Purulia BJP

শাহী-সভার পরেই বুথে নজর পদ্মের

দল সূত্র্রের খবর, গত বিধানসভা নির্বাচনে দু’জেলাতেই অত্যন্ত ভাল ফল করেছিল বিজেপি। বাঁকুড়া জেলায় ১২টি আসনের মধ্যে আটটি জেতে বিজেপি।

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল, রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২৫ ০৯:৫২
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

অমিত শাহের কলকাতায় সভার পরেই দলের অন্য সব কর্মসূচিকে পাশে সরিয়ে রেখেই বুথের শক্তি মজবুত করতে মাঠে নামলেন দুই জেলার বিজেপি নেতৃত্ব। যার পোশাকি নাম— ‘মেরা বুথ সবসে মজবুত’।

আগামী বিধানসভা নির্বাচনে জেলার সব বিধানসভা আসন দখলের অন্যতম শর্ত হচ্ছে, বুথে সংগঠনকে পোক্ত করা। এই বার্তা দিয়ে দুই জেলায় মণ্ডল সভাপতি, মণ্ডল সম্পাদক, বিধানসভার ইনচার্জ, বিধায়ক ও সাংসদের নিয়ে কর্মশালা করেছেন বিজেপির মহিলা নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়।

বস্তুত, বিজেপির বুথ স্তরে সংগঠন পোক্ত করা (দলের ঘোষিত নাম ‘বুথ স্বশক্তিকরণ’ কর্মসূচি) সে অর্থে নতুন নয়। আগেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বর নির্দেশে এই কর্মসূচি হয়েছে। কিন্তু আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিতে এ বার এই কর্মসূচিকে অনেকটাই গুরুত্ব দিচ্ছেন শীর্ষ নেতৃত্ব।

কেন? দল সূত্র্রের খবর, গত বিধানসভা নির্বাচনে দু’জেলাতেই অত্যন্ত ভাল ফল করেছিল বিজেপি। বাঁকুড়া জেলায় ১২টি আসনের মধ্যে আটটি জেতে বিজেপি। পরে অবশ্য বিষ্ণপুর ও কোতুলপুরের দুই বিজেপি বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দেন। পুরুলিয়া জেলাতেও ন’টি আসনের মধ্যে ছ’টিতেই জেতে বিজেপি। যদিও তারপরে পুরসভা থেকে পঞ্চায়েত ভোট— দুই জেলাতেই হতাশ হয়েছে বিজেপি। তবে বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, ওই দুই ভোটে রিগিং ও কারচুপি করে জিতেছে তৃণমূল।

সে অভিযোগের গুরুত্ব অবশ্য হারাচ্ছে গত বছরের লোকসভা ভোটের ফলাফলে। বাঁকুড়া কেন্দ্র বিজেপির কাছ ছিনিয়ে নেয় তৃণমূল। বিষ্ণুপুর কেন্দ্র মাত্র হাজার পাঁচেক ভোটের ব্যবধানে ধরে রাখতে পেরেছে বিজেপি। পুরুলিয়া কেন্দ্রে গত লোকসভায় দুই লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধান কমে দাঁড়ায় মাত্র সতেরো হাজারে। লোকসভা ভোটের প্রেক্ষিতে পুরুলিয়া জেলায় দখলে থাকা জেলার চার বিধানসভায় পিছিয়ে পড়েছে বিজেপি।

দুই জেলার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির পালে হাওয়া থাকলেও সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণেই তারা তেমন সুবিধা করতে পারেনি।

এই প্রেক্ষাপটেই বুথ স্তরে শক্তি বাড়াতে মরিয়া বিজেপি নেতৃত্ব। এই কর্মসূচিতে কিছুটা সাংগঠনিক বদলও আনা হয়েছে। আগে বুথ কমিটি হত ছ’জনের। এ বার তা ন্যূনতম ১২ জনের হচ্ছে। সদস্যদের প্রত্যেককেই সক্রিয় হতে বলা হয়েছে। বুথ কমিটি তৈরিতে সাংসদ, বিধায়ক-সহ জেলা স্তরের নেতাদের নির্দিষ্ট দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে। জেলা স্তরের এক জনকে মণ্ডল স্তরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মণ্ডল স্তরের এক নেতাকে শক্তিকেন্দ্রের ইনচার্জ করা হয়েছে। ২০ জুনের মধ্যে সমস্ত বুথ কমিটি গড়তে বলা হয়েছে।

সাম্প্রতিক কালে বিজেপির বুথ কমিটি গঠনের পরেই মণ্ডল ও জেলা স্তরের সভাপতি নির্বাচন করা হয়েছে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর— তিন সাংগঠনিক জেলায়। তার পরেও বুথ স্তরে সংগঠনে কেন বাড়তি নজর দিতে হচ্ছে? সূত্রের খবর, সে সময়ে দ্রুত সাংগঠনিক নির্বাচন করানোর তাগিদে বুথে কমিটি যথাযথ ভাবে গঠন করা হয়নি। কিছু বুথে কমিটি গঠনও করা যায়নি। কিছু বুথে কমিটি নিয়েও প্রশ্ন আছে দলের অন্দরে। আবার বহু বুথ কমিটির সদস্যেরা নিষ্ক্রিয়। কিছু বুথ সভাপতিও দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালনে সক্ষম নন।

পুরুলিয়ার বিজেপির সভাপতি শঙ্কর মাহাতো বলেন, ‘‘আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে নিচু স্তরে সংগঠনকে যতটা বেশি সম্ভব পোক্ত করতেই হবে। সংগঠনে ওঠাপড়া লেগেই থাকে। সে সমস্ত বিষয়গুলো দ্রুত মেরামত প্রয়োজন।” বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুরের সভাপতি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও সুজিত অগস্তি বলেন, ‘‘সক্রিয় সদস্যদের নিয়েই বুথ কমিটি গঠন করা হচ্ছে। কোন ফাঁকফোকর রাখা হবে না।’’

(চলবে)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন