‘এসআইআরের জন্যই আত্মহত্যা করেছেন দাদু’! নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের বীরভূমে

গত বৃহস্পতিবার ইলামবাজারের স্কুলবাগান সুভাষপল্লির বাড়ি থেকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় উদ্ধার হয় নবতিপরের এক দেহ। তাঁর পরিবার জানায়, মৃতের নাম ক্ষিতীশ মজুমদার। তিনি এসআইআরের ভয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ২১:১১
Share:

ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনই (এসআইআর) ৯৫ বছরের ক্ষিতীশ মজুমদার মারা গিয়েছেন। দাদুর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টা পরে ইলামবাজার থানায় এই মর্মে অভিযোগ করলেন তাঁর নাতনি। পুলিশ সূত্রে খবর, নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। রাজ্যের শাসকদলের দাবি, তারা চায় সুবিচার।

Advertisement

গত বৃহস্পতিবার ইলামবাজারের স্কুলবাগান সুভাষপল্লির বাড়ি থেকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় উদ্ধার হয় এক নবতিপরের দেহ। তাঁর পরিবার জানায়, ৯৫ বছরের ক্ষিতীশ পশ্চিম মেদিনীপুরের কোতোয়ালি থানা এলাকার কোরাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তবে পাঁচ-ছ’মাস ধরে তিনি ইলামবাজারে মেয়ের বাড়িতে ছিলেন। সেখানেই এসআইআর-আতঙ্কে আত্মহত্যা করেন। তাদের দাবি, গত কয়েক দিন নিয়ে এসআইআর নিয়ে আতঙ্কে ছিলেন ক্ষিতীশ। একে ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় তাঁর নাম ছিল না। সে নিয়েই বেজায় চিন্তিত ছিলেন বৃদ্ধ। তাঁকে এই বয়সে আবার বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে ভেবে ভয় পাচ্ছিলেন। মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ে তিনি নিজেকে শেষ করে দিয়েছেন। লিখিত ভাবে ওই অভিযোগ নিয়ে শুক্রবার থানায় যান ক্ষিতীশের নাতনি হিরুবালা মজুমদার। অভিযোগপত্রে তিনি লেখেন, ‘‘এসআইআরের কারণেই দাদুর মৃত্যু হয়েছে।’’ ওই যুবতী জানিয়েছেন, তাঁর বাবা অসমে কর্মরত। তিনি বীরভূমে ছিলেন না এবং দাদুর বিষয়টি সম্পর্কে জানতেন না। তাই পরিবারের পক্ষ থেকে তিনিই থানায় লিখিত অভিযোগ করলেন। অভিযোগপত্রে তিনি লেখেন, ‘‘এমন মর্মান্তিক ঘটনা যেন আর না ঘটে এবং দাদুর মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ এবং নিরপেক্ষ তদন্ত করা হোক।’’

সব মিলিয়ে ইলামবাজারকাণ্ডে নতুন মাত্রা যোগ হল শুক্রবার। তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব বলছেন, দলীয় ভাবে তাঁদের কিছু বলার নেই। তবে ক্ষিতীশের পরিবারের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হোক। তাঁর মৃত্যুর যথার্থ বিচার হোক। তৃণমূলের ইলামবাজারের ব্লক সভাপতি ফজলুর রহমান বলেন, ‘‘সারা বাংলায় মানুষের মধ্যে এসআইআর নিয়ে যে ভীতির সঞ্চার হয়েছে, তার দায় তো কেন্দ্রের বিজেপির সরকার। পূর্ববঙ্গ থেকে প্রচুর মানুষ এককাপড়ে এ দেশে এসেছিলেন, তাঁরা সবচেয়ে বেশি আতঙ্কিত।’’

Advertisement

অন্য দিকে, এসআইআর নিয়ে বীরভূমের তৃণমূল নেতৃত্বের মধ্যে দু’রকম সুর শোনা যাচ্ছে। দু’দিন আগেই জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক অনুব্রত মণ্ডল বলেছিলেন, “এসআইআর চালু হলে ভালই হবে।” শুক্রবার বীরভূম জেলা পরিষদের সভাপতি কাজল শেখের মন্তব্য, “আমি এনআরসি বা এসআইআর, কোনওটাই মানি না। আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে চলি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement