জেলায় ৪, ৫৫৬.৩৮ হেক্টর জমিতে শালবন রয়েছে।
শাল গাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে দক্ষিণবঙ্গে। এমনটাই মনে করছেন বনদফতর। এ বার তাই বনসৃজন প্রকল্পে জেলায় জেলায় শাল গাছ লাগানোর উপর জোর দিল রাজ্য বন দফতর।
সেই লক্ষ্যে বীরভূম জেলায় ৩০ হেক্টর জমিতে শাল গাছের চারা লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। সপ্তাহব্যাপী বনসৃজন প্রকল্পে জেলার দুটি রেঞ্জে শাল গাছের বন তৈরির জন্য ইতিমধ্যে প্রস্তুতি নিয়েছে দফতর। জেলা সহ-বন আধিকারিক দিলীপ কুমার জানা বলেন, ‘‘দক্ষিণবঙ্গে শাল গাছের বনের বৃদ্ধির লক্ষ্যে জেলার মহম্মদবাজার রেঞ্জের ২০ হেক্টর জমিতে এবং রামপুরহাট রেঞ্জের ১০ হেক্টর জমিতে শাল গাছের চারা লাগানো হবে। সেই কাজই শুরু হয়েছে।’’
বনদফতর সূত্রে খবর, একটি শাল গাছের চারা লাগালে তাকে প্রচুর যত্ন করতে হয়। বনদফতরের এক আধিকারিক জানান, এক বার এই গাছ লাগালে সেই গাছ বছর পনের পরে কাটা হয়। আর গাছ কাটা হয়ে গেলেও তার শিকড় থেকে আবার গাছ হয়। যে জায়গায় একবার শাল গাছ লাগানো হয়ে থাকে সেখানে দ্বিতীয় বার শাল গাছ লাগাতে হয় না। চারাগুলিকে বর্ষার সময় ছাড়া অন্যান্য ঋতুতে জল দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা করতে হয়। গাছের চারদিকে ঘিরে রাখতে হয়। যাতে গরু ছাগল ঢুকে চারাগুলি না খেয়ে ফেলে।
রাজ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া জেলায় সব চেয়ে বেশি শাল গাছের বন দেখতে পাওয়া যায়। বীরভূম জেলাতে বোলপুর, সিউড়ি, রাজনগর, দুবরাজপুর, মহম্মদবাজার, সাঁইথিয়া, রামপুরহাট— মোট সাতটি রেঞ্জ রয়েছে। এই সব রেঞ্জের অধীন জেলাতে ৪, ৫৫৬.৩৮ হেক্টর জমিতে শাল গাছের বন বর্তমানে। প্রত্যেক রেঞ্জেই শাল গাছের বন আছে, তবে তার মধ্যে বোলপুর রেঞ্জের অধীনে বেশি শাল গাছ আছে। মহমদ্দবাজার রেঞ্জের রাসপুর বিট অফিসের অধীন ৩২ হাজার শাল গাছ লাগানো হবে।
রামপুরহাট রেঞ্জের কাষ্টগড়া বিট অফিসে ১৬ হাজার শাল গাছের চারা লাগানো হবে। মোট ৪৮ হাজার শাল গাছের চারার জন্য ইতিমধ্যে সিউড়ির কড়িধ্যার কাছে ছোড়া এলাকায় এবং দুবরাজপুরে শাল গাছের চারা বোনা হয়েছে।
মহম্মদবাজার রেঞ্জ অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ষার সময় ছাড়া অন্যান্য ঋতুতে শাল চারায় জল দেওয়ার জন্য এলাকায় ছোট ছোট কুয়ো খনন করা হবে। সেই কুয়োর মাধ্যমে চারা গাছ গুলিতে জল দেওয়া হবে। রামপুরহাট এলাকার কাষ্টগড়া বিট অফিসের অধীন শাল গাছের চারা লাগানো হবে। এর জন্য এলাকার একটি সেচ খালের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে জলের ব্যবস্থা করা হবে।
রামপুরহাট রেঞ্জ অফিসার অরিন্দম কাঞ্জিলাল বলেন, ‘‘গাছ গুলিকে রক্ষনাবেক্ষনের জন্য ইতিমধ্যে লোহার তারের জালের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গরু ছাগল যাতে গাছগুলিকে নষ্ট করতে না পারে সেই জন্য জাল দিয়ে গাছগুলিকে ঘিরে দেওয়া হবে।’’
— নিজস্ব চিত্র।