সম্প্রীতিই পুঁজি বঙ্গছত্রের

তান্ত্রিক মতে তিনশো বছরের পুরনো কালীপুজো। ফি বছরের মতো এ বারও তাতে মেতেছে নানুরের বঙ্গছত্র গ্রাম। শুধু ওই গ্রামই নয়, এই পুজো উপলক্ষে আশেপাশের একাধিক গ্রামের মানুষজন ব্রতী হন দেবী আরাধনায়। সম্প্রীতির আবহ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও এই পুজার অন্যতম আকর্ষণ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৩২
Share:

গ্রামের প্রতিমা।

তান্ত্রিক মতে তিনশো বছরের পুরনো কালীপুজো। ফি বছরের মতো এ বারও তাতে মেতেছে নানুরের বঙ্গছত্র গ্রাম। শুধু ওই গ্রামই নয়, এই পুজো উপলক্ষে আশেপাশের একাধিক গ্রামের মানুষজন ব্রতী হন দেবী আরাধনায়। সম্প্রীতির আবহ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও এই পুজার অন্যতম আকর্ষণ।

Advertisement

বঙ্গছত্র সর্বজনীন মহাকালীমাতা পুজো কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, গ্রামের পশ্চিম প্রান্তে উলোসোনা নামে এক পুকুর পাড়ে গিরিলাল চক্রবর্তীর কন্যা চন্দ্রমুখীদেবী এই পুজোর প্রচলন করেন। বোলপুর–পালিতপুর রাস্তার ধারে বর্তমান মন্দিরে পূজিত হন দেবী। কথিত আছে, গিরিলালবাবুর মেয়ে চন্দ্রমুখীর বিয়ে হয় ন-নগর গ্রামের মুখোপাধ্যায় পরিবারে। বিবাহের এক বছর পরে বিধবা হয়ে বাবার বাড়িতে ফিরে এসে তিনি মাতৃসাধনায় ব্রতী হন। সিদ্ধিলাভের পরে ওখানেই পুজো শুরু হয়।

মন্দিরের পাণ্ডা শশিকান্ত মুখোপাধ্যায় এবং তাঁর পরিবার এই পুজোর দায়িত্বে ছিলেন। বছর তিরিশেক আগে শশিকান্তবাবুর ছেলে শ্যামাপদ মুখোপাধ্যায় বঙ্গছত্র গ্রামবাসীর হাতে পুজোর দায়িত্ব তুলে দেন। লাগোয়া নানুর ও বোলপুর থেকে বহু মানুষ এই পুজো দেখতে আসেন। পুজো শেষে পর দিন বিসর্জন হলেও, গ্রামে প্রায় চার দিন ধরে চলে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বঙ্গছত্র সর্বজনীন মহাকালীমাতা পুজো কমিটির সম্পাদক অমল মণ্ডল জানান, এ বছরও নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। লোকসংগীতকে এখানে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। রবিবার দীননাথ সঙ্গীত অ্যাকাডেমির উদ্যোগে ভানুসিংহের পদাবলী, সোমবার মুর্শিদাবাদের শিল্পী তৃষ্ণা বিশ্বাস পরিবেষণ করবেন কীর্তন। মঙ্গলবার নিমাই হালদার ও নৃপেন্দ্রনাথ চৌধুরীর কবিগান। বুধবার যাত্রা গান। পরিবেষণ করবেন অনল চক্রবর্তী ও কাকলি চৌধুরী। যাত্রাপালা ‘বাসা-ভাঙা ভালবাসা’ পরিবেশন করবেন কলকাতার সত্যনারায়ণ অপেরা।

Advertisement

সম্প্রীতি এবং সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের অন্যতম একটি ক্ষেত্র বঙ্গছত্র। নওদা, পালুন্দি, বাসাপাড়া, কুলিয়ার মতো একাধিক সংখ্যালঘু প্রধান গ্রামের বাসিন্দারাও এই পুজোর শরিক হন। কুলিয়ার বাসিন্দা পাঁচু শেখ, শেখ জামাল এবং বাসাপাড়ার বাসিন্দা শেখ হাসিবরা জানান, অনুদান সংগ্রহ থেকে শুরু করে নানা কাজে আজও শরিক হন উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ।

—নিজস্ব চিত্র

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement