কুঁয়ে উপচে ভাসল লাভপুর

প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, এই দুর্ভোগ এলাকার মানুষের দীর্ঘ দিনের। স্থানীয় লাঘাটায় কুঁয়ে নদীর উপর নির্মিত সেতু দিয়ে চলে গিয়েছে লাভপুর এলাকার ‘লাইফ লাইন’ সিউড়ি-কাটোয়া সড়ক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

লাভপুর শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৭ ০৩:০৮
Share:

কুঁয়ে নদীতে জল বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ বারও লাভপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ, নদীতে জল বাড়লেই ফিবছর তলিয়ে যায় লাঘাটার নীচু সেতু। এর ফলে দিনের পর দিন যোগযোগ-বিচ্ছিন্ন অবস্থায় কাটাতে হয় দু’পাড়ের বাসিন্দাদের। অথচ প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, এই দুর্ভোগ এলাকার মানুষের দীর্ঘ দিনের। স্থানীয় লাঘাটায় কুঁয়ে নদীর উপর নির্মিত সেতু দিয়ে চলে গিয়েছে লাভপুর এলাকার ‘লাইফ লাইন’ সিউড়ি-কাটোয়া সড়ক। কিন্তু সেতুটি এতই নীচু যে, নদীতে জল বাড়লেই প্রতিবছর বর্ষায় তা তলিয়ে যায়। তখন দিনের পর দিন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকে বিস্তীর্ণ এলাকা। দুর্ভোগ পোহাতে হয় দু’পাড়ের মানুষজনকেই। লাভপুর ব্লকের ১১টি পঞ্চায়েতের মধ্যে বিপ্রটিকুরি, ইন্দাস, জামনা পুরোপুরি এবং ঠিবা পঞ্চায়েতের একাংশ ব্লক অফিস, থানা, কলেজ, হাসপাতাল সহ ব্লক স্তরের প্রায় সমস্ত সরকারি দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এক ভাগের সঙ্গে অন্য ভাগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

শুধু লাভপুরের বাসিন্দারা নন, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন সিউড়ি-কাটোয়া রুটের যাত্রীরাও। ওই সময় নদী পারাপারের মাধ্যম হয়ে ওঠে নৌকা। প্রবল স্রোতের কারণে প্রায় প্রতি বছর নৌকাডুবিতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। আবার বিপদের ঝুঁকি নিয়ে তলিয়ে যাওয়া সেতুর উপর দিয়ে পারাপার করতে গিয়ে একই ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পর প্রশাসনিক কর্তারা এলাকায় এসে সেতু নির্মাণের আশ্বাস দেন। ২০১০ সালেও ওই সেতুর শিলান্যাস করেছিলেন তৎকালীন পূর্তমন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামী। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি বলে অভিযোগ।

Advertisement

গোপ্তা গ্রামের গৌতম পাল, গঙ্গারামপুরে ইসমাইল শেখরা বলেন, ‘‘সেই বাপ-ঠাকুর্দার আমল থেকে আমরা শুধু সেতু ‘হচ্ছে হবে’ আশ্বাসই শুনে আসছি। আর প্রতি বছর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছি।’’ লাভপুর সত্যনারায়ণ শিক্ষানিকেতন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মনীষা বন্দ্যোপাধ্যায়, শিক্ষিকা চৈতালি ঘোষ, সুজাতা বিশ্বাসরা জানান, ১০ শিক্ষিকাকে বিভিন্ন এলাকা থেকে লা’ঘাটা পেরিয়ে স্কুলে আসতে হয়। কিন্তু, বর্ষাকালে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় প্রাণ হাতে নিয়ে নদী পেরিয়ে কিংবা বিস্তর ঘুরপথে স্কুলে আসতে হয়। সে জন্য সব দিন স্কুলে আসাও সম্ভব হয় না, জানাচ্ছেন তাঁরা।

জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীর কথায়, ‘‘বাম আমলে টাকার সংস্থান না রেখেই ভোট রাজনীতির স্বার্থে ওই সেতুর শিল্যান্যাস করে দেওয়া হয়েছিল। তাই সেতু আর হয়নি। আমরা ওই সেতু নির্মাণের প্রস্তাব রাজ্যস্তরে পাঠিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন