নর্দমায় মশার আঁতুড় শহরে

রোগ ছড়ানোর পরে ওই এলাকার বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, সচেতনতার অভাবেই ডেঙ্গির জন্য দায়ী এডিস মশার আঁতুড়ঘর হয়ে উঠেছে। এই প্রসঙ্গেই ওই এলাকায় নিকাশি নালার অবস্থাও খতিয়ে দেখতে গিয়ে বুধবার তাজ্জব হয়ে গিয়েছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৮ ০৭:২০
Share:

সতর্ক: দেশবন্ধু রোডে জাতীয় সড়কের ধারে নালা পরিষ্কার করে ছড়ানো হচ্ছে ব্লিচিং। নিজস্ব চিত্র

নতুন করে ডেঙ্গি না ছড়ালেও রোগের উৎস খুঁজতে গিয়ে নিত্য নতুন ঘটনা সামনে আসায় তাজ্জব হচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর ও পুরুলিয়া পুরসভা। শহরের দেশবন্ধু রোড এলাকায় ইতিমধ্যে ৩৫ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ায় ওই এলাকা ‘হাই অ্যালার্ট জোন’ হিসেবে ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য দফতর। পুরসভা থেকে প্রশাসনও তৎপরতা দেখাচ্ছে। কিন্তু, রোগ ছড়ানোর পরে ওই এলাকার বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, সচেতনতার অভাবেই ডেঙ্গির জন্য দায়ী এডিস মশার আঁতুড়ঘর হয়ে উঠেছে। এই প্রসঙ্গেই ওই এলাকায় নিকাশি নালার অবস্থাও খতিয়ে দেখতে গিয়ে বুধবার তাজ্জব হয়ে গিয়েছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

মঙ্গলবার শহরের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসন স্বাস্থ্য দফতর ও পুরসভার সঙ্গে বৈঠক করে। সেখানে ডাকা হয়েছিল জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকেও। কারণ ওই এলাকায় রাস্তার দু’পাশে নিকাশি নালা তৈরি করেছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষই। বৈঠকের পর পুরপ্রধান সামিমদাদ খান নিজে ওই এলাকা পরিদর্শনে গিযেছিলেন। তাঁরও চোখে পড়ে এই রাস্তার দু’পাশে নিকাশি নালার মধ্যে জল জমে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এই জমা জল বার করাতে উদ্যোগী হয় প্রশাসন।

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘ওই নিকাশি নালার অনেকটা অংশ ঢাকা। আবার কিছু জায়গা খোলাও রয়েছে। নিকাশি নালার মধ্যে জমে থাকা জল মশার জন্য আদর্শ। পুরুলিয়ায় তাপমাত্রাও মশার বংশ বিস্তারের পক্ষে অনুকূল। সে জন্য এই নালার জমে থাকা জল অবিলম্বে পরিষ্কার করা প্রয়োজন।’’

Advertisement

পুরপ্রধান বলেন, ‘‘বিষয়টি মাথায় রেখেই বৈঠকে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে ডাকা হয়েছিল। নিকাশি নালার কোথায়, কী কারণে জল জমে রয়েছে তা দেখতে বলা হয়।’’ বুধবার সেই কাজ শুরু করতে গিয়ে চোখ কপালে ওঠে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের ও পুরসভার কর্মীদের। নালার একটি জায়গায় ঢাকনা খুলে দেখা যায়, সেখানে ঠাসা রয়েছে থার্মোকলের ছোট ছোট প্লেটে। পুরসভার এক কর্মী জানান, রাস্তার ধারের অস্থায়ী খাবারের দোকান থেকেই এই থার্মোকলের প্লেট নিকাশি নালায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয় বলে মনে করছে তারা। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের পুরুলিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় সিংহ বলেন, ‘‘এ দিন থেকেই আমরা ওই নিকাশি নালা সাফাইয়ের কাজ শুরু করেছি। বৃষ্টিতে কাজ ব্যাহত হলেও আমাদের কর্মীরা কাজ করেছেন। কিন্তু নালার একটি জায়গা থেকেই প্রচুর পরিমাণে থার্মোকলের ছোট প্লেট মিলেছে। এ ভাবে নালা বুজিয়ে দিলে জল বার হবে কী করে?’’

বুধবার ওই এলাকা বা জেলার অন্য কোথা থেকে কোনও ডেঙ্গি আক্রান্তের খবর নেই বলেই জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে। এ দিনও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা ওই এলাকা সরজমিন পরিদর্শন করেন। যাঁরা জ্বরে আক্রান্ত, তাঁদের রক্তের নমুনা এ দিনও সংগ্রহ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, জ্বরের কিছু রোগীর খবর মিলেছে। তবেও কোনও ডেঙ্গি আক্রান্তের খবর নেই। ওই এলাকাতেও এত দিন যে হারে জ্বরের রোগী পাওয়া যাচ্ছিল। বাড়িতে জল জমে থাকার বিষয়েও সচেতনতা তৈরি হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন