Visva-Bharati

৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ আশ্রম চত্বর

আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত সমস্ত পরীক্ষা বাতিলের একটি নির্দেশিকা শুক্রবার সন্ধ্যাতেই প্রকাশিত হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২০ ০৪:১৩
Share:

প্রতীকী ছবি

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেল বিশ্বভারতী। করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক ছিলই। শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে সমস্ত বিভাগ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা, পরীক্ষা ও যাবতীয় অনুষ্ঠান, কর্মশালা স্থগিত রাখা এবং ছাত্রাবাসগুলি খালি করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।

Advertisement

এ দিন বিশ্বভারতী সূত্রে জানানো হয়েছে, করোনা ভাইরাসের ক্রমবর্ধমান আতঙ্কে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত পাঠভবন এবং শিক্ষাসত্রের মাধ্যমিক পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। গত ১২ মার্চ থেকে এই স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। শেষ হওয়ার কথা ছিল ৩০ মার্চ। কিন্তু আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত সমস্ত পরীক্ষা বাতিলের একটি নির্দেশিকা শুক্রবার সন্ধ্যাতেই প্রকাশিত হয়। নির্দেশিকায় স্পষ্ট ভাবেই বলা হয়েছে, বর্তমানে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ যে হারে বেড়ে চলেছে, সেই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত পূর্বনির্ধারিত সমস্ত পরীক্ষা বাতিল করা হচ্ছে। ৩১ মার্চ কর্তৃপক্ষ আবার একটি আলোচনায় বসে পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করবেন।

এ দিন সন্ধ্যায় বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ভবনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, সমস্ত ভবনের অধ্যক্ষ, পরীক্ষা বিভাগের সদস্য, পিয়ারসন হাসপাতালের চিকিৎসক প্রতিনিধিরা। আলোচনার শেষে প্রথমে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় শুধুমাত্র মাধ্যমিক পরীক্ষা স্থগিতের কথা বলে। তার কিছুক্ষণ পরেই আরেকটি বিজ্ঞপ্তিতে ৩১ মার্চ পর্যন্ত বিশ্বভারতীর সমস্ত ভবনগুলিতেও পড়াশোনা বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়। পাঠভবন ছাত্রাবাস-সহ সমস্ত ছাত্রাবাসগুলি খালি করারও নির্দেশ জারি করা হয় এই বিজ্ঞপ্তিতে। পরবর্তী বিজ্ঞপ্তি না দেওয়া পর্যন্ত আবাসিকদের ছাত্রাবাসে না ফেরারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এই নিয়ম শুধুমাত্র দেশের পড়ুয়াদের জন্য প্রযোজ্য হবে। বিদেশ থেকে এখানে পড়তে আসা ছাত্র-ছাত্রীদের ছাত্রাবাস ছাড়তে হবে না বলেও জানানো হয়েছে। এমনকি, কেরালা, মহারাষ্ট্রের মতো যে সব রাজ্যে করোনার আতঙ্ক বেশি মাত্রায় ছড়িয়েছে, সেখানকার বাসিন্দা বিশ্বভারতীর আবাসিকরা এখন ফিরে যেতে না চাইলে তাঁদের থাকার ব্যবস্থাও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ করবেন বলে জানানো হয়েছে।

Advertisement

ইতিমধ্যেই নোভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ-এর আতঙ্কে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বসন্তোৎসব বাতিল করেছে এবং রবীন্দ্র ভবন, বাংলাদেশ ভবন-সহ রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি বিজড়িত যে বাড়িগুলি দেখতে পর্যটকদের ভিড় জমে সেগুলি বন্ধ রয়েছে। এ দিনের ঘোষণার পর অনির্দিষ্টকালের জন্য গোটা বিশ্বভারতীই বন্ধ হয়ে গেল।

এ দিকে, করোনাভাইরাসের আতঙ্কে ৮ মার্চ থেকে রবীন্দ্রভবনে সাধারণ পর্যটকের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ওই দিন থেকেই রবীন্দ্রভবনের কর্মীদের হাজিরার জন্য বায়োমেট্রিক পদ্ধতির ব্যবহার অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে। পরের বিজ্ঞপ্তি না আসা পর্যন্ত কর্মচারীদের হাজিরা খাতায় সই করেই কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে।

কর্মীরা যাতে ঠিক সময়ে উপস্থিত হন, তা নিশ্চিত করতে কয়েক বছর আগে চালু করা হয়েছিল বায়োমেট্রিক পদ্ধতি। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে ৮ মার্চ থেকে এই পদ্ধতি স্থগিত রয়েছে। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে রবীন্দ্রভবন সহ অন্য কার্যালয়গুলিতেও সেফটি মাস্ক এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার সরবরাহ করা হচ্ছে। কর্মীরা কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে খুশি। বিশ্বভারতীর পিয়ার্সন মেমোরিয়াল হাসপাতালেও করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রুখতে বিশেষ তৎপরতা দেখা গিয়েছে। হাসপাতালে আগে থেকেই একটি আইসোলেশন ওয়ার্ড ছিল। ওই ওয়ার্ডটিকে প্রয়োজন মতো সাজিয়ে তোলা হয়েছে।

বিশ্বভারতীর বিদ্যাভবন বয়েজ হস্টেল, নিউ বয়েজ হস্টেল, আম্রপালি গার্লস হস্টেলগুলিতে অনেক ছাত্র-ছাত্রী থাকেন। ওই হস্টেলগুলিতে বিশেষ সর্তকতা অবলম্বন করতে বলছেন চিকিৎসকেরা। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশিকা মতো, আবাসিকদের বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, হাঁচি-কাশির ক্ষেত্রে অন্যের থেকে দূরত্ব রেখে চলা এবং জ্বর বা ঠান্ডা লাগার ক্ষেত্রে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার

পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসক অনির্বাণ দাশগুপ্ত বলেন, “যেহেতু আমাদের এখানে এখনও সংক্রমণ ছড়ায়নি, তাই গুজব না ছড়িয়ে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই এখন সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন