রাইপুরের তৃণমূল নেতা অনিল মাহাতো খুনের ঘটনায় পুলিশের চার্জশিটে অভিযুক্ত সনৎ সিংহ ও জগন্নাথ নামাতা জামিন পেয়ে গেলেন। বুধবার খাতড়ার অতিরিক্ত দায়রা আদালত তাঁদের জামিন মঞ্জুর করে। সরকার পক্ষের আইনজীবী সমীর দাস বলেন, “এই জামিনের আমি বিরোধিতা করেছিলাম। তবে বিচারক সব দিক বিবেচনা করে জামিন মঞ্জুর করেছেন।”
গত ৮ সেপ্টেম্বর রাতে রাইপুর ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি অনিলবাবু মটগদায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পরেরদিন অনিলবাবুর স্ত্রী তথা বর্তমানে রাইপুর ব্লক তৃণমূল সভানেত্রী সুলেখা মাহাতো অনিলবাবুর বিরোধী নেতা হিসেবে পরিচিত রাইপুর ব্লক তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি জগবন্ধু মাহাতোর সাত অনুগামীর বিরুদ্ধে থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ধাপে ধাপে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে। তবে তদন্তে পুলিশ ওই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনে জড়িত থাকার কোনও প্রমাণ পায়নি। বরং উল্টে অনিলবাবুর একনিষ্ঠ অনুগামী তথা রাইপুর ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি রাজকুমার সিংহের ভাই সনৎ সিংহকেই এই খুনের জন্য গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশের আরও দাবি, সনতের প্ররোচনায় অনিলবাবুর গাড়ির চালক জগন্নাথ নামাতা ওই নেতাকে গুলি করেছিলেন। যে বন্দুক দিয়ে অনিলবাবুকে গুলি করা হয়েছিল তা সরবরাহ করেছিলেন রাইপুরের সিপিএম নেতা অশোক ঘোষ। এমনটাই দাবি পুলিশের। চার্জশিটেও অভিযুক্ত সাতজনের নামের বদলে অনিলবাবুকে খুনের জন্য সনৎবাবু, জগন্নাথবাবু ও অশোকবাবুকেই অভিযুক্ত করে পুলিশ। খুনের তিনমাসের মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার এই ঘটনার চার্জশিট আদালতে জমা দেয় পুলিশ।
পুলিশের তদন্ত কতটা সত্য তা নিয়ে অবশ্য আগেই প্রশ্ন তুলেছেন অনিলবাবুর স্ত্রী সুলেখাদেবী। তিনি এই ঘটনায় সিআইডি তদন্তেরও দাবি তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়ে। এ দিকে আজ বৃহস্পতিবার এই মামলাটি আদালতে ওঠার কথা। পুলিশের তদন্তে ক্লিন চিট পাওয়া এফআইআরে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা এখনও জামিন পাননি। অথচ সনৎবাবুরা জামিন পেয়ে যাওয়ায় বিচার ব্যবস্থা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন জগবন্ধুবাবু। এ দিন তিনি বলেন, “তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়া ব্যক্তিরা এখনও জামিন পাননি, অথচ যাঁরা জড়িত বলে পুলিশ প্রমাণ পেয়েছে, তাঁরা জামিন পেয়ে গেলেন কী করে?” তিনি যুক্ত করেন, “এতে সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন উঠে যায়।’’ রাজকুমারবাবু বলেন, “বিচার ব্যবস্থার উপর আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে। কারা প্রকৃত দোষী সেটা সময়ই বলে দেবে।”