Coronavirus

ভয় নয়, বলছেন করোনায় জয়ীরা

নীলমাধববাবুর চিকিৎসার জন্য মুম্বই গিয়েছিলেন আইটিআই পাশ করা ওই যুবক।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২০ ০১:৪৮
Share:

ছবি পিটিআই

সংক্রমণ রুখতে ভয় নয়, প্রয়োজন সর্তকতা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। তাহলেই কাবু করা সম্ভব বিশ্বজুড়ে ত্রাস সৃষ্টিকারী মারণ করোনাভাইরাসকে। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জেতার পর থেকে এমনটাই মনে করছেন দুবরাজপুরের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ গড়াই। শুধু তিনি নন, সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন তাঁর ক্যানসার আক্রান্ত বৃদ্ধ কাকু, নীলমাধব গড়াইও।

Advertisement

নীলমাধববাবুর চিকিৎসার জন্য মুম্বই গিয়েছিলেন আইটিআই পাশ করা ওই যুবক। তারপরই লকডাউন ঘোষণায় সেখানে আটকে পড়েন। দীর্ঘ সময় আটকে থাকার পর অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে ২৭ এপ্রিল দুবরাজপুরের গ্রামে ফিরে আসেন তাঁরা। তবে বাড়িতে থাকতে পারেননি তাঁরা। উভয়ের স্থান হয়েছিল বক্রেশ্বরের সরকারি নিভৃতবাসে। সেখানে ২ মে উভয়ের লালা রসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। করোনা ধরা পড়েছে বলে খবর আসে ৬ মে। প্রথমে উভয়েই ভর্তি ছিলেন বোলপুরে কোভিড হাসপাতালে। পরে নীলমাধববাবুকে বোলপুর থেকে দুর্গাপুরের বেসরকারি কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তার পরে মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই দু’জনে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। ওই পরিবারের বাকি ১১ সদস্যকে সরকারি নিভৃতবাসে রেখে প্রত্যেকের লালারসের নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল। সকলের রিপোর্টই নেগেটিভ এসেছে।

বিশ্বজিৎ বলছেন, ‘‘মুম্বই থেকে বীরভূমের দুবরাজপুর টানা বাইশশো কিমি পথ অতিক্রম করার ক্লান্তি ছিল ঠিকই, কিন্তু করোনার কোনও উপসর্গ ছিল না শরীরে। তাই সরকারি নিভৃতবাসে থাকাকালীন শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার খবরে খানিকটা মুষড়ে পড়েছিলাম। চিন্তা বাড়িয়েছিলেন আমার ক্যান্সার আক্রান্ত কাকু।’’ তবে এখন ভয়কে জয় করেছেন বিশ্বজিৎ। তিনি বলছেন, ‘‘হাসপাতালে কোনও সমস্যা হয় নি। আর কোনও অসুস্থতাও ধরা পড়ে নি। পাঁচ দিনের মাথায় কোভিড হাসপাতালে থেকে বাড়ি ফিরেছি।’’

Advertisement

তাঁদের সুস্থ হওয়ার খবরে খুশি গ্রামের বাসিন্দারাও। প্রথমে তাঁরাই অবশ্য বিশ্বজিৎ ও তাঁর কাকুকে গ্রামের বাড়িতে থাকতে দিতে আপত্তি জানান। তখন তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় সরকারি নিভৃতবাস কেন্দ্রে। সুস্থ হয়ে ফেরার পর গ্রামের বাসিন্দারাই তাঁদের খেয়াল রেখেছেন। বিশ্বজিৎ বলছেন, ‘‘আমরা দু’জনে যখন সুস্থ হয়ে ফিরি তখন আমাদের পরিবারের সদস্যরা সরকারি নিভৃতবাসে ছিলেন। সেই সময় আমাদের দুজনকে গ্রামর মানুষ রান্না করে খাইয়েছেন। যেটা খুব ভাল লেগেছে।’’

তাই অযথা আতঙ্কিত হতে না বলছেন বিশ্বজিৎ। তাঁর কথায়, ‘‘হাসপাতাল বলে দিয়েছে সর্বক্ষণ মাস্ক পরতে। দূরত্ব বিধি বজায় রেখে মিশতে। সমস্যা হলে হাসপাতালে ফোন করতে। সব নির্দেশ মেনে চলছি। সুস্থ হয়ে উঠার পর একটা কথাই বলতে ইচ্ছে করছে, করোনা মানেই মৃত্যু নয়। করোনাকে ভয় না পেয়ে বরং সতর্ক থাকা উচিত। আমার গ্রামের মানুষও সেটা বুঝেছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন