শাসকদলের দুই নেতার দ্বন্দ্বে সরকারি প্রকল্পরের কমিটি গঠন স্থগিত হয়ে গেল নিতুড়িয়ায়।
ওই ব্লকে সম্প্রতি বন দফতর সুসংহত জল বিভাজিকা ম্যানেজমেন্ট প্রোজেক্টে চারটি কমিটি তৈরিতে উদ্যোগী হয়। কিন্তু নিতুড়িয়া পঞ্চায়েত সভাপতি এবং স্থানীয় বিধায়ক দু’জনেই কমিটির জন্য পৃথক দু’টি তালিকা দেওয়ায় দ্বন্দ্বের সূত্রপাত। আলোচনা করে সর্বসম্মত ভাবে কমিটিগুলি তৈরির জন্য বৈঠক ডেকেছিল বন দফতর। কিন্তু গড়পঞ্চকোট পাহাড়ে বন দফতরের সভাগৃহে ওই বৈঠকে সভাপতি ও বিধায়কের অনুগামীদের বিবাদের জেরে আলোচনা ভেস্তে গেল।
বস্তুত বৃষ্টির জল ধরে রেখে, মাটির ক্ষয় রোধ করে আরও বেশি সবুজায়নের লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে জল বিভাজিকা প্রকল্পের। এ ছাড়া স্থানীয় অনেক বাসিন্দার কর্মসংস্থানও হয় এই প্রকল্পের মাধ্যমে। নিতুড়িয়াতে সড়বড়ি, দিঘা ও জনার্দন্ডি তিনটি পঞ্চায়েতে চারটি জল বিভাজিকা প্রকল্পে চারটি মাইক্রো লেবেল কমিটি করতে চাইছে বন দফতর। ওই কমিটি কাজ পরিচালনা করবে। ফলে প্রকল্পের টাকা খরচ করার ক্ষমতা যেমন কমিটির থাকবে, তেমনই পছন্দমতো লোকদের কাজ দেওয়ার ক্ষমতাও তাদের থাকবে। সে কারণেই দুই নেতার অনুগামীদের মধ্যে টানাটানি চলছে।
বন দফতর সূত্রের খবর, মাস ছয়েক আগে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শান্তিভূষণপ্রসাদ যাদব চারটি কমিটির সদস্যদের নামের তালিকা পাঠান। পাল্টা নামের তালিকা আসে বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরির শিবির থেকেও। দুই তালিকার মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রেখে সর্বসম্মত কমিটি তৈরির জন্য কিছু দিন আগে দু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসেছিল বন দফতর। ছিলেন কংসাবতী উত্তর বিভাগের ডিএফও প্রদীপ বাউরি। কিন্তু কমিটি তৈরি করা নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার পরেই দু’পক্ষের মধ্যে বাদানুবাদ শুরু হয়।
কমিটির কোষাধ্যক্ষ হবেন সম্পূর্ন ভূমিহীন। তিনি মাসিক আড়াই হাজার টাকা ভাতা পাবেন। বিধায়ক শিবিরের অভিযোগ, সভাপতির পাঠানো কমিটিগুলির কোষাধ্যক্ষ হিসেবে যাঁদের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে, তাঁরা সকলেই আর্থিক সঙ্গতিপূর্ণ ব্যক্তি। বিধায়কের অনুগামী তথা নিতুড়িয়া ব্লক যুব তৃণমূল নেতা আমজাদ খানের অভিযোগ, ‘‘পঞ্চায়েত সমিতির তরফে যে তালিকা দেওয়া হয়েছে তাতে সরকারী নির্দেশিকা মানা হয়নি। আমরা চাই নিয়ম মেনে কমিটি তৈরি করা হোক।’’ অন্যদিকে সভাপতির পাল্টা দাবি, ‘‘এই কমিটি তৈরিতে বিধায়কের কোনও ভূমিকা থাকার কথাই নয়। বিধি মেনে পঞ্চায়েতের সাথে আলোচনা করেই কমিটিগুলির সদস্যদের নামের তালিকা বন দফতরকে দেওয়া হয়েছে।” ডিএফও বলেন, ‘‘সর্বসম্মত ভাবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্দেশিকা মেনে কমিটি তৈরি হোক এটাই কাম্য।’’