আরও সবুজের ডাক দিয়ে বন-মহোৎসব

বন-মহোৎসব অনুষ্ঠানের মঞ্চে প্রতীকী রূপে নবজাতক শিশুর পাঁচ অভিভাবকদের হাতে সবুজশ্রী প্রকল্পের গাছ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়াও প্রায় চারশো স্কুল পড়ুয়া সহ প্রায় দশ হাজার গাছের চারা বিতরণ করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ইলামবাজার শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৮ ০৭:৫০
Share:

আশা: ছাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হল গাছ। নিজস্ব চিত্র

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বন বিভাগের উদ্যোগে ‘বন-মহোৎসব ২০১৮’-এর রাজ্যস্তরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হল ইলামবাজারের নীলডাঙার মাঠে। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ। এ ছাড়াও বন বিভাগের আধিকারিক, প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তি, বিধায়ক এবং স্থানীয় নেতৃত্বরা উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

প্রতি বছর ১৪-২০ জুলাই বৃক্ষরোপণ, যৌথ পরিচালন কমিটির মধ্যে সমন্বয়, আলোচনার মধ্যে দিয়ে পালিত হয় বন-মহোৎসব। এ বছর দক্ষিণবঙ্গের যে দু’টি জায়গায় সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল তার একটি ইলামবাজার, অন্যটি গোপীবল্লভপুর। এ দিন ইলামবাজারের নীলডাঙার মাঠে বন-মহোৎসবের উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে রাজ্যস্তরের উৎসবের সূচনা হল। বৃক্ষরোপণের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এর পরে ইলামবাজার বিট অফিস থেকে নীলডাঙার মাঠ পর্যন্ত জনসচেতনতা মূলক পদযাত্রা হয়। পরে স্কুল পড়ুয়া থেকে সাধারণ মানুষ, সকলের হাতে গাছ তুলে দেওয়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে চলতে থাকে বন-মহোৎসব।

শনিবারের মহোৎসবে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অম্লানকুসুম ঘোষ, সাংসদ শতাব্দী রায়, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রধান মুখ্য বনপাল (সাধারণ) সিদ্ধার্থ বারারি, প্রধান মুখ্য বনপাল (গবেষণা, পরিধারণ ও উন্নয়ন) জে টি ম্যাথুজ, প্রধান মুখ্য বনপাল আর পি সাইনি, দক্ষিণপূর্ব চক্রের মুখ্য বনপাল কল্যাণ দাস, কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী এবং বন ও ভূমি সংস্কার স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ অরুণ সাহা প্রমুখ।

Advertisement

বন-মহোৎসব অনুষ্ঠানের মঞ্চে প্রতীকী রূপে নবজাতক শিশুর পাঁচ অভিভাবকদের হাতে সবুজশ্রী প্রকল্পের গাছ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়াও প্রায় চারশো স্কুল পড়ুয়া সহ প্রায় দশ হাজার গাছের চারা বিতরণ করা হয়। জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু জানান, বীরভূমে একশো দিনের কাজে যেমন বৃক্ষরোপণ হচ্ছে, তেমনই সেই গাছগুলির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পঞ্চায়েত, স্বনির্ভর প্রকল্পকে ‘বৃক্ষ পাট্টা’ দেওয়া হচ্ছে। প্রশাসনের মতে, সবুজায়ন অনেকটাই বেড়েছে। যার ফলে ইকো ট্যুরিজম প্রোজেক্টে পরিযায়ী পাখি আবার আসছে। গত বছর থেকে অনুর্বর, চাষের অযোগ্য জমিগুলিতে ফলের চাষ করা শুরু হয়েছিল। এ বছর ইতিমধ্যেই পশ্চিমাঞ্চলের ১০টা ব্লকের প্রায় ৮১০ হেক্টর জমি চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে ফলের চাষ হবে। স্বনির্ভর দলগুলিকে দিয়ে এই চাষ করাতে উদ্যোগী হয়েছে জেলা প্রশাসন। তাতে বেশ কিছু মানুষের আয় বাড়বে। এ ছাড়াও রাজ্য সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী আদিবাসী জনজাতির জন্য বিশেষ আদিবাসী পাট্টার ব্যবস্থা হচ্ছে বলেও জানান জেলাশাসক।

সাংসদ শতাব্দী রায় পড়ুয়াদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘স্কুলে, বাড়িতে, মাঠে সব জায়গায় গাছ লাগাও, যত্ন নাও। দূষণ কমিয়ে প্রাকৃতিক ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব আমাদের। তার জন্য গাছের প্রয়োজন।’’ সভাধিপতি বিকাশ রায়চোধুরীর কথায়, ‘‘সমস্ত পঞ্চায়েতের রাস্তার ধারে, জমিতে গাছ লাগানো হবে। বীরভূম আরও সবুজ হবে।’’ বন বিভাগ সূত্রে খবর, দক্ষিণবঙ্গের মোট ১১টি শহরকে সাজিয়ে তুলতে প্রচুর বৃক্ষরোপণ করা হবে। বীরভূম জেলায় সেই তালিকায় রয়েছে বোলপুর। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গাছ লাগানো হবে। তৈরি হচ্ছে কর্মসূচিও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন