থানায় ডাক সরকারি কর্তাকে

তৃণমূল নেতা অনিল মাহাতো হত্যা মামলায় ওই ব্লক দফতরের এক সরকারি আধিকারিককে জেরা করলেন তদন্তকারীরা। বুধবার সকালে তাঁকে ফোন করে সন্ধ্যার মধ্যে থানায় ডেকে পাঠান তদন্তকারী অফিসারেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রাইপুর শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:১৯
Share:

তৃণমূল নেতা অনিল মাহাতো হত্যা মামলায় ওই ব্লক দফতরের এক সরকারি আধিকারিককে জেরা করলেন তদন্তকারীরা। বুধবার সকালে তাঁকে ফোন করে সন্ধ্যার মধ্যে থানায় ডেকে পাঠান তদন্তকারী অফিসারেরা।

Advertisement

ঘটনাচক্রে, বুধবারই পারিবারিক কারণে ছুটি নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন ওই আধিকারিক। ফোন পেয়েই তিনি ফের রাইপুরের উদ্দেশে রওনা দেন। এ দিন সন্ধ্যায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই শাসক দলের স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে মেলামেশা করতে দেখা যাচ্ছিল ও আধিকারিককে। জেলা পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা বলেন, “ওই সরকারি আধিকারিক এলাকার অনেক রাজনৈতিক নেতার ঘনিষ্ঠ ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। খুনের ঘটনায় তিনি কোনও আলোকপাত করতে পারেন কি না তা জানতেই তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছে।’’

Advertisement

এ দিন রাইপুর পঞ্চায়েত সমিতির মাথাদের অনেককেই পুলিশ দিনভর দফায় দফায় জেরা করেছে বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, নিহতের স্ত্রী সুলেখাদেবীর দায়ের করা অভিযোগে যাঁদের নাম ছিল, তার মধ্যে কয়েক জনকেও এ দিন জেরা করা হয়ছে। তবে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

খুনের পরে রবিবার নিহতের বাড়ি এসে যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর স্ত্রীকে আশ্বাস দিয়েছিলেন, তিন দিনের মধ্যে দোষীদের ধরতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। সেই তিন দিন পার হয়ে গেলেও ধরা পড়েননি কেউ। এমনকী ঘটনার পরে সাত দিন পার হতে চললেও খুনের মোটিভ সম্পর্কেও নিশ্চিত ভাবে কিছু বলতে পারছেন না তদন্তকারীরা। তদন্তে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনিলবাবুর ঘনিষ্ঠ তথা রাইপুর ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি রাজকুমার সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘তিন দিনের মধ্যে দোষীদের ধরার আশ্বাস দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই মানুষ ধৈর্য ধরে পুলিশের দিকে তাকিয়ে ছিল। কিন্তু পুলিশ তো কাউকেই ধরতে পারল না।’’

অনিলবাবু খুন হওয়ার পরে রাইপুর ব্লকে তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব আরও প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে। অনিলবাবুর অনুগামীরা তাঁর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা তথা রাইপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি জগবন্ধু মাহাতোর গোষ্ঠীকেই এই খুনের জন্য দায়ী করে আসছেন। সূত্রের খবর, এফআইআর-এ যে সাত জনের নাম উল্লেখ করেছেন অনিলবাবুর স্ত্রী সুলেখাদেবী, তাঁরা প্রত্যেকেই জগবন্ধুবাবুর গোষ্ঠীর লোক বলে এলাকায় পরিচিত। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় জগবন্ধুবাবু ও তাঁর গোষ্ঠীর লোকজন কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন। রাইপুরের সবুজবাজার ও মটগোদা এলাকায় জগবন্ধুবাবুর দলীয় কার্যালয় জোর করে দখল করার অভিযোগ উঠেছে অনিলবাবুর লোকজনের বিরুদ্ধে। এ দিন নতুন করে অবশ্য কোনও ঝামেলার খবর আসেনি। তবে রাজকুমার সিংহ বলেন, ‘‘সুলেখাদেবী যাঁদের নাম করে অভিযোগ করেছেন, তাঁদেরও জি়জ্ঞাসাবাদ করেই ছেড়ে দিল পুলিশ। মানুষের মনে এই নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়ে শুরু করেছে।’’

পুলিশ জানিয়েছে, এই খুনের তদন্তে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি দিক উঠে এসেছে। তদন্তের জাল গোটাতে কিছুটা সময় লাগলেও শীঘ্রই দোষীরা ধরা পড়বে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তদন্তকারীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন