বোলপুর হাসপাতাল থেকে আটক ২০

ভাঙচুরে নাম জড়াল শাসকদলের

চিকিৎসায় অহেতুক দেরি এবং গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতালে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল রোগীর পরিবারের আত্মীয়স্বজনের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি শনিবার সকাল এগারোটা নাগাদ ঘটেছে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে। এ ঘটনায় নাম জড়িয়েছে শাসকদলেরও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বোলপুর শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:৪৭
Share:

আটকদের ভ্যানে তুলছে পুলিশ। শনিবারের নিজস্ব চিত্র।

চিকিৎসায় অহেতুক দেরি এবং গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতালে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল রোগীর পরিবারের আত্মীয়স্বজনের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি শনিবার সকাল এগারোটা নাগাদ ঘটেছে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে। এ ঘটনায় নাম জড়িয়েছে শাসকদলেরও।

Advertisement

শুক্রবার ইলামবাজারে কেন্দ্রের নোট বাতিল সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় তৃণমূলের প্রতিবাদ মিছিলে যোগ যাওয়ার জন্য যাওয়ার পথে ট্রাক্টর উল্টে পাড়ুই থানার গোরাপাড়ার মোড়ে মারা যান দুই যুবক। শুক্রবার বিকেলের ওই ঘটনায় আহত ২৬ জন বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে এখনও চিকিৎসাধীন। পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আহতদের চিকিৎসায় অহেতুক দেরি করার অভিযোগ তুলে, প্রথমে ওয়ার্ডে কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে ঝামেলা শুরু হয় স্থানীয় বাসিন্দা এবং আহতদের পরিবারের। তাঁদের ক্ষোভ গিয়ে পড়ে জরুরি বিভাগে। চেয়ার, টেবিল ভাঙচুর করে, আসবাব লন্ডভন্ড করে দেন তাঁরা। প্রহৃত হন হাসপাতালের চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারী। তাঁকে ছাড়াতে গিয়ে আক্রান্ত হন দুই স্বাস্থ্যকর্মী সুভাষ ভট্টাচার্য ও শ্যামল ঘোষ। সুপারের দফতরেও তাণ্ডব চলে বলে অভিযোগ।

ঘটনার আকস্মিকতায় বেশ কিছু রোগী ওয়ার্ডের বাইরে চলে যান। খবর পেয়ে, বোলপুরের এসডিপিও অম্লান কুসুম ঘোষের নির্দেশে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঘটনাস্থল থেকে ২০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত জানার জন্য হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

Advertisement

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মারধরও করে তৃণমূল সমর্থক, আহতদের পরিবারের লোকজন এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। শুধু তাই নয়, হাসপাতালের জরুরী বিভাগ ও সুপারের দফতরেও ভাঙচুর করেন তাঁরা। বাড়তি গণ্ডগোলের আশঙ্কায় বোলপুরের এসডিপিও অম্লান কুসুম ঘোষের নির্দেশে, মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে মোতয়েন রয়েছে পুলিশ। ঘটনার কথা লিখিত ভাবে শান্তিনিকেতন থানায় জানিয়েছেন হাসপাতালের সুপার অমিত মজুমদার। এ দিনের ঘটনা সম্পর্কে সবিস্তারে খোঁজ নিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরও। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

অহেতুক দেরিতে চিকিৎসার অভিযোগ মানেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

বোলপুর মহকমা হাসপাতালের সুপার অমিত মজুমদার বলেন, “শুক্রবার আমি নিজেই দশ জনের চিকিৎসা করেছি। পাশাপাশি অন্য চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা নিরন্তর চিকিৎসা চালিয়ে গিয়েছেন।” তাঁর দাবি, ‘‘যাত্রীবাহী বাস দুর্ঘটনায় এই হাসপাতালে একই সময়ে শতাধিক আহতের চিকিৎসা নির্বিঘ্নে হয়েছে। এ দিনও তিন চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা সমানে চিকিৎসার কাজ করছিলেন। ঘটনার ১৬-১৭ ঘণ্টা বাদে, প্রায় সকলে যখন স্থিতিশীল সেক্ষেত্রে চিকিৎসায় কিসের গাফলতি বুঝতে পারলাম না?’’

ঘটনার কথা জানিয়ে পুলিশে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন অমিতবাবু। শান্তিনিকেতন থানা জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

জেলা পরিষেদের স্বাস্থ্য ও পরিবেশ কর্মাধ্যক্ষ তথা তৃণমূলের ইলামবাজার ব্লক সভাপতি জাফারুল ইসলাম বলেন, ‘‘হাসপাতালের সুপারের নেতৃত্বে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা তৎপরতার সঙ্গে দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসা করেছেন। গাফিলতির প্রশ্ন ওঠে না। এ দিন সকালে কিছু উটকো লোক হাসপাতালে ভাঙচুর করেছেন। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন