ছাত্রীর ঝাঁপের ঘটনায় বহিষ্কৃত পাঁচ জন

বুধবার বেলার দিকে দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী স্কুলের ছাদ থেকে নীচে পড়েন। স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রথমে তাকে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:০০
Share:

প্রতীকী ছবি

চুরির অপবাদ দিয়ে সহপাঠীরা নির্যাতন চালাচ্ছে— এমনই অভিযোগ তুলেছিল স্কুলের তিন তলা থেকে ঝাঁপ দেওয়া এক ছাত্রী। পুরুলিয়া মফস্সল থানার ওই আবাসিক স্কুল কর্তৃপক্ষ ঘটনার তদন্তে নেমে নির্যাতনে যুক্ত থাকার অভিযোগে শনিবার পাঁচ ছাত্রীকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করলেন।

Advertisement

বুধবার বেলার দিকে দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী স্কুলের ছাদ থেকে নীচে পড়েন। স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রথমে তাকে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে পুরুলিয়ারই একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করানো হয়। পরিবারের লোকেদের দাবি, প্রথমে সংজ্ঞাহীন থাকলেও জ্ঞান ফেরার পরে ওই ছাত্রী তাঁদের কাছে অভিযোগ করে, হস্টেলের কয়েকজন ছাত্রী টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে কয়েকদিন ধরে টানা নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি তারা মৃত্যু কামনাও করে। মঙ্গলবার হস্টেল সুপারকে পুরো ঘটনাটি জানানোর পরে নির্যাতন আরও বেড়ে যায় বলে অভিযোগ। মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ে সে আত্মহত্যা করার জন্য ছাদ থেকে ঝাঁপ দেয়। বৃহস্পতিবারই ঘটনার বিহিত চেয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই ছাত্রীর মা। এই ঘটনাটিকে যে কোনও ভাবেই স্কুল কর্তৃপক্ষ হাল্কা ভাবে নিচ্ছেন না, তা আগেই জানিয়েছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ পাওয়ার পরে তদন্ত কমিটিও গড়া হয়।

শনিবার প্রধান শিক্ষিকা বলেন, ‘‘ছাত্রীর পরিবারের তরফে চার ছাত্রীর নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। কমিটির সদস্যেরা তদন্তে নেমে আরও এক ছাত্রীর যোগ রয়েছে বলে জেনেছেন। অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্রীকেই স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’’

Advertisement

স্কুল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, ওই পাঁচ ছাত্রীর অভিভাবকদের ডেকে গোটা ঘটনাটি জানানো হয়। প্রধান শিক্ষিকার দাবি, ওই ছাত্রীদের অভিভাবকেরা তা শোনার পরে ঘটনাটিকে সমর্থন করেননি। তাঁরা ছাত্রীদের বাড়ি নিয়ে গিয়েছেন। পাশাপাশি স্কুলের সমস্ত ছাত্রীকে ডেকে কেন ওই পাঁচ জনকে বহিষ্কার করা হল, তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাতে সকলের বার্তা পৌঁছয়, ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ করা যাবে না। শৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্ব সকলের। প্রতিষ্ঠানের স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক বলেন, ‘‘কখনই এই ধরনের ঘটনা কাম্য হতে পারে না। তাই পড়ুয়াদের স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।’’

শুক্রবার বোকারোর একটি বেসরকারি হাসপাতালে আহত ছাত্রীকে ভর্তি করানো হয়। তার দাদা এ দিন বলেন, ‘‘স্কুল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে সান্ত্বনা পেলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন