেগের বিষয় ছিল বিজেপির অন্দরের দ্বন্দ্ব। কখনও অর্জুন সাহার সঙ্গে রামকৃষ্ণ রায়ের দ্বন্দ্ব, কখনও ধ্রুব সাহার সঙ্গে দুধকুমার মণ্ডলের দ্বন্দ্ব, কখনওবা রামকৃষ্ণ রায়, কালোসোনা মণ্ডল সহ একাধিক নেতার সঙ্গে শ্যামাপদ মণ্ডলের দ্বন্দ্ব, বারবার চর্চায় থেকেছে। বিজেপির অন্দরের খবর, সেই দ্বন্দ্ব কোথাও জিইয়ে থাকায় বুথ স্তরের সংগঠন মজবুত করার একাধিক কর্মসূচি নিলেও কোথাও ফাঁক থেকে যাচ্ছে এখনও। জেলায় ৩০২১ বুথের একটা অংশে বিজেপি দাগ কাটতে পারে নি। যেটা ভাল ফল করার ক্ষেত্রে অন্তরায় হতে পারে।

Advertisement

জেলার এক শীর্ষ নেতা বলছেন, ‘‘মানুষ সঙ্গে আছে ধরে নিলেও তাঁদের ভোট ইভিএম পর্যন্ত পৌঁছানোর জন্য সাংগঠনিক শক্তির প্রয়োজন। নিজেদের মধ্যে লড়ে চললে ভোটবাক্সে খেসারত দিতে হবেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন