কেন্দ্রে যেতে ভরসা ছোট গাড়ি, টোটো

ভাগ্যিস টোটো, অটোর মতো ছোট ভাড়ার গাড়ি ছিল। তাই পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত এলাকার পরীক্ষা কেন্দ্রে সময়ে পৌঁছতে পারলেন পরীক্ষার্থীরা। তবে খসে গেল কয়েকগুণ ভাড়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৭ ০২:৫২
Share:

ভাগ্যিস টোটো, অটোর মতো ছোট ভাড়ার গাড়ি ছিল। তাই পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত এলাকার পরীক্ষা কেন্দ্রে সময়ে পৌঁছতে পারলেন পরীক্ষার্থীরা। তবে খসে গেল কয়েকগুণ ভাড়া।

Advertisement

শনিবার রাজ্য সরকারের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের পরীক্ষা নির্বিঘ্নে সারতে গত ক’দিন ধরে জেলা প্রশাসন শনিবার পরিবহণ ব্যবস্থা সচল রাখতে দফায় দফায় বৈঠক করেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে বহু পরীক্ষার্থীকেই পরীক্ষাকেন্দ্রে যেতে কম ভোগান্তি পোহাতে হল না।

পরীক্ষা ছিল দুপুর আড়াইটে থেকে। কিন্তু বেলা সওয়া ১২টায় মানবাজার বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে বিহারের পটনার কঙ্করবাগের বাসিন্দা দীপক কুমার ও সজ্জিত সিংহ জানতে পারেন, তাঁদের পরীক্ষাকেন্দ্র মহড়া হাইস্কুল আরও ২৪ কিমি দূরে। কিন্তু ওই রাস্তায় বাসের তেমন যোগাযোগ নেই। তাঁরা বলেন, ‘‘শুনেছিলাম, যে সব রুটে বাসের যোগাযোগ তেমন নেই, সেখানে পরীক্ষার্থীদের জন্য গাড়ি চালাবে প্রশাসন। বাসস্ট্যান্ড ঘুরেও তেমন গাড়ি তো খুঁজে পেলাম না।’’ শেষে একটা অটোর সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। কিন্তু ভাড়ার জন্য ৫০০ টাকা চাওয়ায় চমকে ওঠেন তাঁরা। শেষমেশ সাড়ে চারশোয় রফা হল।

Advertisement

বলরামপুরের বাসিন্দা পিঙ্কি কৈবর্ত আরও কয়েকজনের সঙ্গে পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিলেন রঘুনাথপুর ২ ব্লকের চেলিয়ামা বয়েজ হাইস্কুলে। রঘুনাথপুর পর্যন্ত পৌঁছলেও বাকি ১৭ কিমি পথ পৌঁছতে তাঁদেরও অটো ভাড়া করতে হল। রঘুনাথপুর ২ ব্লকের লালপুর গ্রামের সুশান্ত পরামানিককে সাঁতুড়ি ব্লকের বড়শাল গ্রামের পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতেও কম হ্যাপা পোহাতে হয়নি। বহু ঘুরে মধুকুন্ডায় পৌঁছে সেখান থেকে তাঁকে গাড়ি ভাড়া করে পরীক্ষাকেন্দ্রে যেতে হয়েছে।

এ দিন পুরুলিয়া জেলায় ৩২৪টি কেন্দ্রে ১,২৯,৫১১ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসেন। রাস্তায় প্রচুর বাস নামলেও পরীক্ষার সংখ্যা অত্যাধিক থাকায় বহু বাসেই এ দিন ছাদেও ঠাসাঠাসি করে লোকজনকে যেতে হয়েছে। এ ভাবে ব্লক সদর বা বড় রাস্তার পাশের পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে চাকরিপ্রার্থীরা পৌঁছতে বিশেষ অসুবিধা অবশ্য হয়নি। কিন্তু বড় রাস্তা থেকে ভিতরের দিকের পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে অনেককে রীতিমতো দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। ওই সব রুটে বাস না চালানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক পরীক্ষার্থীই। অনেকে আবার এমনও অভিযোগ করেছেন, জেলার প্রধান বাসস্ট্যান্ড ও স্টেশন থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রের পথনির্দেশ মিলবে। কিন্তু পুরুলিয়ায় জিলা স্কুল মোড় এলাকা ছাড়া এ ধরনের পথনির্দেশ কোথাও চোখে পড়েনি। স্বেচ্ছাসেবকও নজরে আসেনি বলে তাঁদের অভিযোগ।

পুরুলিয়ার জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘ব্লক সদরগুলি থেকে বাস, ছোটগাড়ির ব্যবস্থা ছিল। সমস্ত পরীক্ষার্থী নির্দিষ্ট সময়ের আগেই পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁচেছেন।’’

বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন জানাচ্ছে, জেলায় প্রায় দেড় লক্ষ পরীক্ষার্থীর এ দিন অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও কমবেশি ৬৩ শতাংশ পরীক্ষায় বসেছেন। জেলা শাসক মৌমিতা গোদারা বসু জানান, পরীক্ষার্থীদের জন্য তাঁরা জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় হেল্পডেস্ক খুলেছিলেন। পরীক্ষা শান্তিপূর্ণ ভাবেই মিটেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন