রবিবার রামপুরহাটের একটি বড় বিপণিতে তোলা নিজস্ব চিত্র।
দেশবন্ধু রোডে ফি বছর পুজোর আগে শেষ রবিবার পা রাখাই দায় হত। চলকে যাওয়া ভিড়ই ছিল শেষ বেলার কেনাকাটির চিরচেনা ছবি। রামপুরহাট শহর ও সংলগ্ন এলাকার পুজোবাজারে সেই ভিড় ছবিটাই এ বার গায়েব কাপড় পট্টি থেকে! ভিড় আছে রাস্তায়। থমকে যাওয়া মোড়ে। নতুন কাপড়ের দোকানের ভিতরে। রামপুরহাট বস্ত্র ব্যবসায়ী সংগঠনের অবশ্য দাবি, পুরনো দোকানের ব্যবসা ঠিকই আছে।
‘‘অন্য বছর পুজোর আগে শেষ রবিবার বাজার করতে এসে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পা ব্যথা করত। হাটতলার কাপড়ের দোকানগুলিতেও সেই ভিড় নেই। সেই গাদাগাদি ভিড়ের বাজারটাই যেন কোথায় উধাও হয়ে গিয়েছে।’’ বলছিলেন তারাপীঠের গ্রাম থেকে রবিবার সপিরবারে বাজার করতে আসা এক ব্যক্তি।
রামপুরহাট সানঘাটাপাড়া মোড় সংলগ্ন দু’টি বড় কাপড়ের দোকান এ বছর চালু হয়েছে। তার মধ্যে একটি দোকানে ছোটদের জুতো, পুরুষ ও মহিলাদের স্টেশনারি দ্রব্য পাওয়া যাচ্ছে। চলতি বছরের ১৮ মার্চ ওই দোকানটি এলাকায় খোলা হয়েছিল। এ দিন দোকানে দেখা গেল, রামপুরহাট ছাড়াও নলহাটি, মল্লারপুর, তারাপীঠ এলাকার ক্রেতারা ভিড় করেছেন।
দোকানে ঢোকার মুখে রামপুরহাটের বাসিন্দা পিয়ালি সিংহ ও অঞ্জনা রায় নামে দু’জন বধূ জানালেন, ‘‘এ বার পুজোর বাজার এখান থেকেই করেছি। বড় জায়গা, নেড়ে চেড়ে দেখেশুনে নিতে পারছি।” ইকবাল আহমেদ, দেবনারায়ণ মণ্ডল, পবন ঘোষ, পিন্টু চট্টোপাধ্যায় নামে রামপুরহাট মহকুমার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ক্রেতারা জানালেন, নতুন দোকানে কাপড় ঢালা রয়েছে। পছন্দ না হলে বেরিয়ে যেতে বাধা নেই। কিন্তু চেনা দোকানগুলিতে পছন্দ না হলেও চক্ষুলজ্জার খাতিরে কিছু না কিছু কিনতে হয়। সাবেক দোকানে ভিড় কম হওয়ার কারণ বোধহয় সেটাও।”
সকলেই যে বড় দোকান থেকে কাপড় কিনছেন, তেমন নয়। অনেকেই নতুন দোকান ঘুরে এসে কাপড় কিনছেন পাড়ার দোকানেই। রবিবার ভিড় কম থাকলেও ভিড় যে একেবারেই হচ্ছে না, তেমন বলছেন না সব বিক্রেতারা। এ দিন সুদীপ মণ্ডল নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘‘নতুন দোকানগুলিতে এখনও যায়নি। শুনেছি ভিড় হচ্ছে। তবে আমার জামা কাপড় পুরানো দোকান থেকেই কিনেছি।” বড় দোকান দুটির ম্যানেজারদের দাবি, ক্রেতাদের চাহিদা মতো কাপড় রেখেছেন। সেই জন্যই ক্রেতারা ভিড় করছেন এ বার।
রামপুরহাট বস্ত্র ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক মহম্মদ শরিফউদ্দিন অবশ্য বলেন, ‘‘নতুনের দিকে সবসময়ই মানুষের একটা ঝোঁক থাকে, সেই জন্য দুটি বড় দোকানে কিছু ক্রেতা যাচ্ছে। যারা নগদে কেনেন তাঁদের অধিকাংশ ক্রেতাই এ বছর চালু হওয়া দোকান দুটিতে যাচ্ছেন। আবার যারা ধারে পুজোর বাজার করেন তাঁরা সাবেক দোকানগুলিতে যাচ্ছেন। তাই সাবেক দোকানের ব্যবসা ঠিকই আছে।’’