উদ্যোগ: শান্তিনিকেতনের মোলডাঙা জঙ্গলে স্বনির্ভর দলের ফলের বাগান। শুক্রবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
পাথুরে মাটিতেই কাটা হয়েছে পুকুর। চারপাশে লাগানো হয়েছে ফলের গাছ। রূপপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে ১০০ দিনের প্রকল্পে ২৫ আদিবাসী মহিলা লেগে রয়েছেন স্থায়ী সম্পদ তৈরির কাজে। প্রথম বছরেই মিলেছে কিছুটা সাফল্য। তাতে রোজগারের সঙ্গে বেড়েছে আত্মবিশ্বাসও।
মহাত্মা গাঁধী জাতীয় কর্ম সুনিশ্চয়তা প্রকল্পে বনভূমিতে মাছ চাষের জন্য পুকুর খনন, পুকুর পাড়ে ফলের বাগান তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে রূপপুর গ্রাম পঞ্চায়েত ও মোলডাঙার আদিবাসী মহিলা স্বনির্ভর দল। গত বছরের জুন-জুলাই মাস নাগাদ মোলডাঙা জঙ্গলের আটটি পুকুরে ত্রিশ কেজি মাছের চাষ করেন স্বনির্ভর দলটি। বছর শেষে তা বিক্রি হয়েছে প্রায় সত্তর হাজার টাকায়। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল, মাছের পরিচর্যা থেকে শুরু করে পুকুর পরিষ্কার রাখা, মাছ তোলা— সব কিছুই করেছেন মহিলারা।
এরপর তাঁদেরই আবেদনে রূপপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল থেকে পুকুরের পাড়ে লাগানোর জন্য ২৭২টি ফলের গাছ দেওয়া হয়। যার মধ্যে ছিল ১৭৫টি আমগাছ, ২৫টি পেয়ারা গাছ, ১৫টি লেবু গাছ, ২৫টি কাঁঠাল গাছ, ২৫টি ডালিম গাছ, পাঁচটি কলা ও দু’টি জামির গাছ। কয়েক’টি গাছ জলের অভাবে মারা যেতে আরও কিছু গাছ হয়। সব মিলিয়ে এখন রয়েছে ২৭৭টি ফলের গাছ রয়েছে। পুকুর থেকে জল নিয়ে গাছে দিচ্ছেন মরুল হাঁসদা, চিত্ত হাঁসদা, লক্ষ্মী হেমব্রমরা। স্বনির্ভর দলের প্রধান মালতী কিস্কু জানালেন, এখানে কাজ করে ছেলেমেয়েদের সুষ্ঠু ভাবে পড়াশোনা করাতে পারছেন তাঁরা। পরিবারও পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। ‘‘পাথুরে জমি তো, তাই জলের খুব টান এখানে। জল দেওয়ার উপরে জোর দিতে হচ্ছে। জলের যদি একটু বন্দোবস্ত করা যেত তা হলে ভাল হত’’, বলছেন মালতী।
মহাত্মা গাঁধী জাতীয় কর্ম সুনিশ্চয়তা প্রকল্পে স্থায়ী সম্পদ তৈরিতে জোর দিয়েছে রাজ্য সরকার। তার উপর ভিত্তি করেই মোলডাঙায় এই প্রকল্পের রূপায়ণ চলছে। রূপপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রণেন্দ্রনাথ সরকার জানান, একশো দিনের কাজ প্রকল্পের অধিকাংশ কার্ডধারীই স্বনির্ভর প্রকল্পেও রয়েছে। তাঁদের এক জায়গায় করে স্থায়ী সম্পদ নির্মাণের চেষ্টা চলছে। মোলডাঙা জঙ্গলে জলের সমস্যা দূর করতে খুব তাড়াতাড়ি সেখানে সাবমার্সিবল বসানোর পরিকল্পনাও চলছে।