সুরেশ আগরওয়ালের বিরুদ্ধে অনাস্থার চিঠি জমা পড়েছে প্রশাসনের কাছে। ফাইল চিত্র।
ট্র্যাডিশন অব্যাহত। নতুন পুরবোর্ড গঠনের কয়েকমাস গড়ানোর পরেই ঝালদায় তৃণমূল পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনল কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার ঝালদার পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়ালের বিরুদ্ধে অনাস্থার চিঠি জমা পড়েছে প্রশাসনের কাছে। পাঁচ কংগ্রেস কাউন্সিলরের পাশাপাশি নির্দলের প্রতীকে জয়ী সোমনাথ কর্মকারের সই রয়েছে সেখানে। চিঠির প্রতিলিপি পুরসভাতেও পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অনাস্থাকারীদের তরফে দাবি করা হয়েছে।
যদিও যাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হয়েছে, সেই সুরেশের দাবি, ‘‘হতে পারে। তবে সেই চিঠি এখনও দেখিনি। পুর-আইন অনুযায়ী সব কিছু হবে।’’ এসডিও (ঝালদা) ঋতম ঝা বলেন, ‘‘পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের চিঠি এসেছে। তাতে ছ’জন কাউন্সিলরের নামে সই রয়েছে।’’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, ১২টি আসনের এই পুরসভার পুরপ্রধানকে অনাস্থায় সরাতে গেলে অন্তত সাত জন কাউন্সিলরের সমর্থন দরকার। কিন্তু অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ছ’জনের স্বাক্ষর রয়েছে। আর এক জন কাউন্সিলরকে কংগ্রেস কি নিজেদের পক্ষে টানতে পারবে?
অনাস্থাকারীদের মধ্যে কংগ্রেস কাউন্সিলর বিপ্লব কয়ালের দাবি, ‘‘স্বেচ্ছাচারিতা, স্বৈরাচারী মনোভাব ও একনায়কতন্ত্রের অবসানের সময় এসে গিয়েছে। যে ভাবেই হোক আমরা সফল হব।’’ ধোঁয়াশা রেখে জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো দাবি করছেন, ‘‘চিঠিতে ছ’জনের স্বাক্ষর থাকলেও ভোটাভুটির দিন আরও চমক থাকবে। এ বার ঝালদায় মানুষের পুরবোর্ড গঠন হতে চলেছে।’’
যদিও সে দাবি উড়িয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘অনাস্থা প্রস্তাবের চিঠিতে ছ’জন কাউন্সিলর সই করেছেন। কিন্তু অনাস্থা পাশ করাতে গেলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা দরকার। কংগ্রেস আগে আগে সেটা করে দেখাক। তারপরে অন্য কথা।’’
গত ফেব্রুয়ারিতে ঝালদার পুরনির্বাচনে কংগ্রেস এবং তৃণমূল পাঁচটি করে আসন পায়। দু’টি আসনে জয়ী হন নির্দল প্রার্থীরা। গণনার দিনেই নির্দল থেকে জয়ী শিলা চট্টোপাধ্যায় তৃণমূলে যোগ দেন। আর এক নির্দল কাউন্সিলর সোমনাথ কর্মকার তৃণমূলে যোগ না দিলেও ৫ এপ্রিল বোর্ড গঠনের দিনে শাসকদলকেই সমর্থন জানান। কংগ্রেস বোর্ড গঠনের সভা বয়কট করেছিল। তারা কালা দিবস হিসেবে দিনটি পালন করে।
সম্প্রতি গুঞ্জন ওঠে কংগ্রেস পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে চসেছে। তখন কংগ্রেস শিবির দাবি করেছিল, তাদের সঙ্গে পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবে সায় দেবেন শিলা ও সোমনাথ। সে দিনও চেষ্টা করে দু’জনের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। এ দিন জমা দেওয়া চিঠিতে স্বাক্ষর রয়েছে সোমনাথের। তবে এ দিনও তিনি ফোন ধরেননি।
গতবার পুরবোর্ডের পাঁচ বছরের মেয়াদে একাধিকবার অনাস্থা এসেছে এই পুরসভায়। পুরসমস্যাগুলি সমাধানে তৎপর না হয়ে রাজনৈতিক দলগুলির এ ভাবে বারবার ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে সক্রিয়তা বেশি দেখে অসন্তুষ্ট পুরবাসীদের একাংশ। তাঁদের আক্ষেপ, এটাই কি তবে ঝালদার ভবিতব্য!