রঘুনাথপুরে কাটল জট

কাজ বন্ধ করে আন্দোলন নয়, জানাল প্রশাসন

প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের পরেই অচলাবস্থা কাটল রঘুনাথপুরের অ্যাসবেস্টস তৈরির কারখনায়। আজ, শুক্রবার থেকেই কাজ শুরু হওয়ার কথা কারখানায়। মজুরি নিয়ে মালিকপক্ষ ও শ্রমিকদের মধ্যে তৈরি হওয়া বিরোধ মেটাতে বৃহস্পতিবার রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়। উপস্থিত ছিলেন কারখানা কর্তৃপক্ষ, কারখানায় তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা, রঘুনাথপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অজয় সেনগুপ্ত, রঘুনাথপুরের সহকারী শ্রম কমিশনার সবুজকুমার ঢালি এবং রঘুনাথপুর থানার ওসি দীপঙ্কর সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৫ ০২:০৮
Share:

প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের পরেই অচলাবস্থা কাটল রঘুনাথপুরের অ্যাসবেস্টস তৈরির কারখনায়। আজ, শুক্রবার থেকেই কাজ শুরু হওয়ার কথা কারখানায়। মজুরি নিয়ে মালিকপক্ষ ও শ্রমিকদের মধ্যে তৈরি হওয়া বিরোধ মেটাতে বৃহস্পতিবার রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়। উপস্থিত ছিলেন কারখানা কর্তৃপক্ষ, কারখানায় তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা, রঘুনাথপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অজয় সেনগুপ্ত, রঘুনাথপুরের সহকারী শ্রম কমিশনার সবুজকুমার ঢালি এবং রঘুনাথপুর থানার ওসি দীপঙ্কর সরকার।

Advertisement

বৈঠকে প্রশাসনের তরফে কারখানা কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, মজুরি নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলুক তাঁরা। আর শ্রমিক সংগঠনকে প্রশাসন জানিয়েছে, কর্মবিরতি উঠিয়ে কাজ চালু রেখে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে। বস্তুত, এ রাজ্যের শিল্প মানচিত্রে রঘুনাথপুরকে তুলে ধরতে যেখানে উদ্যোগী হচ্ছে রাজ্য সরকার, সেখানে এ ভাবে কাজ বন্ধ করে কারখানায় আন্দোলন বরদাস্ত করা হবে না—এই মর্মে বৈঠকে শ্রমিক সংগঠনকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে প্রশাসন। আগামী ৩ জুন ফের মালিকপক্ষ ও শ্রমিকদের নিয়ে আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারখানার জেনারেল ম্যানেজার বি কে সিংহ এ দিন বিকেলে বলেন, ‘‘এ দিন ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। আশা করছি, শুক্রবার থেকে কারখানায় ফের কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।’’

রঘুনাথপুর ২ ব্লকের মূলডি গ্রামে ‘বালমুকুন্দ সিমেন্ট অ্যান্ড রুফিং ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমি়টেড’ নামের ওই কারখানায় গত চার দিন ধরে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে ঠিকা শ্রমিকদের কর্মবিরতির জেরে। মাসে চার দিন সবেতন ছুটির দাবিতে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বে কর্মবিরতি শুরু করেছিলেন ১০৬ জন ঠিকা শ্রমিক। মঙ্গলবার রঘুনাথপুরে শ্রম দফতরে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হলেও মালিকপক্ষ অনুপস্থিত থাকায় আলোচনা হয়নি। এ দিন অবশ্য মালিকপক্ষ এসেছিল। বেলা ১১টা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টা মহকুমাশাসকের দফতরে আলোচনা হয়। আলোচনার শুরুতেই প্রশাসন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের পুরুলিয়ার সভাপতি প্রফুল্ল মাহাতোকে জানিয়ে দেয়, তাঁদের সংগঠনের সমর্থক শ্রমিকদের কর্মবিরতির জেরে কারখানায় উৎপাদন বন্ধের ঘটনা কখনওই সমর্থনযোগ্য নয়।

Advertisement

এ ক্ষেত্রে প্রশাসনের ব্যাখ্যা, রঘুনাথপুরের শিল্পায়ন নিয়ে যেখানে বিশেষ উদ্যোগী রাজ্য সরকার, সে ক্ষেত্রে শাসকদলেরই শ্রমিক সংগঠনের আন্দোলনে কারখানায় কাজ বন্ধের ঘটনা সমর্থনযোগ্য নয়। এবং তা নানা নহলে প্রশ্ন তুলেছে। পাশাপাশি শ্রমিকেরাও যাতে ‘ন্যায্য’ মজুরি থেকে বঞ্চিত না হন, তা নিশ্চিত করতে বলা হয় কারখানা কর্তৃপক্ষকে। প্রফুল্লবাবু পরে বলেন, ‘‘ঠিকা শ্রমিকদের একাংশ বিক্ষিপ্ত ভাবে আগাম নোটিস না দিয়ে কারখানায় কর্মবিরতি শুরু করেছিল। এটা ভুল হয়েছে। আমরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিয়েছি।’’

আলোচনায় আরও সিদ্ধান্ত হয়েছে, মাসে চার দিন যে সবেতন ছুটির দাবি তুলেছেন শ্রমিকেরা, তা নিয়ে দু’পক্ষই ইতিবাচক মনোভাবে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করুক। আপাতত শ্রমিকরা ২৬ দিনের মজুরি নেবেন। পরবর্তী সময়ে বাকি চার দিনের মজুরি নিয়ে আলোচনা হবে। ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অজয়বাবু বলেন, ‘‘সিমেন্ট কারখানার মতো শিল্পে শ্রমিকদের মজুরি নিয়ে শ্রম আইনে কী ধরনের নির্দেশ রয়েছে, তা বিশদে জানানো হয়েছে দুই পক্ষকে। ওঁরা সেই মতো নিজেদের মধ্যে আলোচনা করবেন। কিন্তু কোনও অবস্থায় কারখানা বন্ধ হওয়ার ঘটনা মানা হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement