প্রৌঢ় দম্পতির দেহ উদ্ধারে ধন্দ নলহাটিতে

নলহাটি থানার জুঙ্গুল গ্রামের শুক্রবার সকালের ঘটনা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, সন্দেহবশত স্ত্রী চায়না মালকে (৪৮) শ্বাসরোধ করে খুনের পরে আত্মঘাতী হয়েছেন রামপ্রসাদ পাল (৫৩)। তবে পুলিশের কাছে রাত পর্যন্ত অভিযোগ হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নলহাটি শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৫৭
Share:

—প্রতীকী ছবি।

গোয়ালঘরে ঝুলছে স্বামীর দেহ। সংলগ্ন শোওয়ার ঘরে পড়ে রয়েছে স্ত্রী-র নিথর দেহ! নলহাটি থানার জুঙ্গুল গ্রামের শুক্রবার সকালের ঘটনা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, সন্দেহবশত স্ত্রী চায়না মালকে (৪৮) শ্বাসরোধ করে খুনের পরে আত্মঘাতী হয়েছেন রামপ্রসাদ পাল (৫৩)। তবে পুলিশের কাছে রাত পর্যন্ত অভিযোগ হয়নি।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জুঙ্গুল গ্রামের দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা পেশায় দিনমজুর রামপ্রসাদ ও স্ত্রী চায়নাদেবীর সঙ্গে মাটির বাড়ির একটি ঘরে থাকতেন। তাঁদের একমাত্র মেয়ে সুমতি মালের দীর্ঘ দিন আগেই বিয়ে হয়েছে। সুমতি আবার তাঁর স্বামী বিধান মাল ও তিন মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়ির পিছনেই আর একটি বাড়িতে থাকতেন। মেয়ের কাছেই দুপুরের খাবার খেতেন রামপ্রসাদ ও চায়না। রাতে মেয়ের বাড়ি থেকে খাবার এনে বাড়িতেই খাওয়া-দাওয়া করতেন তাঁরা।

মেয়ে সুমতির কথায়, ‘‘টুকটাক নানা বিষয়ে বাবা-মায়ের মধ্যে প্রায় রাতেই ঝগড়া হত। কেন ঝগড়া, জানতে চাইলে সেটা আবার পছন্দ করত না। বুঝতে পারতাম, বাবা আসলে মাকে সন্দেহ করে। আমার মনে হয় সেই জন্যই মাকে মেরে আত্মঘাতী হয়েছে বাবা।’’ পুলিশেরও ধারণা, তৃতীয় কারও পক্ষে বাড়িতে এসে একেবারে নিঃশব্দে দু’জনকে মেরে চলে যাওয়া অসম্ভব। কেননা, পাশাপাশি বাড়ি রয়েছে। কিন্তু, কেউ কিছুই টের পায়নি। সুমতিরও দাবি, ‘‘একেবারে কাছেই থাকলেও কোনও কিছুই বুঝিনি। বৃহস্পতিবার রাতে খাবার দেওয়ার সময়েও সন্দেহজনক কিছু মনে হয়নি।’’

Advertisement

পুলিশের কাছে সুমতিরা জানিয়েছেন, শুক্রবার ভোরে শ্বশুর-শাশুড়ির দেহ প্রথম দেখে জামাই বিধান মাল। বিধানের কথায়, ‘‘শ্বশুর বাড়ির গোয়াল ঘর থেকে অন্য দিনের মতো গরু বের করতে যাই। তখনই দেখি গোয়ালের ঘরে শ্বশুরের টর্চ পড়ে রয়েছে। তারপরই ছাউনির দিকে নজর ফেরাতে দেখি কড়ি-বড়গার সঙ্গে গামছার ফাঁস লাগিয়ে শ্বশুরের দেহ ঝুলছে। গোয়াল ঘর থেকে বেরিয়ে শাশুড়ি ঘরে গিয়ে দেখি বিছানায় পড়ে রয়েছে শাশুড়ির দেহও।’’

জোড়া-মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় গ্রামে। ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়তেই গ্রামের লোকজন জড়ো হতে থাকেন। পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে দেহ ময়না-তদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়। দীর্ঘ ক্ষণ জেরা করা হয়েছে সুমতি ও বিধান মালকেও। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, সব সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কাউকেই রেয়াত করা হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন