দলের অন্দরের কোন্দল যেন মিটতেই চাইছে না পুরুলিয়া জেলা বিজেপিতে। বিধানসভা ভোটের আগে জেলা সভাপতি পদে এবং জেলা কমিটিতে রদবদল ঘিরে দলীয় কর্মীদের বিক্ষোভ প্রকাশ্যে এসেছে একাধিক বার। এমনকী নতুন জেলা সভাপতির কুশপুত্তলিকা দাহ, তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দলীয় কার্যালয়ের দেওয়ালে পোস্টারও পড়েছে। ফের জেলা সভাপতি বদলের পরও যে দ্বন্দ্বের সেই ছবি বদলায়নি, জেলা কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে এসে তার আঁচ পেলেন বিজেপি-র রাজ্য কমিটির প্রতিনিধি।
জেলা সভাপতি পদ থেকে বিকাশ মাহাতোর অপসারণের পরে বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী জেলা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরে গত শনিবার পুরুলিয়া শহরের হুচুকপাড়ার দলীয় কার্যালয়ে বৈঠক ছিল জেলা কমিটির। সেই বৈঠকেই এসেছিলেন পুরুলিয়া-সহ পাঁচ জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামাপদ মণ্ডল। ওই দিন দুপুরে তিনি দলীয় দফতরে ঢুকতেই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নেতা-কর্মীরা তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তাঁদের দাবি, দলের কমিটি নিয়ে এ ভাবে যথেচ্ছাচার চলবে না। কিছু কিছু নেতা দলে মৌরসিপাট্টা চালাচ্ছেন। দলের বর্ষীয়ান নেতা অম্বিকা মিশ্র সহ বিভিন্ন ব্লক থেকে আসা কর্মীরা একতলায় শ্যামাপদবাবুকে ঘিরে রাখেন। তখন কার্যালয়ের দোতলায় জেলা সভাপতি ও জেলা কমিটির অন্য নেতারা বৈঠকে বসেছিলেন।
মানবাজারের জগদীশ মুখোপাধ্যায়, পাড়ার শূলপাণি সিংহ, ধনঞ্জয় মাহাতো, পুরুলিয়া ১ ব্লকের খগেন পাণ্ডের মতো ব্লকের নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, ‘‘দল নিয়ে ছেলেখেলা চলছে। বিধানসভা ভোটে আমাদের দলের ভাল ফল করার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও তা নষ্ট হয়েছে।’’ কর্মীরা ক্ষোভের সঙ্গে বলতে থাকেন, বারবার জেলা সভাপতি ও জেলা কমিটি বদলাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে নতুন জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগরবাবু বলেন, ‘‘সামান্য কিছু রদবদল করা হয়েছে। আগের সভাপতিও করেছিলেন। এই রদবদল সাংগঠনিক প্রক্রিয়ারই অঙ্গ।’’ শ্যামাপদবাবু বলেন, ‘‘আমি সকলের কথাই শুনেছি। তবে যাঁরা দলের জন্য কাজ করতে চান, তাঁরা অবশ্যই জায়গা পাবেন। এর বেশি আর কিছু বলব না।’’