Coronavirus in West Bengal

সংক্রমণ কমলেও সতর্কতা

সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলার মাত্র একটি সেফ হাউসে দু’জন ও বাঁকুড়া স্বাস্থ্য জেলার একটি সেফ হাউসে ন’জন রোগী রয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ ০১:৪৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

বাঁকুড়া জেলায় করোনা সংক্রমণের ঢেউ আছড়ে পড়েছিল বছরের মাঝামাঝি সময়ে। তবে নতুন বছর শুরুর আগে পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে—জেলার সেফ হাউস ও করোনা হাসপাতালের তথ্য দিয়ে এমনটাই দাবি করছে জেলা প্রশাসন। তবে একই সঙ্গে মনে করিয়ে দেওয়া হচ্ছে, করোনা মোকাবিলায় সতর্কতা অবলম্বনে কোনও রকম ঢিলেমি দেওয়া যাবে না।

Advertisement

বাঁকুড়া জেলা কয়েক মাস ‘গ্রিন জ়োন’ থাকলেও পরিযায়ী শ্রমিকদের আনাগোনা শুরু হওয়ার পর থেকে করোনা রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে শুরু করে। পরের কয়েক মাসে যা ব্যাপক আকার ধারণ করে। বাঁকুড়া জেলার একমাত্র করোনা হাসপাতাল ওন্দা সুপার স্পেশালিটির উপরে রোগীর চাপ কমাতে তখনই উপসর্গহীন করোনা রোগীদের জন্য জেলায় সেফ হাউস খোলা হয়।

প্রশাসন সূত্রে খবর, বাঁকুড়া জেলায় মোট ২৪টি সেফ হাউস খোলা হয়েছিল। বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলায় ১৭টি ও বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলায় সাতটি সেফ হাউস খোলা হয়। মূলত কর্মতীর্থ বা সরকারি অতিথিশালা, কমিউনিটি হলেই সেফ হাউসগুলি খোলা হয়েছিল। বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলার সেফ হাউসগুলিতে এখনও পর্যন্ত মোট ৬,০৭০ জন ও বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলার সেফ হাউসগুলিতে ১, ৩৩৫ জন রোগীকে ভর্তি রেখে পরিষেবা দেওয়া হয়েছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে অধিকাংশ সেফ হাউসই রোগী-শূন্য। সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলার মাত্র একটি সেফ হাউসে দু’জন ও বাঁকুড়া স্বাস্থ্য জেলার একটি সেফ হাউসে ন’জন রোগী রয়েছেন।

Advertisement

করোনা হাসপাতাল ওন্দা সুপার স্পেশালিটিতেও রোগী ভর্তি কয়েকগুণ কমে গিয়েছে। ওই হাসপাতাল সূত্রে জানা যাচ্ছে, হাসপাতালের ২৫০টি শয্যা থাকলেও এই মুহূর্তে সেখানে মেরেকেটে ২৫ জন করোনা আক্রান্ত রোগী ভর্তি রয়েছেন।

বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলার এক কর্তার কথায়, ‘‘পুজো মরসুমের সপ্তাহখানেক পর থেকেই বাঁকুড়ায় করোনা সংক্রমণের হার নীচের দিকে নামতে শুরু করেছে।’’ স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, বাঁকুড়া জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১১,৩৩৯ জনের আশাপাশে। যাঁদের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১০,৮৭৫ জন। মৃত্যু হয়েছে ৯০ জনের।

বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সরেন জানান, দৈনিক আরটিপিসিআর যন্ত্রে ও র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন কিট টেস্টে গড়ে এক হাজারের বেশি মানুষের করোনা পরীক্ষা করানো হচ্ছে। দৈনিক রোগী চিহ্নিত হওয়ার গড়ও জেলায় নেমে এসেছে অনেকটাই। শ্যামলবাবু বলেন, “করোনা সচেতন মানুষের সংখ্যা জেলায় বাড়ছে, এ নিয়ে সন্দেহ নেই। তাতেই রোগ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে।’’ একই সঙ্গে স্বাস্থ্য-কর্তারা জানাচ্ছেন, দূরত্ব বিধি মেনে চলা, মাস্ক পরা ও পরিচ্ছন্ন থাকার বিকল্প নেই। এতে আলগা দিলেই নিজের ও প্রিয়জনদের বিপদের সম্ভাবনা রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে সেফ হাউসগুলি চালানো হবে কি না, তা নিয়েও জল্পনা দানা বাধছে বিভিন্ন মহলে। বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (‌জেলা পরিষদ) রাজু মিশ্র বলেন, “সেফ হাউস বন্ধ করে দেওয়ার কোনও নির্দেশিকা আমাদের কাছে নেই। আমরা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছি। সমস্ত সেফ হাউসেই রোগী ভর্তি করে রাখার মতো পরিকাঠামো তৈরি রয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন