বলরামপুরে ‘অপহৃত’ বিজেপি কর্মী

মঙ্গলবার তিনি জয়পুরে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সভায় গিয়েছিলেন। সেই সভা থেকে ফিরে রাতে নিখোঁজ হন তিনি। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বলরামপুর শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:৫৪
Share:

পথ-চেয়ে: কার্তিক গড়াইয়ের (ইনসেটে) অপেক্ষায় তাঁর স্ত্রী ও সন্তানেরা। ছবি: সুজিত মাহাতো

বলরামপুরের এক বিজেপি কর্মী রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন। ঘাটবেড়া-কেরোয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্মা গ্রামের বছর সাঁইত্রিশের ওই যুবককের নাম কার্তিক গড়াই। বিজেপি নেতৃত্ব ও তাঁর পরিবারের দাবি, তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে।

Advertisement

মঙ্গলবার তিনি জয়পুরে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সভায় গিয়েছিলেন। সেই সভা থেকে ফিরে রাতে নিখোঁজ হন তিনি।

বিজেপি-র স্থানীয় নেতৃত্বের অভিযোগ, ওই যুবককে ‘অপহরণে’ তৃণমূলের ভূমিকা রয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য অভিযোগ মানেননি।

Advertisement

পুলিশ সূত্রেরও দাবি, অপহরণের বিষয়ে তারা এখনই নিশ্চিত নয়। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া বলেন, ‘‘সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু হয়েছে।”

বলরামপুরের উরমা থেকে দলের কর্মীদের সঙ্গে মঙ্গলবার যোগীর সভায় যান বিজেপির বুথ কমিটির সক্রিয় কর্মী বলে পরিচিত কার্তিক। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে মোটরবাইক নিয়ে তিনি বলরামপুর সদরে যান। বিজেপির বলরামপুর মণ্ডলের সভাপতি বাণেশ্বর মাহাতোর দাবি, ‘‘রাত ৮টা নাগাদ কার্তিক আমাদের দলের কর্মী সুবীর ঘোষকে ফোন করে বলেন, ‘দুটো গাড়ি আমার পিছু নিয়েছে। ওদের ভয়ে আমি উরমায় তৃণমূলের পার্টি অফিসের পিছনে লুকিয়ে আছি’। ওঁকে বাঁচাতে পুলিশকে খবর দিতে বলেন।’’ সুবীরবাবু বলেন, ‘কার্তিক বলছিল, ‘আমাকে বাঁচা’। সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ ও দলের নেতা-কর্মীদের খবর দিই।’’

পুলিশ উরমায় কার্তিকের দেখা পায়নি। তবে তৃণমূলের পার্টি অফিসের কাছে রাস্তা থেকে তাঁর মোটরবাইক মেলে। মেলে একটি মোবাইল ফোনের ব্যাটারিও। মঙ্গলবার রাতে পুলিশ তল্লাশি চালায়। তবে কার্তিকের খোঁজ মেলেনি।

বলরামপুরে পঞ্চায়েত ভোটের পর্বে দুই বিজেপি কর্মীর অপমৃত্যুর ঘটনায় তৃণমূলের নাম জড়িয়েছে। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে দলের জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘আমাদের আশঙ্কা, তৃণমূলের দুষ্কৃতীরাই কার্তিককে অপহরণ করেছে।’’ অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের বলরামপুর ব্লক সভাপতি অঘোর হেমব্রমের দাবি, ‘‘ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই। শুনেছি, কার্তিকবাবুর প্রচুর ঋণ আছে।’’

বছর দু’য়েক আগে বলরামপুরের গোশালামোড়ে বাড়ি করেন একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের এজেন্ট কার্তিক। কর্মা গ্রামে থাকতেন স্ত্রী, দুই মেয়ে, এক ছেলে ও দাদা বুধু গড়াইকে নিয়ে। পুলিশ সূত্রের দাবি, তদন্তে তারা জেনেছে, স্থানীয় কিছু বাসিন্দার সঙ্গে ব্যাঙ্কে টাকা জমা দেওয়া নিয়ে সমস্যা চলছিল তাঁর। যদিও বুধুবাবুর দাবি, ‘‘ব্যাঙ্কের টাকার ব্যাপারে জানি না। কয়েকজন আত্মীয়ের কাছে ভাই ধার করেছিল।’’ বুধবার সকালে বলরামপুর থানায় অপহরণের অভিযোগ জানান কার্তিকের স্ত্রী বন্দনা। বলেন, ‘‘পুলিশ ওঁকে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরাক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন