নির্যাতনে অভিযুক্ত সনাতনের শাস্তি চায় নাতিরাও

নদিয়াড়া গ্রামে সনাতন একাই থাকত। তার দুই ছেলে পরিবার নিয়ে গুজরাট ও ঝাড়খণ্ডে থাকে। অবসরের পরে সনাতনের স্ত্রী মারা যান। মাসখানেক আগে সনাতন বছর বত্রিশের এক মহিলাকে পরিচারিকার কাজ দিয়ে বাড়ি নিয়ে আসেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৭ ০২:৫২
Share:

তালাবন্ধ: দরজায় শিশুর ছবি। সেই বাড়ির কর্তার বিরুদ্ধেই শিশু নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। পুরুলিয়ার নদিয়াড়া গ্রামে। ছবি: সুজিত মাহাতো

গ্রামে যে হরিনাম নিয়ে থাকত, পুজো-অর্চনাও করত, সেই বৃদ্ধের বিরুদ্ধে একরত্তি শিশুকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠায় ফুঁসছেন বাসিন্দারা। তাঁর আপনজনেরাও কঠিন শাস্তি চাইছেন।

Advertisement

পুরুলিয়া মফস্সল থানার নদিয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা সনাতন গোস্বামীর (ঠাকুর) বিরুদ্ধে তাঁর বাড়িতে থাকা পরিচারিকার সাড়ে তিন বছরের মেয়েকে নিষ্ঠুর ভাবে নির্যাতনের কথা সামনে আসতেই তাঁর বৌমারা জানিয়েছিলেন, সে গ্রামে ফিরলে তাঁরাই পুলিশকে খবর দেবেন। এ বার রবিবার সনাতনের দুই স্কুল পড়ুয়া নাতিও বলল, ‘‘দাদু ভাল লোক নয়। দাদুকে পুলিশ ধরুক। এমন কাজ যে করে, তাঁকে ধরাই দরকার। শাস্তি দেওয়া দরকার।’’

নদিয়াড়া গ্রামে সনাতন একাই থাকত। তার দুই ছেলে পরিবার নিয়ে গুজরাট ও ঝাড়খণ্ডে থাকে। অবসরের পরে সনাতনের স্ত্রী মারা যান। মাসখানেক আগে সনাতন বছর বত্রিশের এক মহিলাকে পরিচারিকার কাজ দিয়ে বাড়ি নিয়ে আসেন। তা ভাল ভাবে নেননি তাঁর ছেলে ও পুত্রবধূরা। তাঁরা গ্রামে এলে আলাদা থাকতেন। এখন সেই পরিচারিকার মেয়ের উপরে শ্বশুরের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ শুনে তাঁরা প্রচণ্ড অসন্তুষ্ট। শুক্রবারই ছিল তাঁদের শাশুড়ির বাৎসরিকির কাজ। কিন্তু শ্বশুর ছিল না। বুধবার থেকে সে বেপাত্তা। চাইল্ডলাইনের সদস্য ঝর্না মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার ওই গ্রামে গিয়ে সনাতনকে পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যায় গ্রামের মোড়ে কেউ তাকে দেখেছিলেন। কিন্তু বাড়িতে ঢোকেনি।’’

Advertisement

তবে এত নির্যাতনের পরেও কেন শিশুটির মা মুখ খোলেননি, তা নিয়ে ধন্দে সবাই। পুরুলিয়া জেলা চাইল্ডলাইনের কর্মীরা মনে করেন, মেয়ের শরীরে যে সুচ বিঁধে রয়েছে, মনে হয় ওই মহিলা নিজেও জানেন না। তা হলে অন্তত চুপ করে থাকতেন না। নদিয়াড়ার বাসিন্দারাও জানাচ্ছেন, সনাতনের বাড়ি গ্রামের এক প্রান্তে। বসতিও সেখানে কম। হোমগার্ডের চাকরি থেকে অবসর নেবার পর থেকেই সনাতন ঝাড়ফুঁক-বশীকরণ এ সব করত। গ্রামের এক প্রান্তে চন্দনকিয়ারি রাস্তার ধারে তার বাড়ি। বাড়িতে ঢোকার মুখে একটি দেবস্থানও রয়েছে। পুজো-অর্চনার পাশাপাশি কীর্তন-হরিনাম এ সব নিয়েও ব্যস্ত থাকত সে। তাই কারও সন্দেহ হয়নি। তাই ঘটনা সামনে আসতে ফুঁসছে নদিয়াড়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন