Uttarakhand

Visva Bharati: কবির জন্মদিনেই নতুন ক্যাম্পাসের ভিত্তিপ্রস্তর

ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য ৪৫ একর নিঃশুল্ক জমি বিশ্বভারতীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। ১৫০ কোটি টাকার বিস্তারিত প্রজেক্ট রিপোর্টে কেন্দ্রের সম্মতির মুখে বলেও জানা যাচ্ছে।

Advertisement

সৌরভ চক্রবর্তী

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ১১ মে ২০২২ ০৬:৪৪
Share:

বিশ্বভারতীর দ্বিতীয় ক্যাম্পাস গড়ে ওঠার বিষয়টি সরকারি ভাবে ঘোষণা করেন। ফাইল চিত্র।

উত্তরাখণ্ডে বিশ্বভারতীর প্রস্তাবিত দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্করসিংহ ধামী। এই অনুষ্ঠানের জন্য উত্তরাখণ্ড সরকারের পক্ষ থেকে বেছে নেওয়া হয়েছিল কবির জন্মদিন, পঁচিশে বৈশাখ দিনটিকেই।

Advertisement

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পরে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী জানান, অতি দ্রুত ক্যাম্পাস নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শেষ করে পঠনপাঠন শুরু হবে। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরাখণ্ড দূরদর্শনের একটি সংবাদ তুলে ধরে এই খবর জানান। সেখানে পুষ্করসিংহ ধামীকে বলতে শোনা যায়, “রামগড় গুরুদেবের কর্মক্ষেত্র। তাই এই স্থানে যাতে দ্রুত বিশ্বভারতীর দ্বিতীয় ক্যাম্পাস শুরু করে দেওয়া যায় তার চেষ্টা আমরা করব।” ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য ৪৫ একর নিঃশুল্ক জমি বিশ্বভারতীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। ১৫০ কোটি টাকার বিস্তারিত প্রজেক্ট রিপোর্টে কেন্দ্রের সম্মতির মুখে বলেও জানা যাচ্ছে।

২০২০ সালের ৮ জুলাই তৎকালীন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক রামগড়ে বিশ্বভারতীর দ্বিতীয় ক্যাম্পাস গড়ে ওঠার বিষয়টি সরকারি ভাবে ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে জানানো হয়, উত্তরাখণ্ড সরকার ক্যাম্পাসের জমি দিতে প্রস্তুত। তখন বিশ্বভারতী মন্ত্রকের কাছে বিস্তারিত প্রজেক্ট রিপোর্ট জমা করে। রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রাথমিক ভাবে রামগড়ে একটি করে দোতলা প্রশাসনিক ভবন, সমাজবিজ্ঞান ও গ্রামোন্নয়ন বিভাগ ভবন, বিভিন্ন ভাষা চর্চা কেন্দ্রের ভবন, জননীতি ও সুশাসন বিভাগের ভবন এবং হিমালয়ান স্টাডিজ়-এর ভবন হবে। ১০০ শয্যার মোট দুটি ছাত্রাবাস এবং ছাত্রীনিবাসও গড়ে উঠতে চলেছে। নতুন ক্যাম্পাসে থাকবে কম্পিউটার সেন্টার। সেখানে একই সময়ে ১০০ জনকে স্থান দেওয়া যাবে। খেলাধুলার জন্য পৃথক সেন্টার তৈরি করার পরিকল্পনাও রয়েছে এই রিপোর্টে।

Advertisement

ছাত্র-ছাত্রী, অধ্যাপক ও কর্মীদের সুবিধার জন্য গড়ে উঠতে চলেছে জেনারেল কিচেন তথা ক্যান্টিন। ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে উঠতে চলেছে বৃহদায়তন কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারও। প্রাথমিক পর্বে বেশ কিছু বিষয়ের স্নাতকোত্তর এমফিল ও পিএইচডি কোর্স চালু করার কথা বলা হয়েছিল রিপোর্টে। প্রথম, সমাজবিদ্যা ও গ্রামোন্নয়ন বিভাগ, যার মধ্যে থাকতে চলেছে দুটি বিষয়, সমাজকর্ম এবং গ্রামোন্নয়ন। দ্বিতীয়, ভাষা চর্চা কেন্দ্র। যার অধীনে থাকছে সংস্কৃত, হিন্দি, ইংরেজি ও অন্য আধুনিক ইউরোপীয় ভাষা এবং বিলুপ্তপ্রায় ভাষা। তৃতীয়, জননীতি ও সুশাসন বিভাগ। যার অধীনে থাকবে সমাজতত্ত্ব, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ভূগোল, অর্থনীতি, ইতিহাস এবং জনপ্রশাসন ও নীতি। চতুর্থ, হিমালয়ান স্টাডিজ়।

তবে, এই বিভাগে কোনও স্নাতকোত্তর স্তরের পড়াশোনা থাকছে না। এই বিভাগটি হবে শুধু গবেষণামূলক। প্রত্যেকটি বিষয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে ৩০ জন, এমফিলে ১০ জন এবং পিএইচডি স্তরে ১০ জন করে মোট ৫০ জন পড়ুয়া ভর্তি হতে পারবেন বলে জানা গিয়েছে। সব মিলিয়ে প্রাথমিভাবে একটি শিক্ষাবর্ষে মোট পড়ুয়া হবে ৬২০ জন। রিপোর্ট অনুযায়ী, আগামী ২০২১ সালের মধ্যে ক্যাম্পাস চালু হয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও করোনা সংক্রমণ এবং জমি নিয়ে জটিলতায় গোটা প্রক্রিয়া পিছিয়ে যায়। গত বছরের অক্টোবরে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী তথা রামগড় এলাকার সাংসদ অজয় ভট্ট উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে দ্রুত জমি হস্তান্তরের আর্জি জানালে বিষয়টি আবার গতি পায়। এ দিনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পরে নতুন ক্যাম্পাসের বিষয়টি আরও গতি পাবে বলে মনে করছেন বিশ্বভারতীর আধিকারিকেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন