ক্ষোভ: রবিবার সন্ধ্যায় বিষ্ণুপুর বাইপাসে। নিজস্ব চিত্র
প্রাক্তন মন্ত্রী সদলবলে বিনা হেলমেটে মোটরবাইকে মিছিল করে রাস্তায় ঘুরছেন। এই অভিযোগ তুলে তাঁরাও কেন বিনা হেলমেটে ঘুরবেন না, প্রশ্ন তুললেন বিষ্ণুপুরের বাসিন্দাদের একাংশ। ছুটির দিনে সন্ধ্যায় বিষ্ণুপুর বাইপাসে বসে পড়ে অবরোধও করলেন তাঁরা। পুলিশ এলে সেই প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভ চলল অনেক রাত পর্যন্ত।
শনিবারই বড়জোড়ায় হেলমেট পরবেন না বলে দাবি করে বাসিন্দারা অবরোধ করেছিলেন। তার পরের দিনই বিষ্ণুপুরে এমন কাণ্ড ঘটবে তা কেউ আঁচ করতে পারেননি। এ দিন সন্ধ্যায় প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিষ্ণুপুরের তৃণমূল পুরপ্রধান শ্যাম মুখোপাধ্যায় সঙ্গীদের নিয়ে মোটরবাইকে চড়ে দ্বারিকায় সভা করতে যাচ্ছিলেন। বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাঁদের কারও মাথায় হেলমেট ছিল না। অথচ পথ নিরাপত্তার নামে পুলিশ বিনা হেলমেটের যাত্রীদের নাকাল করছে বলে অভিযোগ। গত তিন দিন ধরে ওই এলাকার ভগৎ সিং মোড়ে রীতিমতো ঘাঁটি গেঁড়ে পুলিশ বিনা হেলমেটের মোটরবাইক সওয়ারীদের আটকে ধমক-ধামক দিচ্ছে, জরিমানা করছে। পুলিশের এই কড়াকড়ি অনেকেই ভাল ভাবে নেয়নি। যদিও যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থেই পুলিশ এই কাজ করছে। কিন্তু অনেকের অভিযোগ, বাড়াবাড়িও করছে পুলিশ।
সেই ক্ষোভই এ দিন উস্কে দেয় শ্যামবাবুদের হেলমেট বিহীন বাইক-মিছিল। সাধারণ মানুষরা ওই রাস্তায় জড়ো হয়ে বসে পড়েন সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ। পুলিশ এলে তাঁরা ঘিরে ধরে প্রশ্ন তোলেন— ‘‘আইন তো সবার জন্যই এক। তাহলে নেতা-কর্মীদের ছাড় দেওয়া হচ্ছে কোন যুক্তিতে।’’ পুলিশ তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু কাজ হয়নি। তাঁরা দাবি করেন, সেখানে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক বা পুলিশ সুপারকে সেখানে এসে জবাব দিতে হবে। চৌমাথায় এই অবরোধের জেরে ওই রাস্তার উপরে অনেক গাড়ি আটকে যায়। যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় বিষ্ণুপুর-সোনামুখী ও বাঁকুড়া-আরামবাগ রাস্তায়।
দল সূত্রে খবর, শ্যামবাবুর কানে অবরোধের খবর যাওয়ার পরে তাঁরা আর দ্বারিকায় সভা করেননি। অন্য রাস্তা দিয়ে তাঁরা বিষ্ণুপুরে ফিরে আসেন। ফোন করা হলেও শ্যামবাবু তা ধরেননি। উপপুরপ্রধান তৃণমূলের বুদ্ধদেব মুখোপাধ্যায় অবশ্য অবরোধকারীদের সমর্থন করে বলেন, ‘‘আইন সবার জন্যই সমান। যদি অন্যায় করে থাকে কেউ, তাঁদের জরিমানা দেওয়া উচিত।’’ পুলিশের কর্তারাও কেউ ফোন ধরেননি। অনেক রাত পর্যন্ত অবরোধ চলে।