ট্রাকে গুঁতো, মৃত গাড়ির চার যাত্রী

পুলিশ জানিয়েছে, পুরুলিয়ার জীবনানন্দ সরণিতে বাড়ি ভাড়া নিয়ে বিমা সংস্থার এজেন্ট বিশ্বনাথবাবু মা ও মেয়েকে নিয়ে বছর দশেক ধরে রয়েছেন। তবে তাঁদের আদি বাড়ি কাঁথির গোকুলপুরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৭ ০০:৪১
Share:

প্রতীকী চিত্র।

রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পিছনে সজোরে ধাক্কা মারায় প্রাণ গেল ছোট গাড়িতে থাকা চার জনের। তাঁদের মধ্যে তিন জন একই পরিবারের। মঙ্গলবার দুপুর পৌনে একটা নাগাদ পুরুলিয়া মফস্‌সল থানার বিড়গিড়ি গ্রামের অদূরে, পুরুলিয়া-বাঁকুড়া (৬০-এ) জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতেরা হলেন বিশ্বনাথ সাও (৪২), তাঁর মা অঞ্জলি সাও (৬৬) ও বিশ্বনাথের মেয়ে দেবদত্তা সাও (১৪)। গাড়িতে থাকা অন্য এক মহিলা যাত্রীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ।

পুলিশ জািনয়েছে, পুরুলিয়ার জীবনানন্দ সরণিতে বাড়ি ভাড়া নিয়ে বিমা সংস্থার এজেন্ট বিশ্বনাথবাবু মা ও মেয়েকে নিয়ে বছর দশেক ধরে রয়েছেন। তবে তাঁদের আদি বাড়ি কাঁথির গোকুলপুরে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজেই গাড়ি চালিয়ে বিশ্বনাথবাবু পরিবারের লোকজনদের নিয়ে পুরুলিয়া শহরের দিকে আসছিলেন। বিড়গিড়ি গ্রামের অদূরে একটি পেট্রোল পাম্পের উল্টোদিকে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পিছনে তাঁদের গাড়িটি সজোরে ধাক্কা মারে। গাড়িটি এত গতিতে ছিল যে ট্রাকের পিছনের অংশে কিছুটা ঢুকে গিয়ে দুমড়ে মুচড়ে যায়। সংঘর্ষের শব্দে আশপাশ থেকে লোকজন ছুটে এলেও গাড়ির মধ্যে আটকে পড়া যাত্রীদের তাঁরা বের করতে পারেননি।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, লোকজনের জটলা। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি কার্যত খেলনা গাড়ির মতো দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে। গাড়ির সামনের উইন্ড স্ক্রিন ভেঙে গিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাবা-মেয়ে ছিলেন সামনের আসনে।

প্রত্যক্ষদর্শী ছোটু দাস বলেন, ‘‘প্রচণ্ড শব্দ শুনে দৌড়ে গিয়ে দেখি একটা ছোট গাড়ি ট্রাকের পিছনে ঢুকে গিয়েছে। চারিদিকে রক্ত। এক মহিলার তখনও শ্বাস চলছিল। কিন্তু কিছুতেই আমরা গাড়ি থেকে তাঁদের বের করতে পারিনি।’’ পুলিশ দ্রুত ক্রেন নিয়ে এসে ট্রাকের ভিতর থেকে দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি টেনে বের করে। কিন্তু ততক্ষণে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা বাবলু কেশরী, দীপঙ্কর গিরিরা গাড়িতে থাকা অচেতন মহিলা যাত্রীকে অন্য গাড়িতে তুলে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। বাবলু বলেন, ‘‘দেখলাম মহিলার শ্বাস চলছে। তাই চালককে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলি।’’

প্রথম দিকে পুলিশ মৃতদের পরিচয় উদ্ধার করতে পারেননি। পরে বিশ্বনাথবাবুর একটি পরিচয়পত্র দেখে পুলিশ জানতে পারেন তিনি পুরুলিয়ার একটি বিমা সংস্থার এজেন্ট। খবর পেয়েই সেখানকার কর্মীরা হাসপাতালে গিয়ে বিশ্বনাথবাবুকে শনাক্ত করেন। ওই শাখার ম্যানেজার অপরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিশ্বনাথবাবু জোনাল ম্যানেজার ক্লাব মেম্বার এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন। আমরা যতটুকু খবর পেয়েছি উনি কাঁথি থেকে গাড়ি করে পুরুলিয়ায় ফিরছিলেন।’’

সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, গত শনিবার বিশ্বনাথবাবু কাঁথিতে ফ্ল্যাট তৈরির কাজ দেখতে গিয়েছিলেন।’’ মৃতদের পরিবারের বাড়ির লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন