নিয়ন্ত্রণে রয়েছে সংক্রমণ, দাবি
Coronavirus in West Bengal

বন্ধ হল দু’টি ‘সেফ হাউস’

শুক্রবার প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, রাজ্যে সুস্থতার হার ৯৩.৭৬ শতাংশ। পুরুলিয়ার ক্ষেত্রে সেই হার ৯৬.৪ শতাংশ বলে জানান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্ত।

Advertisement

প্রশান্ত পাল

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:৪৮
Share:

পুরুলিয়ার এই যুব আবাসে চলছিল ‘সেফ হাউস’। নিজস্ব চিত্র।

পুরুলিয়া শহর ও রঘুনাথপুরের ‘সেফ হাউস’ বন্ধ করে দিল জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলাশাসক (‌জেলা পরিষদ) আকাঙক্ষা ভাস্কর জানান, ইদানীং সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসায় শনিবার ‘সেফ হাউস’ দু’টি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, পুরুলিয়া শহরের যুব আবাসের ‘সেফ হাউস’-এ গত তিন সপ্তাহে কোনও আক্রান্তকে আনার দরকার পড়েনি। রঘুনাথপুরের জয়চণ্ডীপাহাড়ের যুব আবাসেরটিতে গত সপ্তাহে মোট দু’জনকে রাখতে হয়েছিল। শুক্রবার তাঁরা ছাড়া পেয়েছেন।

Advertisement

করোনা আক্রান্ত যে সমস্ত মানুষজনের ‘হোম আইসোলেশন’-এ থাকার মতো পরিকাঠামো নেই, তাঁদের কথা ভেবে চালু হয়েছিল ‘সেফ হাউস’। এত দিন পুরুলিয়া জেলায় তিনটি ‘সেফ হাউস’ চলছিল। তার মধ্যে এখনও চালু রয়েছে শুধু পুরুলিয়া শহরের একটি নার্সিংহোমেরটি। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বেশ কিছু দিন ধরে ‘সেফ হাউস’গুলি কার্যত ফাঁকাই পড়ে রয়েছে। এ দিকে, প্রতিটি ‘সেফ হাউস’-এর জন্য অন্তত চার-পাঁচ জন করে চিকিৎসক রাখতে হচ্ছে। ব্যবস্থা থাকছে ২৪ ঘণ্টার অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবার। তিনটি ‘শিফট’-এ কাজ করছেন কর্মীরা। জেলায় চিকিৎসকের ঘাটতির মধ্যে এখন তিনটি ‘সেফ হাউস’ চালু রাখার দরকার নেই বলেই মনে করছেন স্বাস্থ্য-কর্তারা।

পুজো এবং কালীপুজোর পরে, সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কায় পরিকাঠামো তৈরি করে রেখেছিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। পুরুলিয়ার স্বাস্থ্য-কর্তারা জানাচ্ছেন, ভিড়ের পরে দু’সপ্তাহ পার হলে সংক্রমণ সম্পর্কে এক প্রকার আন্দাজ পাওয়া যায়। কালীপুজোর পরেও প্রায় এক মাস হতে চলেছে। কিন্তু পুরুলিয়ায় সংক্রমণের হার এখনও পর্যন্ত মাত্রা ছাড়ায়নি বলেই জানাচ্ছেন তাঁরা। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত পুরুলিয়ায় দু’লক্ষেরও বেশি মানুষের লালারসের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলায় আক্রান্তের মোট সংখ্যা ৬,৪৩৫। তাঁদের মধ্যে সেরে উঠেছেন ৬,১৩২ জন। শুক্রবার প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, রাজ্যে সুস্থতার হার ৯৩.৭৬ শতাংশ। পুরুলিয়ার ক্ষেত্রে সেই হার ৯৬.৪ শতাংশ বলে জানান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্ত।

Advertisement

পুরুলিয়া শহরের সাউথ লেক রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতাল ভাড়ায় নিয়ে জেলার কোভিড হাসপাতাল চলছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, শনিবার পর্যন্ত সেখানে ভর্তি রয়েছেন ১৬ জন। চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে হাসপাতালটি হাতোয়াড়ায় দেবেন মাহাতো মেডিক্যাল কলেজের নতুন ক্যাম্পাসে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্ত বলেন, ‘‘পরে নার্সিংহোম থেকে সেফ হাউসটিকেও সরিয়ে হাতোয়াড়ায় নিয়ে যাওয়া হবে। বন্ধ হয়ে যাওয়া সেফ হাউসের চিকিৎসকদেরও পাঠানো হবে সেখানে।’’ সংক্রমণের হার কমলেও অনেকের মাস্ক পরায় অনিহা চিন্তায় ফেলেছে স্বাস্থকর্তাদের। অনিলকুমারবাবু বলেন, ‘‘অনেককেই দেখছি, বাইরে বেরোলে বা ভিড়ের মধ্যে আর মাস্ক পরছেন না। এই বিলাসিতার কিন্তু কোনও জায়গা নেই। সংক্রমণের হার ফের উর্ধ্বমুখী হবে কি না, তা নির্ভর করছে নিজেদের সতর্কতার উপরেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন