ফের বিতর্কে জড়ালেন পুরুলিয়ার কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়। এ বার পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো সদর হাসপাতালে কর্তব্যরত এক চিকিৎসককে হেনস্থার অভিযোগ উঠল তাঁর বিরুদ্ধে। স্বাস্থ্য দফতর এখনও বিষয়টি নিয়ে খুব একটা মন্তব্য করতে চায়নি। অন্যদিকে, বিধায়ক তাঁর বিরুদ্ধে তোলা এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেই উড়িয়ে দিয়েছেন।
পুরুলিয়া সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত গত শনিবার। এক চিকিৎসকের কথায়, হাসপাতালের ফিমেল মেডিক্যাল বিভাগের এক রোগিণীর অবস্থা সম্পর্কে তাঁর পরিজনেরা কর্তব্যরত চিকিৎসক শুভেন্দু বিশ্বাসকে কারও সঙ্গে ফোনে কথা বলতে অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি রাজি হননি। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) পুরুলিয়ার সম্পাদক অজিত মুর্মুর অভিযোগ, ‘‘শুভেন্দুবাবুর কাছে শুনেছি ফোনে কথা না বলার জন্য বিধায়ক হাসপাতালে এসে তাঁর সঙ্গে অত্যন্ত খারাপ আচরণ করেন। তাঁকে শারীরিক ভাবে নিগ্রহও করা হয়। তাই আমরা হাসপাতাল সুপারের কাছে ওই ঘটনায় বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি।’’
এই ঘটনার পরে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ছুটিতে চলে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। শুভেন্দুবাবু মঙ্গলবার মোবাইলে বলেন, ‘‘ওয়ার্ড মাস্টারের অফিসের সামনেই সব ঘটেছে। অনেকেই তা দেখেছেন। তা ছাড়া আমি যা জানানোর হাসপাতালের সুপারকে লিখিত ভাবেই জানিয়েছি। এ নিয়ে যা বলার, সুপারই বলবেন।’’
একমাস আগে পুরসভার অফিস থেকে চেকবই সরানোর অভিযোগে গ্রেফতার হন এই কংগ্রেস বিধায়ক। তখন তিন দিন পুলিশ হেফাজতে ছিলেন। নতুন করে ফের সুদীপবাবু বিতর্কে জড়িয়ে পড়ায় আসরে নেমে পড়েছেন তৃণমূল নেতাদের অনেকেই। এমন ঘটনার পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিধায়কের বিরুদ্ধে কেন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না, তা জানতে চেয়ে শাসক দলের কয়েকজন নেতা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে জানতে চাইছেন।
এ দিন হাসপাতাল সুপার শিবাশিস দাস বলেন, ‘‘চিকিৎসককে নিগ্রহের একটা ঘটনা ঘটেছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এখন এ নিয়ে আর কোনও মন্তব্য করব না।’’ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘বিধায়ক এক চিকিৎসকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন বলে আমি শুনেছি। আমি সুপার ও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিল দত্ত বলেন, ‘‘বিধি মোতাবেক যা ব্যবস্থা নেওয়ার, তা নেওয়া হবে।’’.
যদিও বিধায়ক সুদীপবাবুর দাবি, ‘‘আমার পরিচিত এক রোগিণী হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় আমি হাসপাতালে গিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করি। তিনি তথা বলেননি। রোগিণীকেও দেখেননি। সেই রোগিণীর মৃত্যু হল। এখন উল্টে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’’