সরবরাহের জল মেলে নামমাত্র। তাও আসে ভর দুপুরে। বাড়ি কাজ ফেলে ঠাঠা রোদে তেতে পুড়ে জলের জন্য লাইনে দাঁড়াতে হয়। এই অভিযোগ তুলে কলসি-বালতি নিয়ে মানবাজার-বরাবাজার রাস্তা অবরোধ করলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। বুধবার মানবাজারের রনাপুকুর এলাকার ঘটনা। অবরোধে আটকে পড়ে বাস, লরি-সহ বিভিন্ন যানবাহন। পরে প্রশাসনের আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।
এ দিন বেলা দেড়টা নাগাদ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, রনাপুকুর এলাকার মহিলারা বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে দড়ি বেঁধে রাস্তা আটকে রেখেছেন। রাস্তায় সার দিয়ে রাখা হাঁড়ি, কলসি, বালতি। মানবাজারের চৌমাথা থেকে দাসপাড়া পর্যন্ত রাস্তা সম্প্রতি ঢালাই হওয়ায় সমস্ত বাস ও লরি আপাতত বাইপাস হয়ে মানবাজার-বরাবাজার রাস্তা ব্যবহার করছে। অবরোধের জেরে অল্প সময়ের মধ্যে রাস্তার দু’ দিকে সার দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। অবরোধ চলে প্রায় ৪০ মিনিট। বাসের মধ্যে থাকা যাত্রীরা গরমে আটকে পড়ে নাকাল হন। যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, চড়া রোদের মধ্যে বাসের ভিতর গুমোট গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন কেউ কেউ।
এলাকার বাসিন্দা সান্ত্বনা কর্মকার, মিতালি লায়েক, ভাদু বাউরিরা বলেন, ‘‘পাড়ার কল থেকে দরকারের তুলনায় অনেক কম জল পাওয়া যায়। তার উপরে, বেশ কিছু দিন হল বেলা ১টা-দেড়টার আগে জল আসছে না।’’ সান্ত্বনাদেবী বলেন, ‘‘উনুনে রান্না চাপিয়ে জল ধরতে ছুটতে হয়। ফিরতে ফিরতে পোড়া লেগে যায়। কোন দিক যে সামাল দিই!’’ ভাদু বাউরির অভিযোগ, শুধু দেরি করে আসা নয়, কলে জল থাকে বড়জোর ৪০মিনিট। তড়িঘড়ি ছুটে না এলে আর জলই পাওয়া যায় না।
অথচ, রনাপুকুর এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, অন্য পাড়ার সকালে বা সন্ধ্যায় জল দেওয়া হয়। অবরোধকারীদের ক্ষোভ, ‘‘শুধু আমাদেরই কেন রোজ রোজ দুপুরে জল নিতে হবে? সব পাড়াতে পালা করে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সকাল-দুপুর-সন্ধ্যায় জল দেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত।’’ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে জানিয়েও জল সরবরাহের রুটিনে কোনও হেরফের হয়নি বলে তাঁদের অভিযোগ। বিডিও (মানবাজার ১) সত্যজিৎ বিশ্বাস জানান, অবরোধ শুরু হওয়ার পরে জয়েন্ট বিডিও এবং ওসি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, আলোচনার মাধ্যমে বিক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের বুঝিয়ে অবরোধ তোলেন তাঁরা। অবরোধকারীদের একাংশের দাবি, ব্লক প্রশাসনের কর্তারা উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়ায় প্রশাসনের উপর ভরসা রেখে তাঁরা রাস্তা খুলে দিয়েছেন।