আশ্বাস দিলেন বনমন্ত্রী

জয়চণ্ডীতে তৈরি হবে ইকো পার্ক

জমির ব্যবস্থা পুরসভা বা জেলা পরিষদ করে দিলে রঘুনাথপুরে ইকো পার্ক তৈরি করবে বন দফতর। বনবান্ধব উৎসবে এসে শনিবার এ কথা ঘোষণা করলেন বন দফতরের মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৮ ০২:২১
Share:

নিসর্গ: রঘুনাথপুরের জয়চণ্ডী পাহাড়। ফাইল চিত্র

জমির ব্যবস্থা পুরসভা বা জেলা পরিষদ করে দিলে রঘুনাথপুরে ইকো পার্ক তৈরি করবে বন দফতর। বনবান্ধব উৎসবে এসে শনিবার এ কথা ঘোষণা করলেন বন দফতরের মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন।

Advertisement

রঘুনাথপুর কলেজের মাঠে বনবান্ধব উৎসব ছিল। বনমন্ত্রী ছাড়াও ছিলেন বন দফতরের প্রধান মুখ্য বনপাল (সমগ্র বনপাল শীর্ষ) নরেন্দ্রকুমার পান্ডে, জেলা পরিষদের সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো, রঘুনাথপুরের বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরি, রঘুনাথপুরের পুরপ্রধান ভবেশ চট্টোপাধ্যায়, অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) উত্তমকুমার অধিকারী-সহ জেলা পরিষদের তিন কর্মাধ্যক্ষ হলধর মাহাতো, অনাথবন্ধু মাজি, হাজারি বাউরি প্রমুখ। অনুষ্ঠানের মঞ্চেই বিধায়ক পূর্ণবাবু বনমন্ত্রীর কাছে রঘুনাথপুর এলাকায় একটি পার্ক তৈরির জন্য আবেদন জানান।

বস্তুত, রঘুনাথপুরের এক প্রান্তে জয়চণ্ডী পাহাড় এলাকায় আধুনিক পার্ক নিয়ে আক্ষেপ দীর্ঘদিনের। এই পাহাড় ঘিরে পর্যটনের বিকাশ হওয়ায় এ বার পার্ক তৈরির দাবি আরও জোরাল হয়ে উঠেছে। কিন্তু আর্থিক সঙ্গতির অভাবে পুরসভা বা পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষে বড় মাপের পার্ক তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রশাসনের তরফেও পার্ক তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তহবিল না পাওয়ায় সেই উদ্যোগও বাস্তবায়িত হয়নি।

Advertisement

তার পরিপ্রেক্ষিতেই এ দিন মঞ্চে প্রথমে পূর্ণচন্দ্রবাবু পরে পুরপ্রধান ভবেশ চট্টোপাধ্যায় বনমন্ত্রীর কাছে পার্ক তৈরির বিষয়ে আবেদন জানান। তাঁরা দু’জনেই বলেন, ‘‘রঘুনাথপুরে ইকো পার্ক তৈরি করা প্রয়োজন। আমরা বনমন্ত্রীকে এই প্রস্তাব দিয়েছি। তিনি রাজি আছেন।

পরে বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণবাবু বলেন, ‘‘বিধায়ক ও পুরপ্রধান পার্ক তৈরির জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন। আমি প্রধান মুখ্য বনপালকে বিষয়টি দেখতে বলেছি। জমির ব্যবস্থা বিধায়ক ও পুরপ্রধান করে দিলে পার্ক আমরা অবশ্যই তৈরি করে দেব।” অনুষ্ঠানের পরে প্রধান মুখ্য বনপাল নরেন্দ্রকুমার পান্ডের সাথে পার্কের বিষয়ে একপ্রস্থ আলোচনা সেরেছেন বিধায়ক ও পু্রপ্রধান। জয়চণ্ডী পাহাড় লাগায়ো এলাকায় পুরসভা ও পঞ্চায়েতের হাতে পর্যাপ্ত জমি রয়েছে। তাই পার্ক তৈরির জন্য যে জমির সমস্যা হবে না, সে কথা প্রধান মুখ্য বনপালকে জানানো হয়েছে। প্রধান মুখ্য বনপাল বলেন, ‘‘জয়চণ্ডী পাহাড়ের কাছে জমি আছে বলে আমাকে জানানো হয়েছে। জমির ব্যবস্থা পুরসভা বা প্রশাসন করে দিলে বন দফতরের পার্ক তৈরি করতে কোনও সমস্যা নেই।”

এ দিন বনবান্ধব উৎসবে প্রধান মুখ্য বনপাল থেকে শুরু করে বনমন্ত্রী, সভাধিপতি, বিধায়ক সকলেই গাছ বাঁচানোর উপরে বিশেষ জোর দিয়েছেন। পরিসংখ্যান দিয়ে প্রধান মুখ্য বনপাল দাবি করেছেন, ‘‘রাজ্যের এই দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে গত আড়াই দশকে জঙ্গলের তেমন ঘনত্ব ছিল না। কিন্তু গত কয়েক বছরে জঙ্গলের ঘনত্ব অনেকটাই বেড়েছে।’’ গড়পঞ্চকোট পাহাড়ের জঙ্গলের উদারহণ টেনে প্রধান মুখ্য বনপাল জানান, জঙ্গল যেমন বাড়ছে। তেমনই বাড়ছে বন্যপ্রাণের সংখ্যাও।

পরে বনমন্ত্রী বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের সমীক্ষা অনুযায়ী আমাদের রাজ্যে গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য হারে জঙ্গলের পরিমাণ বেড়েছে।” রাজ্যে বর্তমানে ১৮ শতাংশ জঙ্গল আছে। বন দফতর এর পরিমাণ ৩২ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে বলে জানান বনমন্ত্রী।

এ দিনের অনুষ্ঠানে বন কমিটি তথা জেএফএমসি-র হাতে জঙ্গলের গাছ কেটে পাওয়া অর্থের চল্লিশ শতাংশ অর্থ হিসাবে ৩৯ লক্ষ ৫৮ হাজার টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়। দুই সদ্যোজাতের পরিবারকে সবুজশ্রী প্রকল্পে দামি গাছের চারা দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন