অ্যাম্বুল্যান্সে ২ রোগী, ঝামেলা হাসপাতালে

অ্যাম্বুল্যান্স চালক নিয়ম ‘ভাঙায়’ দুর্ভোগ বাড়ল শ্বাসকষ্টে থাকা ২৪ দিনের এক শিশুর। অভিযোগ, সিউড়ি হাসপাতালে দুর্ব্যবহার করা হয় ওই শিশুর পরিবারের লোকজনের সঙ্গেও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৪৬
Share:

অ্যাম্বুল্যান্স চালক নিয়ম ‘ভাঙায়’ দুর্ভোগ বাড়ল শ্বাসকষ্টে থাকা ২৪ দিনের এক শিশুর। অভিযোগ, সিউড়ি হাসপাতালে দুর্ব্যবহার করা হয় ওই শিশুর পরিবারের লোকজনের সঙ্গেও। সে সবের জেরে অসুস্থ বাচ্চাটিকে হাসপাতালে ভর্তি করতে দেরি হল ঘণ্টাখানেক।

Advertisement

অভিযোগের তির সিউড়ি ‘সুপার স্পেশ্যালিটি’ হাসপাতালের এক চিকিৎসকের দিকেও। নিয়মের কথা বলে তিনি শিশুটিকে ভর্তি নিতে অহেতুক দেরি করেছেন বলে সিউড়ি হাসাপাতালের সুপারের কাছে নালিশ ঠুকেছেন শিশুর পরিজনরা। ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন সংশ্লিষ্ট অ্যাম্বুল্যান্স চালকও।

খয়রাশোলের নাকড়াকোন্দা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, নওপাড়ার বাসিন্দা নাসিরাবিবি সোমবার সকালে তাঁর ২৪ দিনের শিশুটিকে নিয়ে নাকড়াকোন্দা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান। বাচ্চাটির শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে রেফার করেন সিউড়ির হাসপাতালে। ওই একই সময়ে নাকড়াকোন্দার বাসিন্দা পাটুবিবির মাস তিনেকের বাচ্চাকেও সিউড়িতে ‘রেফার’ করেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকরা।

Advertisement

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, জন্মের পর থেকে এক বছর বয়স পর্যন্ত কোনও শিশুকে চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ও সেখান থেকে বাড়ি ফেরানোর খরচ বহন করে সরকার। শিশু পরিজনের কাছে থাকা রসিদে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক স্বাক্ষর করে দিলেই, সরকারি কোষাগার থেকে টাকা পেয়ে যান অ্যাম্বুল্যান্স চালক।

এ দিন নিয়মের ব্যতিক্রম হয়। পাটুবিবির মাসতিনেকের শিশুকে সিউড়ি হাসপাতালে নিয়ে যেতে এসেছিল অ্যাম্বুল্যান্স। নাসিরাবিবির সন্তানের শ্বাসকষ্ট তখন আরও বেড়ে গিয়েছিল। পাটুবিবির অ্যাম্বুল্যান্স চালককে তাঁদেরও তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানান নাসিরাবিবি ও তাঁর মা।

অভিযোগ, কেন নিয়ম ভেঙে একটি অ্যাম্বুল্যান্সে দুই রোগীকে নিয়ে আসা হয়েছে, তা নিয়ে ক্ষিপ্ত হন জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক। ছিড়ে দেন ‘রেফারাল স্লিপ’।

অ্যাম্বুল্যান্স চালক সাধন ঘোষের নালিশ, ‘‘দু’জনকে এক সঙ্গে নিয়ে এসেছি বলে ওই চিকিৎসক আমাকে গালিগালাজ করেন। আমি বলি, একটি ভাউচারেই সই করে দিন। দু’টি স্লিপ সই করতে হবে না। কিন্তু শিশুটিকে ভর্তি করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।’’ অভিযোগ, চিকিৎসক সে কথা শোনেননি। তিনি জানান, কাউকে তিনি ভর্তি করাবেন না।

নাসিরাবিবি বলেন, ‘‘ওই অ্যাম্বুল্যান্সে জোর করেই উঠেছিলাম। কারণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তখন অন্য কোনও গাড়ি ছিল না। চালকের দোষ ছিল না। কিন্তু হাসপাতালে খারাপ ব্যবহার করা হল।’’

হট্টগোল শুনে ভিড় জমে জরুরি বিভাগের সামনে। ক্ষোভের আঁচ বুঝে একঘন্টা পর শিশুটিকে ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু হয়।

অভিযুক্ত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, এ দিন কী হয়েছে তা তাঁরা জানেন না। তবে অনেক সময় টাকার লোভে অ্যাম্বুল্যান্স চালকরা এক গাড়িতে একাধিক রোগী নিয়ে হাসপাতালে আসেন। তা বন্ধ করতে চিকিৎসকরা প্রতিবাদ করলেও লাভ হচ্ছে না।

সিউড়ি হাসপাতালের সুপার শোভন দে বলেন, ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখছি। শিশুটি সুস্থ রয়েছে। তার চিকিৎসা চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন