গাড়ির ধাক্কায় দম্পতির মৃত্যু

এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, ওই গাড়ির আরোহীরা জানান কলকাতায় তৃণমূলের সমাবেশে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন তাঁরা। স্থানীয়রাই আহত তিন জনকে নিয়ে যান বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গলসি শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৮ ০৭:৩০
Share:

কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিজনেরা। —নিজস্ব চিত্র।

অসুস্থ আত্মীয়কে দেখতে মোটরবাইকে পুরসায় যাচ্ছিলেন দম্পতি। সঙ্গে ছিল কোলঘেঁষা নাতনিটাও। দু’নম্বর জাতীয় সড়কের উপর গলসির পারাজ স্টেশন মোড়ে আচমকা তাঁদের পিছনে ধাক্কা মারে একটি গাড়ি। পিছনের চাকা খুলে, বাইক উল্টে ঘটনাস্থলেই মারা যান ওই দম্পতি দেলোয়ার শেখ (৫৫) ও তাঁর স্ত্রী পিয়ারি বেগম (৪৫)। গুরুতর আহত শিশুটিও।

Advertisement

ঘটনার পরপরই ওই গাড়িটি আটকে দেন স্থানীয় মানুষজন। দু’জন পালিয়ে গেলেও ছ’জনকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, ওই গাড়িতে করে কলকাতায় শহিদ দিবসের সমাবেশে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন আট জন। প্রত্যেকেই মদ্যপ ছিল বলেও স্থানীয় লোকজনের দাবি। পুলিশ জানিয়েছে, চালককে আটক করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে গাড়িটিকেও।

পুলিশ জানিয়েছে, আউশগ্রাম থানার কুলটি-রানিগঞ্জের বাসিন্দা ওই দম্পতি। এ দিন সকালে পুরসায় শ্বশুরবাড়িতে যাচ্ছিলেন তাঁরা। পারাজ স্টেশন মোড়ে সেই সময় কলকাতাগামী পণ্যবোঝাই একটি ট্রাক আটক করে তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিশ। ট্রাকের পিছনেই ছিল দুর্গাপুরের ওয়ারিয়া থেকে আসা গাড়িটি। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ট্রাকটিকে পুলিশ ধরতেই জোরে পাশ কাটিয়ে বেরোতে গিয়ে সোজা বাইকে ধাক্কা মারে গাড়িটি। তিন জনেই ছিটকে পড়েন বাইক থেকে। গাড়ির দুই আরোহী পালিয়ে গেলেও চালক-সহ ছ’জনকে ধরে ফেলেন স্থানীয়রা। তাঁদের মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, ওই গাড়ির আরোহীরা জানান কলকাতায় তৃণমূলের সমাবেশে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন তাঁরা। স্থানীয়রাই আহত তিন জনকে নিয়ে যান বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। সেখানেই দেলোয়ারকে মৃত বলে জানান চিকিৎসকেরা। হাসপাতালে যান গলসি থানার ওসি রাকেশ সিং। পোতনা-পুরসা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিদায়ী সদস্য সালাম মণ্ডল বলেন, “ওই গাড়ির চালক-সহ গাড়ির প্রত্যেক আরহীই মদ্যপ ছিল।”

Advertisement

পিয়ারি বেগমের ভাই ঝন্টু শেখ বলেন, ‘‘ওমরপুরের আমার ছোট বোনের জামাই অসুস্থ। আমাদের বাড়ি থেকে দিদি-জামাইবাবুর ওখানে যাওয়ার কথা ছিল। এমনটা হবে ভাবতে পারিনি।” আহত বছর চারেকের শিশু রাজকুমারির চিকিৎসা চলছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের সুপার স্পেশালিটি শাখা অনাময়ের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে। রাজকুমারির মা মিলি বেগম বলেন, ‘‘মেয়ে জন্মের পর থেকেই মায়ের কাছেই থাকত। মা-বাবা যেখানে যেত সেখানে যেত। এমন বিপদ হবে বুঝতে পারিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন