নিহত কিশোরের বাবাকে মার

নাবালক খুনে মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবিতে দিনকয়েক আগে মহম্মদবাজারের সোতসালে মোরগ্রাম-রানিগঞ্জ ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে মিছিল করেছিলেন এলাকার লোকজন। তাতে ছিলেন নিহত নাবালক সোতসাল গ্রামের সপ্তম শ্রেণিতে পড়া মহম্মদ ইসমাইল ওরফে নয়নের বাবা আসাতুল্লা শেখ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৬ ০২:২৯
Share:

সিউড়ি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আসাতুল্লা। —নিজস্ব চিত্র

নাবালক খুনে মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবিতে দিনকয়েক আগে মহম্মদবাজারের সোতসালে মোরগ্রাম-রানিগঞ্জ ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে মিছিল করেছিলেন এলাকার লোকজন। তাতে ছিলেন নিহত নাবালক সোতসাল গ্রামের সপ্তম শ্রেণিতে পড়া মহম্মদ ইসমাইল ওরফে নয়নের বাবা আসাতুল্লা শেখ। শুক্রবার সকালে সেই আসাতুল্লার উপরেই ছেলে খুনে মূল অভিযুক্ত ইকবাল শেখ ওরফে টিসনের ভাই-সহ তাদের দলবল হামলা চালায় বলে অভিযোগ। স্থানীয় লোকজন আসাতুল্লাকে উদ্ধার করে সিউড়ি হাসপাতালে ভর্তি করান। এরপরেই এলাকার লোকজন অভিযুক্তদের বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালায়। রাতের দিকে টিসনের ভাই রোজ শেখ, কাজল শেখ-সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন আসাতুল্লার স্ত্রী নুরি বিবি।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোতসালের বাসিন্দা কৃষিজীবী আসাতুল্লার ছেলে বছর তেরোর নয়ন স্থানীয় স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত। পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১৭ মে ২০১৫ সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হয় নয়ন। তিন দিন নিখোঁজ থাকার পর ২০ মে গ্রামের কাছাকাছি সেচ খালের ধার থেকে তার পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। এরপরেই আসাতুল্লা গ্রামেরই ইকবাল শেখ ওরফে টিসন, রহমান শেখ, বরকত শেখ, কটা শেখ ও কাজল শেখের বিরুদ্ধে মহম্মদবাজার থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার মাস দু’য়েকের মাথায় পুলিশ চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। কিন্তু মূল অভিযুক্ত টিসন ধরা পড়েনি। কিন্তু, কেন খুন? আসাতুল্লার দাবি ছিল, নয়নের সঙ্গে গ্রামের এক নাবালিকার প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। সে কারণেই নয়নকে ফোনে ডেকে বিষ খাইয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়। ময়না-তদন্তের রিপোর্টে ছেলের পাকস্থলিতে বিষ ও পেটে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের উল্লেখ ছিল বলেও দাবি তাঁর।

এ দিন ঠিক কী হয়েছে?

Advertisement

আসাতুল্লার পরিবারের দাবি, টিসনের ভাই ও তাদের দলবল প্রথম থেকেই খুনের মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিচ্ছিল। চলতি মাসের ৭ তারিখ টিসনকে গ্রেফতারের দাবিতে মিছিল করার পর থেকে সেই চাপ আরও বাড়ে। পরিবারের সকলকে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেয়। পরিবার সূত্রের খবর, এ দিন সকালে আসাতুল্লা ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক ধারে শৌচকর্মের জন্য যান। ভগ্নিপতি আসগর আলির দাবি, ‘‘সেখানেই তাঁর উপরে রড লাঠি নিয়ে চড়াও হয় খুনে অভিযুক্ত টিসনের দুই ভাই রোজ শেখ, কাজল শেখ-সহ কয়েক জন। চিৎকার শুনে গ্রামের লোকজন ছুটে না এলে ওঁকে আজ প্রাণেই বাঁচানো যেত না!’’

সিউড়ি হাসপাতাল সূত্রের খবর, আসাতুল্লার ঘাড়ে, পিঠে আঘাত রয়েছে। এ দিকে, আসাতুল্লার উপরে হামলার কথা চাউর হতেই ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর একাংশ অভিযুক্তদের বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালায়। সে সময় পালাতে গিয়ে অভিযুক্ত কাজল শেখ আহত হন। তাঁকেও সিউড়ি হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। তবে অভিযুক্তদের পরিবারের কেউই কোনও মন্তব্য করতে চায়নি।

ওই খুনের ঘটনায় পুলিশ সুপার সুধীর কুমার আগেই জানিয়েছিলেন, মামলায় চার্জশিট হয়ে গিয়েছে। চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে দু’জন জামিনে ছাড়া পেয়েছে। মূল অভিযুক্তের খোঁজ চলছে। এ দিন ফোন ধরেননি পুলিশ সুপার। জেলা পুলিশের এক কর্তা অবশ্য বলেন, ‘‘ঘটনার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement